Memories Of Zubeen Garg

তাঁকে দেখলেই মেয়েরা ঝাঁপিয়ে পড়তেন! জ়ুবিন গার্গের মনপ্রাণ জুড়ে শুধুই গরিমা শইকীয়া গার্গ

কলকাতা কখনও তাঁকে বিরক্ত করেনি। তাই এই শহর তাঁর পছন্দের। কলকাতা মানেই রসগোল্লা আর পছন্দের কিছু নেশার দ্রব্য।

Advertisement

আশু চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:০৩
Share:

কেমন মানুষ ছিলেন জ়ুবিন গার্গ? ছবি: সংগৃহীত।

জ়ুবিন গার্গ আমার কাছে পাগলাঝোরা, দমকা হাওয়া। না, হাওয়া নয়, দুরন্ত ঝড়। তিনি সারা ক্ষণ আপন খেয়ালে মগ্ন। তাঁকে বাঁধার মতো শিকল তৈরিই হয়নি! নিজের মনে চলতেন। নিজের শর্তে বাঁচতেন। গাইতেন নিজের ইচ্ছায়। হয় বাড়িতে নিজের মনে। নয়তো নৌকোয় চেপে মাঝদরিয়ায়! ইচ্ছা না করলে অনুষ্ঠানে যেতেন না।

Advertisement

অনুষ্ঠানে গাইতে না গেলে উদ্যোক্তাদের টাকা ফেরত দিতেন। এমন গায়ক দেখেছেন আপনারা?

আমার প্রথম হিন্দি ছবির কাজ। ‘শ্যাডো আসাসিন’ নামের ওই ছবিতে এক অসমিয়া যুবকের গল্প। শুনেই রাজি হয়ে গিয়েছিলেন জ়ুবিন। ওই যুবকের কণ্ঠে তাঁর একটি গান বাজবে। যুবক অসম ছেড়ে অন্যত্র গিয়েছে। কিন্তু কিছুতেই নিজের রাজ্যকে ভুলতে পারে না! গানের কথা লিখেছিলেন রাজর্ষি দে, সুর আমার। জ়ুবিন আমাদের রেকর্ডিং-এর দিন নির্দিষ্ট করে জানালেন।

Advertisement

রেকর্ডিং করতে গিয়ে প্রথম ধাক্কা খেলাম। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেল। গায়ক এলেন না। আমাদের মাথায় হাত। কিছুতেই তাঁকে ফোনে পাই না। শেষে ওঁর স্ত্রী গরিমা শইকীয়া গার্গের মাধ্যমে যোগাযোগ করলাম গায়কের সঙ্গে। তিনি সপাট জানিয়ে দিলেন, গাইতে ইচ্ছা করছিল না। তাই রেকর্ড করতে আসেননি! কয়েক দিন চুপচাপ। তার পর নিজেই যোগাযোগ করে একটা দিন দিলেন। আশ্বস্ত করেছিলেন, ওই দিন বিফলে যাবে না।

বুঝলাম, জ়ুবিন গার্গকে দিয়ে জোর করে কিছু করানো যায় না।

নির্দিষ্ট দিনে এলেন। হাসিমুখে গান রেকর্ডিং করলেন। বসে আড্ডাও দিলেন। আমি অবাক হয়ে ওঁকে শুধুই দেখছিলাম।

আমার সঙ্গে যখন ওঁর আলাপ, তখন তিনি খ্যাতির মধ্যগগনে। তাঁকে ঘিরে মেয়েদের সে কী উন্মাদনা! দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়তেন ওঁর গায়ে। জ়ুবিন বোধহয় ব্যতিক্রম, যিনি অনুরাগীদের দিকে ফিরেও দেখতেন না। কোনও দিন ‘ফ্লার্ট’ করেননি সুন্দরীদের সঙ্গে। উনি গরিমাতেই নিবেদিতপ্রাণ। কী যে ভালবাসতেন তাঁর স্ত্রীকে।

এমন বোহেমিয়ান মানুষ নেশায় ডুববেন, সেটাই স্বাভাবিক। শুনেছি, নানা ধরনের নেশা করতেন। এমন ব্যক্তিত্বকে কিন্তু মায়ানগরী আকর্ষণ করতে পারেনি। মুম্বই নাপসন্দ ছিল তাঁর। তাই পারতপক্ষে পা রাখতে চাইতেন না। বদলে পছন্দ ছিল কলকাতা। এই শহর কখনও তাঁকে বিরক্ত করেনি। তাঁর কাছে কলকাতা মানে রসগোল্লা।

এমন বেহিসাবি মানুষেরাই তো অসময়ে সব মায়া কাটিয়ে দুম করে সবাইকে ছেড়ে চিরতরে চলে যান!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement