‘রঘু ডাকাত’-এর ট্রেলারমুক্তির অনুষ্ঠানে দেব। ছবি: সংগৃহীত।
সকাল থেকে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামের বাইরে দেব অনুরাগীদের ভিড়। শনিবার বেলা যত এগিয়েছে, সেই ভিড় বেড়েছে। এই প্রথম টিকিট কেটে ট্রেলারমুক্তির অনুষ্ঠান! তাও আবার বাংলা ছবির! টালিগঞ্জের অনেকেই এরই মধ্যে দাবি করেছেন, দেবের ‘রঘু ডাকাত’ নতুন একটা দিশা দেখাতে চলেছে বাংলা ছবির।
অনুষ্ঠানের আয়োজন যে বড়মাপের হতে চলেছে সেই আন্দাজ পাওয়া গিয়েছিল আগেই। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় থেকে টলিউড ও ছোটপর্দার ছোটবড় তারকাদের একটা বড় অংশ হাজির এই অনুষ্ঠানে। দেবের অনুষ্ঠান বলে কথা! তাঁর নায়িকারা যে শামিল হবেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এসেছিলেন নুসরত জাহান, কোয়েল মল্লিক, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, পূজা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুপস্থিত শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় এবং রুক্মিণী মৈত্র।
ওম সাহানি এবং সোহিনী সরকার ‘রঘু ডাকাত’ ছবির প্রচার অনুষ্ঠানে। নিজস্ব চিত্র।
মাসখানেক আগে প্রায় একই কায়দায় ‘ধূমকেতু’ ছবির ট্রেলারমুক্তি অনুষ্ঠান করেন দেব। বক্সঅফিসে নজির গড়েছে সেই ছবি। যখন ‘ধূমকেতু’ প্রেক্ষাগৃহে তখন থেকেই তিনি শুরু করে দেন ‘রঘু ডাকাত’-এর প্রস্তুতি। গোটা বাংলাজুড়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে এই ছবির কলাকুশলীদের নিয়ে পৌঁছে যান দর্শকদের দুয়ারে। মালদহ থেকে মেদিনীপুর, আমতা— অনেক জায়গাতেই। যদিও অভিনেতা ‘খাদান’ থেকেই একটা নির্দিষ্ট ধাঁচে ছবির প্রচার সারছেন। তাতে সাফল্যও পেয়েছেন বলে দাবি। তবে ‘রঘু ডাকাত’ যেন আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে গেল।
অনুষ্ঠানের সূচনাপর্বে এসে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘‘দেব আরও ৩০ বছর রাজত্ব করুক।’’ বহু বছর বাংলা সিনেমা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। ‘রঘু ডাকাত’ দিয়ে প্রত্যাবর্তন ঘটেছে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের।
ভিন্ন মেজাজে অনির্বাণ ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র।
অনেকেই মুখিয়ে ছিলেন দেব-ইধিকা জুটিকে মঞ্চে দেখার জন্যে। ইতিমধ্যে ছবির ‘ঝিলমিল লাগে রে’ গানটি নিয়ে চর্চা সমাজমাধ্যমে। সেই রসায়নই যেন দেখা গেল এ দিনের মঞ্চে। যদিও নয়া চমক অনির্বাণ ভট্টাচার্য। একেবারে ছকভাঙা ছন্দে তিনি। দেবের ‘রাজার রাজা’ থেকে ‘এগিয়ে দে’ গানে নাচলেন তিনি। পিছিয়ে থাকলেন না ওম সাহানি ও সোহিনী সরকার। দেবের ‘মালা রে’ গানে পা মেলালেন তাঁরা।
পর্দার ‘রঘু ডাকাত’ দেব যখন খাঁড়া হাতে মঞ্চে। নিজস্ব চিত্র।
শেষে এলেন দেব। খাঁড়া হাতে ‘জয় কালী’ বলে নাচলেন অভিনেতা। সঙ্গে ছিলেন দেবের নায়িকা নুসরত জাহান, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, পূজা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁদের সঙ্গে দেবকে জড়িয়ে গুঞ্জন সেই শুভশ্রী বা রুক্মিণী কিন্তু উপস্থিত। নায়ক জানান, রুক্মিণী শুটিংয়ের কারণে ভিন্ন শহরে। দেব বলেন, “আমি গর্বিত, আমি বাংলা ছবির নায়ক। আমার সব নায়িকা আজ উদ্যাপনে শামিল।”
শনিবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এক মঞ্চে দেব ও কোয়েল। ছবি: সংগৃহীত।
দেবের নায়িকারাও নায়কের অভিনয়ের ২০ বছরের উদ্যাপনে উচ্ছ্বসিত। যেমন, পূজা বলেন, ‘‘শিরায় শিরায় রক্ত, আমিও দেবের ভক্ত।” নুসরতের কথায়, “বন্ধুর বন্ধু দেব।” এই পুজোয় দেবের সঙ্গে তাঁর ছবিরও মুক্তি। তবু প্রতিযোগিতায় নেই শ্রাবন্তী। সে কথা জানিয়ে বললেন, “১০ বছর পরে দেবের সঙ্গে এক মঞ্চে! এই সুযোগ কেউ ছাড়ে?” যদিও চমক এখানেই শেষ নয়। অনুষ্ঠানে আচমকা প্রবেশ কোয়েলের। দেবের সঙ্গে তাঁর ছবির সংখ্যা কম নয়। তারই কিছু জনপ্রিয় গান এ দিন দর্শকের সামনে পরিবেশন করেন তাঁরা।