সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আদৌ কি খুশি দেবলীনা? ছবি: সংগৃহীত।
দিল্লির রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে পথকুকুরদের! দিন কয়েক আগে এমনই রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তার পরই প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন পশুপ্রেমীরা। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদে সরব হয় নাগরিক সমাজ। কলকাতা থেকে যাঁরা এই রায়ের প্রতিবাদে পথে নামেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত। যদিও নিজেকে তিনি পশুপ্রেমী নয় বরং প্রাণীপ্রেমী বলতেই পছন্দ করেন। গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার প্রতিবাদ করে গিয়েছেন। শুক্রবার দিল্লির পথকুকুরদের নিয়ে রায় বদলে দিল সুপ্রিম কোর্ট। এর আগে দুই বিচারপতির বেঞ্চ যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা স্থগিত রাখা হল। পরিবর্তে পথকুকুরদের বন্ধ্যাত্বকরণে জোর দিল আদালত। যদিও আদালত রাস্তায় কুকুরদের খাওয়ানোর অনুমতি দেয়নি। তবে এই রায় যে সামায়িক স্বস্তি দিয়েছে জানালেন দেবলীনা। নয়তো অভিনেত্রীর আশঙ্কা, ‘‘মাস কিলিং হয়ে যেত।’’
সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রায় অনুযায়ী, পথকুকুরদের দিল্লির রাস্তা থেকে নির্দিষ্ট আশ্রয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে সঠিক পদ্ধতিতে বন্ধ্যাত্বকরণ এবং প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ করতে হবে। তার পর আবার যেখান থেকে কুকুরদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানে ফিরিয়ে দিয়ে যেতে হবে। আদালত জানিয়েছে, কোনও শর্তেই রাস্তায় প্রকাশ্যে কুকুরদের খাওয়ানো যাবে না। পরিবর্তে প্রশাসনকে এর দায়িত্ব নিতে হবে। দিল্লি এবং আশপাশের এলাকায় পুরসভা অনুযায়ী কুকুরদের খাওয়ানোর স্থান নির্দিষ্ট করে দিতে হবে। এর পরেও যাঁরা রাস্তায় খাবার দেবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হতে পারে। এক্ষেত্রে উঠে আসে ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গ। দেবলীনার কথায়, ‘‘আমরা এমন এক দেশের নাগরিক যা খাতায় কলমে স্বাধীন, বকলমে পরাধীন। এটা আমরা মানতে শিখে গিয়েছি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মেনে নিয়েছি মাঝেমাঝে আমাদের দেশটা হিটলারি শাসনে পরিণত হয়। তখন আমাদের মনে করিয়ে দিতে হয় যে আমরা স্বাধীন। প্রতিনিয়ত আমাদের বাস্তব স্বাধীনতার জন্য লড়ে যেতে হবে, এটা এখন মেনে নিয়েছি। তাই লড়াই করার জন্য প্রস্তুত।’’
তবে পথকুকুরা যে এখন পথেই থাকতে পারবে, সে বিষয়ে খানিক নিশ্চিন্ত অভিনেত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘এই রায় বদল না হলে মাস কিলিং হয়ে যেতে। ট্রাক যেমন পিষে চলে যায়, ব্যাপারটা তেমন হত। আমরা যাঁরা প্রাণীপ্রমী তাঁরা পথকুকুরদের বন্ধ্যাত্বকরণ ও টিকাকরণ নিয়ে বার বার সোচ্চার হয়েছি। তাই এই বিষয়টি ইতিবাচক হিসাবেই দেখছি। তবে স্থান নির্দিষ্ট করে দেওয়ার বিষয়টা খুব অসুবিধাজনক। কারণ, কিছু ক্ষেত্রে স্থানটা এতটা ছোট হয় যে, যিনি খাওয়াবেন তাঁরও অসুবিধা হয়। যাঁরা এই নির্দেশ দিলেন তাঁদের কিন্তু স্থান নির্ধারণ করতে গিয়ে মাথা খারাপ হয়ে যাবে। কারণ, বাস্তব মাটিতে পা রাখলে প্রতিবন্ধকতাগুলো বোঝা যায়।’’ এখনও লড়তে প্রস্তুত তিনি।