কেরিয়ারে মোটে দু’টো হিট ছবি। ‘গুন্ডে’ আর ‘টু স্টেটস’। ভাল অভিনেতা হওয়া সত্ত্বেও ফ্লপের সংখ্যা কম নয় অর্জুন কপূরের। বনি কপূর-পুত্র বলেই কি পরপর ছবি পাচ্ছেন? বাবার সঙ্গে যে সম্পর্ক ভাল নয় সেটা তিনি নিজেই বহুবার বলেছেন। তা সত্ত্বেও অর্জুনের হাতে বড় প্রোডাকশনের লোভনীয় অফার। রহস্যটা কী?
কিন্তু কীভাবে অর্জুন ভাল কাজ পাচ্ছেন, সেটা বলার আগে দেখে দেওয়া যাক, তার উত্থান কী করে হল!
সলমন খানকে চটিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকতে কম লোকই পেরেছেন। তার মধ্যে অর্জুন অন্যতম। একটা সময় অর্জুনের মেন্টর ছিলেন সলমন। বনি কপূরের সঙ্গে শ্রীদেবীর প্রেম এবং মা মোনা কপূরের ক্যানসারে মারা যাওয়াটা অর্জুনের কাছে খুব শকিং ছিল। সে সময় তিনি ডিপ্রেশনেও চলে গিয়েছিলেন। উপরন্তু নিজের মোটা চেহারা নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগতেন।
সেই সময় সলমন তাঁর পাশে ছিলেন। অর্জুনের মায়ের চিকিৎসাতেও সলমন সাহায্য করেন। অর্জুন নিয়মিত সলমনের অ্যাপার্টমেন্টে যেতেন। সেই সূত্রেই অর্পিতার সঙ্গে প্রেম। সলমনও বোনের সঙ্গে অর্জুনের সম্পর্ক মেনে নিয়েছিলেন। তাঁর পরামর্শেই অর্জুন ইন্ডাস্ট্রিতে আসার চেষ্টা শুরু করেন। ভাইজান যাঁকে একবার নেক নজরে দেখেন, তাঁরই ভাগ্য খুলে যায়। সলমনের ট্রেনিংয়েই গোলগাল মোটাসোটা চেহারার অর্জুন একেবারে ‘মাচো’ হয়ে ওঠেন।
কিন্তু এই জায়গাতেই অর্জুনের জীবনে নতুন মোড় আসে। যশরাজ ফিল্মসের সঙ্গে তাঁর তিনটে ছবির চুক্তি হয়। সাফল্য এক দিকে এল, অন্য দিকে অর্পিতার সঙ্গে সম্পর্কে ইতি হল। এই পর্যন্ত ভাইজানের গুস্সা হয়নি। কিন্তু যখন জানা গেল, অর্পিতা-অর্জুনের সম্পর্কে ভাঙনের কারণ মালাইকা অরোরা, তখনই সলমনের আক্কেল গুড়ুম। সলমন জানতে পারেন, অর্পিতার সঙ্গে প্রেমের তলে তলে অর্জুন আর মালাইকার সম্পর্ক তৈরি হয়।
ভাই আরবাজের স্ত্রী মালাইকার সঙ্গে সলমনের সম্পর্ক কোনও দিনই মধুর নয়। অর্পিতা আর অর্জুনের মাঝে মালাইকা এসে যাওয়ায় সলমন আরও বিগড়ে যান। তার পর থেকে অর্জুনের সঙ্গে কোনও সম্পর্কই রাখেননি সলমন।
সলমনকে চটিয়ে কারও উন্নতি ঘটেনি বলিউডে। কিন্তু অর্জুন তত দিনে কর্ণ জোহর ক্যাম্পে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন। হতে পারে তিনি ধর্ম প্রোডাকশনের মোটে একটাই ছবি ‘টু স্টেটস’-এ অভিনয় করেছেন। সকলেই জানেন, কর্ণের ঘরের ছেলে তিনি। কর্ণের বাড়ির গোপন পার্টিগুলোতে অর্জুন নিয়মিত সদস্য। যেখানে মালাইকাও এসে থাকেন। খেয়াল করলে দেখা যাবে, ‘কফি উইথ কর্ণ’-এ অর্জুন প্রধান অতিথি হিসেবে না থাকলেও, একাধিকবার অ্যাপিয়ারেন্স দিয়েছেন। এতেই বোঝা যাচ্ছে কর্ণের সঙ্গে তাঁর সমীকরণ কতটা পোক্ত।
আরও পড়ুন:আমি কমিটমেন্ট ফোবিক
সলমনকে পটানোরও কম চেষ্টা করেননি অর্জুন। ‘তেবর’ ছবির ‘সলমন দ্য ফ্যান’ গানটা সল্লুভাইকে ডেডিকেট করেন। কিন্তু এ সবে সলমন একেবারেই আমল দেননি। অর্জুনের ব্যাপারে তিনি একদম ‘নিষ্পৃহ’। সলমন তাঁর শত্রুর শেষ রাখেন না। এমনটাই প্রচলিত। তা হলে অর্জুন কী করে বেঁচে গেলেন? বলিউডের অন্দরের খবর, অর্জুনের মা’কে সলমন কথা দিয়েছিলেন, ছেলেকে দেখবেন বলে। সেই জায়গা থেকেই সলমন বোধহয় অর্জুনের তেমন ক্ষতি করেননি। যেমনটা বিবেক ওবেরয় বা অন্যদের ক্ষেত্রে হয়েছে।
পরপর দু’টো ছবি ফ্লপ করেছে অর্জুনের। তাঁর চেহারাও এখন বেশ ভারী। তাও কাজ পাচ্ছেন। অর্জুনের ‘হাফ গার্লফ্রেন্ড’ রিলিজ করবে। তার পর রয়েছে ‘মুবারকা’।
কেরিয়ারের শুরুতে যশরাজ ক্যাম্পের দাক্ষিণ্য এবং কর্ণের বন্ধুত্ব অর্জুনকে এখনও টিকে থাকতে সাহায্য করে যাচ্ছে।