শেষেও উজ্জ্বল ড্যানিয়েল

গল্পটি আবর্তিত হয় তিনটি প্রধান চরিত্রকে ঘিরে। রেনল্ডস উডকক (ড্যানিয়েল), তার বোন সিরিল (লেসলি) ও অ্যালমা (ভিকি)। রেনল্ডস এমন এক ফ্যাশন ডিজাইনার যার পোশাক পরার জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে হয়।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:০৩
Share:

ভালবাসার চাওয়া পাওয়ার মধ্যেও লুকিয়ে থাকে ক্ষমতার টানাপড়েন। অনেকটা ইঞ্চি মেপে সেলাই করা হেমলাইনের মতো। একটা সুতোর টান এলোমেলো হলেই বদলে যায় মাপজোকের হিসেব। বদলে যায় সম্পর্কের সমীকরণ। পল থমাস অ্যান্ডারসনের অষ্টম ছবি ‘ফ্যানটম থ্রেড’ এমন এক বন্ধনের গল্প, যেখানে সম্পর্কগুলো এক সুতোয় বাঁধা নয়। পারস্পরিক সম্পর্কের অন্তর্জালে কখনও প্রেম হারিয়ে যায়। আবার সেই জালেই ধরা দিতে বাধ্য হয় মনের মানুষ।

Advertisement

গল্পটি আবর্তিত হয় তিনটি প্রধান চরিত্রকে ঘিরে। রেনল্ডস উডকক (ড্যানিয়েল), তার বোন সিরিল (লেসলি) ও অ্যালমা (ভিকি)। রেনল্ডস এমন এক ফ্যাশন ডিজাইনার যার পোশাক পরার জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে হয়। তার বানানো পোশাকে‌ সেজে ওঠে পঞ্চাশের দশকের ইউরোপের কাউন্টেস, প্রিন্সেস, অভিজাত পরিবারের মহিলারা। তবে তার বানানো পোশাকের এতটুকু অযত্ন দেখলে ঘুমন্ত মহিলার গা থেকে সেই পোশাক খুলে নিতেও পিছপা হয় না অ্যালমা, রেনল্ডসের মিউস, মিস্ট্রেস ও পরে স্ত্রী। রেনল্ডসের জীবনে অনেক মিউসই এসেছে। আবার চলেও গিয়েছে। আসা-যাওয়ার খতিয়ান রাখে সিরিল। রেনল্ডসের সঙ্গে যে কোনও মহিলার সম্পর্কেই সে একটি অন্তরায়ও বটে। কারণ রেনল্ডসের জীবন ও কাজের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করে তার বোন।

‘দেয়ার উইল বি ব্লাড’-এর পর এই ছবিতে আরও এক বার জুটি বেঁধেছেন পল ও ড্যানিয়েল। অবসরের আগে শেষ ছবিতেও তাঁর স্বকীয়তা বজায় রেখেছেন ড্যানিয়েল। তাঁর চাহনি, অভিব্যক্তি, বডি ল্যাঙ্গোয়েজ অপ্রিয় চরিত্রটিকেও দর্শকের চোখে প্রিয় করে তুলবে। ড্যানিয়েলের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অভিনয় করেছেন ভিকি ক্রিয়েপস। লেসলি ম্যানভিলও যথাযথ।

Advertisement

চরিত্রগুলির সংলাপ সরস। ছবিতে পোশাকের পাশাপাশি খাবারও একটি রূপক। পরিচালক-প্রযোজক-গল্পকার পল এই ছবির সিনেমাটোগ্রাফারও। পোশাক তৈরির খুঁটিনাটি, রান্নার দৃশ্য, চরিত্রগুলোর একে অন্যের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকা, ইঙ্গিতপূর্ণ অভিব্যক্তির মতো ছবির ডিটেলিং বেশ নজর কাড়ে। জন গ্রিনউডের সংগীত ছবির আবহ নির্মাণে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

ফ্যানটম থ্রেড

পরিচালনা: পল থমাস অ্যান্ডারসন

অভিনয়: ড্যানিয়েল ডে লুইস,
​ভিকি ক্রিয়েপস, লেসলি ম্যানভিল

৬.৫/১০

এই ছবি লাভ স্টোরি। আবার লাভ স্টোরি নয়ও। ছবির শেষটা মিলনান্তক হলেও নারী-পুরুষ সম্পর্কের জটিল সমীকরণ ছবির শেষেও অমীমাংসিত। ক্ষমতার অঙ্ক যদিও বদলায়। তবে রেনল্ডস-ভিকি-সিরিলের চরিত্রের মতোই ছবিতে অনেক ধূসর পর্ব রয়েছে। যা নিয়ে কাটাছেঁড়া করতে চাননি পরিচালক। শুধু আভাস দিয়ে রেখেছেন। তা নিয়ে দর্শক প্রশ্ন তুলতে পারেন। দ্বিতীয়ার্ধে রোনাল্ডসের মনের পরিবর্তন একটু তাড়াহুড়ো করে হল বলেই মনে হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন