খলচরিত্রে নজর কেড়েছেন অর্জুন। ছবি: সংগৃহীত।
কথায় বলে, বয়স সংখ্যামাত্র। বুধবার, ২৬ নভেম্বর তাঁর জন্মদিন। ৫৩ পূর্ণ করার পরেও অভিনেতা অর্জুন রামপালকে দেখে একই কথা বলেন তাঁর বেশির ভাগ মহিলা অনুরাগী। তা তিনি পর্দায় নায়ক হিসাবে আসুন বা খলনায়কের চরিত্রে! মন জয় করেছেন প্রতি বার। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তাঁর আসন্ন ছবি ‘ধুরন্ধর’-এর প্রচার-ঝলক। আইএসআই আধিকারিকের চরিত্রে ‘দানবিক অত্যাচার’ করে চর্চায় অভিনেতা। সেই আবহে ফিরে দেখা যাক, অর্জুন অভিনীত কিছু উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক চরিত্র।
মুক্তির অপেক্ষায় ‘ধুরন্ধর’। সেই ছবিতে রণবীর সিংহের বিরুদ্ধে অর্জুনের চরিত্র কতটা নজর কাড়ে তা মুক্তির পরেই বোঝা যাবে। তবে অর্জুনের নেতিবাচক চরিত্রের তালিকায় রণবীর-পত্নীর উপর ‘অত্যাচার’-এর কথা মাথায় আসবেই। ২০০৭ সালে মুক্তি পায় ‘ওম শান্তি ওম’। শাহরুখ খানের বিপরীতে সেই ছবির মাধ্যমে অভিনয়ে পা রাখেন দীপিকা পাড়ুকোন। ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে দেখা যায় অর্জুনকে। ছবির নামী প্রযোজক মুকেশ মেহরার শীতল চাহনি এখনও স্পষ্ট দর্শকের মনে। শাহরুখ নায়ক হিসাবে যতটা প্রশংসিত হয়েছিলেন, অর্জুন নেতিবাচক চরিত্রে হয়তো খানিক বেশিই ভালবাসা পেয়েছিলেন।
২০০৫ সালে মুক্তি পায় ‘এক অজনবী’। এই ছবিতেই প্রথম নেতিবাচক চরিত্রে দেখা যায় তাঁকে। অ্যাকশন থ্রিলার ঘরানার এই ছবিতে তিনি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অভিনয় করেছিলেন অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে। ‘ক্যাপ্টেন’-এর চরিত্রে দেখা যায় অর্জুনকে, যে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে সকলের মন জয় করে নেয়। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত বোঝা যায়, সে-ই যত নষ্টের গোড়া। অপূর্ব লাখিয়া পরিচালিত এই ছবি ২০০৪ সালে হলিউডে মুক্তি পাওয়া ‘ম্যান অন ফায়ার’-এর রিমেক।
২০১৭ সালে মুক্তি পায় ‘ড্যাডি’। এই ছবিতে অরুণ গাওলির চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। গ্যাংস্টার থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠার সফর পর্দায় নিখুঁত ফুটিয়ে তুলেছিলেন অর্জুন, এমনই সাবলীল ছিল তাঁর অভিনয়, মত ফিল্ম সমালোচকদের। তাঁর মতোই চালচলন, কথাবার্তা, এমনকি অর্জুনের ‘লুক’ও নজর কেড়েছিল দর্শকের। বক্সঅফিসে দারুণ ফল করতে পারেনি এই ছবি, কিন্তু ঝড় তোলে অর্জুনের পারফরম্যান্স।
অর্জুনের নেতিবাচক চরিত্রের কথা বললে বাদ দেওয়া যায় না ‘রা ওয়ান’কে। সুঠাম চেহারা, নিখুঁত স্টান্ট— যে কোনও দর্শককে ভিলেনের প্রেমে পড়তে বাধ্য করে! গোটা ছবি জুড়ে নায়কের সঙ্গে সমানে টক্কর দিয়েছেন তিনি, কখনও হয়তো খানিক এগিয়েও গিয়েছেন। তাঁর নামেই ছবির নাম। শাহরুখ খান, করিনা কপূর খানের অভিনয়কে একপাশে সরিয়ে তিনি যেন দর্শককে বাধ্য করেছেন তাঁর দিকে নজর দিতে। ২০১১ সালে মুক্তি পায় এই ছবি।
২০২২ সালে মুক্তি পায় ‘ধাকড়’। এই ছবিতে তাঁর চরিত্রের নাম রুদ্রবীর। অস্ত্র ও মানুষ পাচার করাই যার কাজ। এই চরিত্রটি এমনই যার থেকে চিরকাল সবকিছু ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রাপ্য থেকে সে চিরকাল বঞ্চিত। এই ছবিতে তাঁর সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন কঙ্গনা রনৌত, দিব্যা দত্ত ও শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। যদিও চূড়ান্ত অসফল হয় ছবিটি, কিন্তু অর্জুনের চরিত্র প্রশংসিত হয়।
মডেল হিসাবে কর্মজীবনের শুরু, তার পরে অভিনয়ে প্রবেশ। প্রায় ২৫ বছরের অভিনয়জীবনে অজস্র কাজ করেছেন তিনি। কোনও দিন ‘তারকা’ হয়ে উঠতে না পারলেও দীর্ঘ এতগুলো বছর ধরে প্রাসঙ্গিকতা হারাননি অর্জুন। এখনও তিনি পর্দায় এলে, সুন্দর-সুঠাম হওয়ার পাশাপাশি তাঁর থেকে দর্শক ভাল অভিনয় আশা করেন। সমালোচকদের মত, সেখানেই অর্জুনের সার্থকতা।