Entertainment News

‘উমা হয়তো ১৫ মিনিট দেখে বেরিয়ে আসব...’

প্রোমোশনের দুপুর। এসভিএস-এর অফিসে মেয়ে সারার সঙ্গে লাঞ্চ করছিলেন যিশু সেনগুপ্ত। মেয়ের সঙ্গে এই প্রথম অভিনয় করলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘উমা’-তে। আগামী পয়লা জুন সে ছবির রিলিজ। মেয়ের প্রোমোশন শেষ। তাই তাকে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করে রেকর্ডার অন করতে বললেন যিশু। সামনে স্বরলিপি ভট্টাচার্য।প্রোমোশনের দুপুর। এসভিএস-এর অফিসে মেয়ে সারার সঙ্গে লাঞ্চ করছিলেন যিশু সেনগুপ্ত। মেয়ের সঙ্গে এই প্রথম অভিনয় করলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘উমা’-তে। আগামী পয়লা জুন সে ছবির রিলিজ। মেয়ের প্রোমোশন শেষ। তাই তাকে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করে রেকর্ডার অন করতে বললেন যিশু।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৮ ০০:০৫
Share:

বাবা-মেয়ের গল্প।

‘উমা’ নিঃসন্দেহে স্পেশ্যাল। কতটা স্পেশ্যাল?

Advertisement

যিশু: অনেকগুলো ফ্যাক্টর। আমার মেয়ের প্রথম ছবি। আমার মেয়ের সঙ্গে প্রথম ছবি। মেয়ের আমার সঙ্গে প্রথম ছবি। এটা কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না সারা জীবন।

সৃজিত বলছিলেন, আপনি বা নীলাঞ্জনা নন, ফাইনালি ‘ইয়েস’ বলেছিল সারা। বাবা-মা হিসেবে কতটা ভরসা ছিল পরিচালকের উপর?

Advertisement

যিশু: আসলে সৃজিত বলেই বোধহয় এ ভাবে ভরসা করতে পেরেছি। আমি নিজেকে দিয়ে বিচার করেছিলাম। বন্ধুত্বের বাইরে ও আমাকে যা রোল দিয়েছে— সে ১০ মিনিটের হতে পারে, সারা ছবি জুড়ে হতে পারে, সব জায়গায় দর্শক হল থেকে বেরিয়ে যিশুর কথা বলেছে। সেই ভরসাটা তো আছে ওর উপর।

শুটিংয়ের আগে মেয়েকে কিছু শিখিয়েছিলেন?

যিশু: না। সৃজিত প্রথম থেকেই বলেছিল ওকে কিছু বলবি না। ওর সঙ্গে বসা বা ওয়ার্কশপ কিছুই করেনি। আমরা তো টেনশনে ছিলাম। কিন্তু দেখলাম ও রিঅ্যাক্ট করল।

আরও পড়ুন, ‘পুরস্কারের জন্য আমি কাউকে বোতল দিতে পারব না’

এটা কি জিন ফ্যাক্টর?

যিশু: (হাসি) মায়ের মা অভিনেত্রী, বাবার বাবা অভিনেতা, তো কোথাও তো কিছু একটা কাজ করবে। আর অঞ্জন দত্ত, রুদ্রনীল ঘোষ, অনির্বাণ ভট্টাচার্য বা নীল যখন বলে, সারার সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে ভাবতে হয়েছে বা পাল্লা দিয়ে অভিনয় করতে হয়েছে, তখন গর্ব হয় বইকি।

সারা নাকি অনেক ফ্রিডম পেয়েছে?

যিশু: ইয়েস। যেটা সৃজিত কাউকে দেয় না, সেটা ওকে দিয়েছে। নিজের মতো করে সিনটা করার ফ্রিডম। আসলে সৃজিত বলেছিল, আমি তো ওর ল্যাঙ্গুয়েজটা জানি না। ফলে সারা হয়তো বলেছে, আমরা এই কথাটা এ ভাবে বলি, সৃজিত সেটা অ্যালাও করেছে। আর সারাও খুব ম্যাচিওর্ড বিহেভ করেছে।


নিজের সঙ্গে একা।

যেমন?

যিশু: ধরুন, এমন কোনও ডায়লগ ও হয়তো বলতে চায়নি, কিন্তু বলতেই হবে, সেটা খুব প্রফেশনালি হ্যান্ডেল করেছে। ও বলল, আমাকে একটু সময় দাও। পাঁচ মিনিট পরে এসে ওয়ান শট ওকে। খুব আশ্চর্য হয়েছিলাম। আসলে ও বয়স অনুযায়ী খুব ম্যাচিওর্ড। ও বয়সে বড়দের সঙ্গে বেশি কানেক্ট করতে পারে। ওর বন্ধুরা ওর থেকে বয়সে বড়।

সারা কি ভবিষ্যতে অভিনয়ই করবে?

যিশু: দেখুন, ও ওর ডেস্টিনি নিয়ে জন্মেছে। ও কেমন ভাবে জীবন কাটাতে চায় সেটা ঠিক করার আমরা কেউ নই। যত দিন বড় না হচ্ছে একটা গাইডেন্স থাকবে। কিন্তু ডিসিশন ওর। ও স্পোর্টস ভালবাসে। বাস্কেটবল, রিলে রেস…। ও প্রচন্ড অ্যানিম্যাল লাভার। অফিসে দুটো বেড়াল ছানা নিয়ে এসেছে। তারা হিসু, পটি করছে। সে সব গন্ধের মধ্যেই থাকতে হবে। ওদের তাড়ানো যাবে না (হাসি)। ফলে ও কী করবে, সেটা ও-ই ঠিক করবে।

আরও পড়ুন, ‘রেনবো জেলি দেখে হয়তো ভাববেন আমি আবার জিততে পারি’

স্টার কিডদের অনেক রকম সমস্যা হয়। বাবার সঙ্গে অভিনয় নিয়ে তুলনা তো হবেই। সামলাতে পারবেন?

যিশু: এটা তো ওকে হ্যান্ডেল করতে হবে। আসলে খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে আমরা সবাই যাই। কিন্তু খারাপ সময়ের মধ্যেও ভাল কিছু থাকে। সেটা নিয়ে এগোতে হবে। এটা আমি বিশ্বাস করি, প্র্যাকটিস করি। এটা সারাকে শেখানোর চেষ্টা করি।

সেই প্র্যাকটিসের ফল এই মুহূর্তে আপনার হাতে ‘উমা’, ‘এক যে ছিল রাজা’, ‘সোনার পাহাড়’, ‘বসু পরিবার’, ‘মণিকর্ণিকা’, ‘মুখোমুখি’…।

যিশু: (হাসি) আর ‘ঘরে অ্যান্ড বাইরে’ রিলিজ করল কিছুদিন আগে।

এনজয় করেন?

যিশু: এনজয় করে টাইম ওয়েস্ট করা উচিত নয়। আমি প্রত্যেক ছবিতে উন্নতি করতে চাই। আজ যদি দেখতে বসি পরমব্রত কী করছে, ঋত্বিক কী করছে, আবির কী করছে— বাকি যারা আছে তারা কী করছে, আমি তো নিজের সময় নষ্ট করব।


‘উমা’তে যিশু এবং বাবুল।

কিন্তু কম্পিটিশন তো থাকেই?

যিশু: একটা হেলদি কম্পিটিশন থাকা ভাল। কিন্তু আসল কম্পিটিশন নিজের সঙ্গে। দর্শক যদি বলে যিশু তো ১০ নম্বরে আছে, সেটা আমি নিতে পারব। কিন্তু যদি বলে, যিশু সব ছবিতেই এক রকম চরিত্র করছে— এটা আমি নিতে পারব না। আমার এটাতে বেশি ধাক্কা লাগবে। আর এটুকু একটা ইন্ডাস্ট্রি। চার-পাঁচটা হিরো, চার পাঁচটা ডিরেক্টর, কী কম্পিটিশন হবে বলুন তো? এগুলো সব টুইটারে হয়। আসল দর্শক ছবিটা দেখেন। তাঁরাও হয়তো টুইটারে আছেন। কিন্তু ছবিটা তো বক্স অফিসে চলবে। টুইটারে তো আর ছবি চলবে না।

এক দিন তো আপনাকে ‘অপয়া’ বলা হত। সেই লোকগুলোকে আজ কী বলবেন?

যিশু: সেই লোকগুলোর সঙ্গে আমি কাজও করছি। আমি থ্যাঙ্কফুল তাদের কাছে। কারণ তাদের অপয়া বলাটা আমায় কোথাও পুশ করেছে। তবে সেগুলো আর মনে রাখিনি।

আরও পড়ুন, ‘হামি’ মানে কী? উত্তরে ওরা বলল...

কেন?

যিশু: কী হবে মনে রেখে? আমি পজিটিভলি ভাবতে ভালবাসি। পজিটিভলি ভাবাটা আমি এনজয় করি।

সমান তালে টলিউড-বলিউড মেনটেন করছেন। আপনার পিআর নিশ্চয়ই দারুণ?

যিশু: আমার জিরো পিআর। আমি ফোন তুলি না। ইন্টারভিউ দেব বলে পালিয়ে যাই। আসলে আমি এত ভেবেচিন্তে কিছু করি না। আমি কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে চাই না। নিজে না দেখলে কারও কথা শুনে কারও সম্বন্ধে কোনও মন্তব্য করি না। কোনও ধারণা তৈরি করতে চাই না। সেটা খুব আনহেলদি মনে হয়।

লাস্ট কী সিনেমা দেখলেন?

যিশু: রিসেন্টলি ইনফার্নো দেখেছি।

আর বাংলা ছবি?

যিশু: আমি তো দেখি না।


‘উমা’র একটি দৃশ্য।

হিন্দি?

যিশু: দেখি না তো।

মানে?

যিশু: আমার হলিউডের অ্যাকশন ফিল্ম, থ্রিলার দেখতে ভাল লাগে। ‘দ্য ভিঞ্চি কোড’ অন্তত ১০ বার দেখেছি। কিন্তু বাংলা বা হিন্দি ছবি তো…

নিজের ছবিও দেখেন না?

যিশু: ‘জাতিস্মর’ হাফ দেখেছি। ‘জুলফিকর’, ‘রাজকাহিনি’ দেখিনি। ফার্স্ট ব্যোমকেশটা শুধু প্রিমিয়ারে দেখেছিলাম। আমি ছবিই দেখি না। আমার ভাল লাগে না।

আরও পড়ুন, প্রেম নিয়ে কথা বলা কি ইশার বারণ?

কেন?

যিশু: (বিরাট পজ) ছবির খবর রাখি, কিন্তু দেখি না। তার থেকে ক্রিকেট দেখব। টম অ্যান্ড জেরি দেখব। নীলাঞ্জনার সঙ্গে এটা নিয়ে ঝামেলাও হয়। (উত্তেজিত হয়ে) মনে পড়েছে। লাস্ট ‘বাহুবলী’ দেখেছিলাম। ফার্স্টটা। ভাল লেগেছিল।

কিন্তু বাংলা বা হিন্দি সিনেমা দেখতে ভাল লাগে না কেন?

যিশু: দেখুন, ভূতের ছবি দেখি না। ভয় পাই। সিনেমাতে কান্নাকাটি থাকলে কষ্ট হয় (হাসি)। ওই অ্যাকশন, থ্রিলারই ভাল।

‘উমা’ দেখবেন?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন