Ayushman Khurana

Ayushmann Khurrana: ফের ছকভাঙা বলিউড, আয়ুষ্মানের হাত ধরেই

এক যুবকের একটি রূপান্তরিত মেয়ের প্রেমে পড়ার গল্প। মন্নু থেকে মানবী (বাণী) হয়ে ওঠা অম্বালার সেই মেয়ের প্রেমে পড়ে মনবিন্দর (আয়ুষ্মান)।

Advertisement

সায়নী ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৩৪
Share:

‘জেন্ডার স্টিরিয়োটাইপ’ আগেও ভেঙেছে বলিউড।

ছক ভাঙাই যখন ছক, আর তার মুখ সেই আয়ুষ্মান খুরানা— তখন সেই ফর্মুলার পা পিছলানো কঠিন। ‘জেন্ডার স্টিরিয়োটাইপ’ আগেও ভেঙেছে বলিউড। বারবার, নতুন আঙ্গিকে। ‘চণ্ডীগড় করে আশিকী’ সেই তালিকার সাম্প্রতিক সংযোজন। বিনোদনের মশলায় জারিয়ে, রোম্যান্টিক কমেডির আঁচে সেঁকে চণ্ডীগড়ের প্রেক্ষাপটে গল্প বলেছেন পরিচালক অভিষেক কপূর, যার মূল বিষয়টি আদতে খুবই স্পর্শকাতর। আর পর্দার বাইরের আসল লড়াই আরও অনেক বেশি কঠিন।

Advertisement

এক যুবকের একটি রূপান্তরিত মেয়ের প্রেমে পড়ার গল্প। মন্নু থেকে মানবী (বাণী কপূর) হয়ে ওঠা অম্বালার সেই মেয়ের প্রেমে পড়ে চণ্ডীগড়ের মনবিন্দর (আয়ুষ্মান)। দ্বিতীয় জনের জিমে জ়ুম্বা ট্রেনার হিসেবে যোগ দেয় প্রথম জন। মনবিন্দর ভারোত্তোলনে এক নম্বর হওয়ার চেষ্টায় ঘাম ঝরায় দিনরাত। তার মাথা ও মনের পেশি শরীরের তুলনায় ততটা চর্চিত নয়। মানবীর প্রতি সে আকৃষ্ট হয় প্রথম দিন থেকেই। শরীরী প্রেম যখন হৃদয়ের দরজায় ধাক্কা দেয়, সেই মুহূর্তে প্রেমিকার ‘অতীত’ আরও জোরে ধাক্কা দেয় তাকে। প্রতিক্রিয়াও হয় প্রত্যাশিত। আর এই সবটাই ঘটে যায় ছবির প্রথম দিকে। তার পর থেকে যা যা ঘটে, সেখান থেকেই চিত্রনাট্য আর পরিচালকের আসল পরীক্ষা শুরু।

সংবেদনশীল গল্পের ‘ট্রিটমেন্ট’ কী রকম হতে পারে বা হওয়া উচিত, তা দর্শক ভালই জানেন। ‘চণ্ডীগড়...’ সেই রাস্তাতেই হাঁটতে চেয়েছে, তবে একটু চড়া দাগের রাস্তা ধরে, খুব বেশি জটিলতার মধ্যে না ঢুকেই। বদ্ধ ধারণা ভেঙে বোধোদয় ও ‘হ্যাপিলি এভার আফটার’— এ ভাবেই সাধারণত সমাধান করে দেওয়া হয় এ ধরনের ছবির শেষটা। লিঙ্গপরিচয় নিয়ে ছুঁতমার্গ ভাঙার রাস্তাটা আসলে কতটা কঠিন, সে পরীক্ষার ধারপাশ দিয়েও যায় না এ ধরনের চিত্রনাট্য। তবে ছুঁতমার্গের দিকে আঙুল তোলার এই চেষ্টাটাই সাধুবাদযোগ্য।

Advertisement

‘ভিকি ডোনার’ দিয়ে শুরু করার পর থেকে আয়ুষ্মানের ফিল্মোগ্রাফি সমাজের নানা বদ্ধমূল ধারণার শিকড় ধরে নাড়িয়েছে। ‘ব্র্যান্ড আয়ুষ্মান’ এই বার্তাবাহকের কাজটি সফল ভাবেই করে আসছে এ যাবৎ। এ ছবির মনবিন্দর হয়ে উঠতে চণ্ডীগড়ের ছেলে আয়ুষ্মানকে বিশেষ কসরত করতে হয়নি। শারীরিক কসরতের নমুনা অবশ্য দেখা গিয়েছে ছবি জুড়েই। বারবেল তোলা কিংবা দড়ি বেঁধে আস্ত গাড়ি টেনে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্যগুলি আয়ুষ্মান জ্যান্ত করে তুলেছেন নিজের সর্বাঙ্গ দিয়ে। ‘চক দে ইন্ডিয়া’র বদমেজাজি পঞ্জাবি প্লেয়ারের ইমেজ এ ছবিতেও ধরে রেখেছেন তনয়া অব্রোল। এখানে তিনি মনবিন্দরের দিদির ভূমিকায়। মানবীর বাবার চরিত্রে কানওয়ালজিৎ সিংহের সংক্ষিপ্ত উপস্থিতি ভাল লাগে।

রূপান্তরিত নারীর চরিত্রে বাণী কপূরকে বুদ্ধি করে কাস্ট করেছেন পরিচালক। সে সুযোগও কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন বাণী। তবে অভিনয়ের জোরে এগিয়ে যেতে এখনও অনেক পথচলা বাকি তাঁর। শারীরিক আকর্ষণটুকু ফুরিয়ে যেতেই আয়ুষ্মান আর বাণীর কেমিস্ট্রির পারদও নেমে যায়। আলগা হয়ে যায় ছবির দ্বিতীয়ার্ধ, টিপিক্যাল সূত্রানুসারে নাটকীয় ভাবে শেষ হয় গল্প।

‘খিঁচ তে নাচ’ ছাড়া বাকি গান তেমন মনে ধরে না। ছবির মধ্যে কিছু প্রডাক্টের বিজ্ঞাপনও বেশ দৃষ্টিকটু। তবে ছবির দৈর্ঘ্য কম হওয়ায় ধৈর্য ধরা যায়। দু’ঘণ্টার বিনোদন ও বার্তা— এ ভাবে দেখলে মন্দ লাগবে না এ ছবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন