ইমনের সমর্থনে এ বার পথে নামার সিদ্ধান্ত কৃষ্ণনগরের

কৃষ্ণনগরের সুদীর্ঘ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে ধাক্কা দিয়েছে ইমন-পর্ব। শিল্পীর মর্যাদাহানি বা স্বাধীনতা খর্ব করার চল কখনই কৃষ্ণনগরে ছিল না। ফলে সুশীল, শুভবুদ্ধিসম্পন্ন নাগরিকদের একাংশ তা মানতে পারেননি। অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে তাঁরা পথে নামছেন। এর সঙ্গে অহেতুক রাজনীতির যোগ খোঁজা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:১১
Share:

গায়িকা ইমন চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র

থিতিয়ে আসার পরিবর্তে ক্রমশ আরও ছড়াচ্ছে ইমন-বিতর্ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিবৃতি, প্রতিবাদ, বিতর্ক থেকে তা পৌঁছেছিল থানায়। এ বার ঘটনার নিন্দা করে ইমনের সমর্থনে পথে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কৃষ্ণনাগরিকদের একাংশ। আজ, বৃহস্পতিবার তাঁরা সভা ও মিছিলের ডাক দিয়েছেন।

Advertisement

এতে ঘটনার রাজনীতিকরণের আশঙ্কাও করছেন অনেকে। কারণ, মিছিল-মিটিংয়ের আয়োজকদের বেশির ভাগই সিপিএম-ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত। ফলে এর পিছনে বামপন্থীদের হাত বা ইন্ধন রয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। যদিও আয়োজকেরা তা উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেছেন, গোটাটাই অরাজনৈতিক। কৃষ্ণনগরের সুদীর্ঘ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে ধাক্কা দিয়েছে ইমন-পর্ব। শিল্পীর মর্যাদাহানি বা স্বাধীনতা খর্ব করার চল কখনই কৃষ্ণনগরে ছিল না। ফলে সুশীল, শুভবুদ্ধিসম্পন্ন নাগরিকদের একাংশ তা মানতে পারেননি। অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে তাঁরা পথে নামছেন। এর সঙ্গে অহেতুক রাজনীতির যোগ খোঁজা হচ্ছে।

গত রবিবার কৃষ্ণনগরে সঙ্গীতশিল্পী ইমনের অনুষ্ঠানের শেষে তাঁকে আটকে রেখে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। তার প্রতিবাদে এই সভা ও মিছিলের অন্যতম আয়োজক শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় ‘পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘ’-র জেলা সম্পাদক। তাঁর কথায়, “কোনও রাজনৈতিক দল বা সংগঠন এর মধ্যে নেই। শহরের সাধারণ শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ, যাঁরা এই ঘটনা মেনে নিতে পারেননি, তাঁরাই এই কর্মসূচির আয়োজন করেছেন। গোটা রাজ্য জুড়ে অপসংস্কৃতির দাপাদাপি চলছে।”

Advertisement

তবে শাসক দলের সন্দেহ, ঘোলা জলে মাছ ধরার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছে না সিপিএম। তারাই রয়েছে এর পিছনে। কারণ, যাদের আয়োজিত সঙ্গীতানুষ্ঠানে ইমনকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে, সেই কৃষ্ণনগর সংস্কৃতিক মঞ্চের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক কৃষ্ণনগর পুরসভার প্রাক্তন প্রধান তথা তৃণমূল নেতা অসীম সাহা। ফলে ওই মঞ্চের বিরুদ্ধে পথে নেমে তৃণমূলকে চাপে ফেলার চেষ্টা করা হতে পারে।

সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এস এম সাদি অবশ্য দাবি করেন, “এই প্রতিবাদ মিছিলে কবি, সাহিত্যিক, শিক্ষক, অধ্যাপক, শিল্পীরা আছেন। এটা আমাদের দলের কোনও কর্মসূচি নয়।” প্রাক্তন পুরপ্রধান অসীম সাহার কটাক্ষ, “যারা এ সব করছে, তারা লুপ্তপ্রায়। মানুষ অনেক আগেই তাদের ছুড়ে ফলে দিয়েছে। তারা কী করল না করল তাতে আমরা গুরুত্ব দিতে রাজি নই।” কৃষ্ণনগর সাংস্কৃতিক মঞ্চের সম্পাদক অনন্ত মুখোপাধ্যায়ও বলেন, “যাঁরা ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছেন তাঁদের বলছি, সত্যের জয় এক দিন হবেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন