‘বিলু রাক্ষস’ ছবির একটি দৃশ্যে জয় ও কনীনিকা। ছবি: ইউটিউবের সৌজন্যে।
ছেলেবেলা কেটেছে হুগলির বালিতে। বাবা কলেজে পড়াতেন, মা সামলাতেন বাড়ি। ক্লাস এইটে-ই কলকাতায় চলে আসা। ছেলেটার কাছে জীবন খুব সহজ ছিল সে সময়। কিন্তু, কলকাতায় আসার পর দ্রুত একটা বদল চোখে পড়ে। নব্বই দশকের শুরু থেকেই আর্থসামাজিক চেহারাটা যেন কেমন আমূল বদলে গেল। মোবাইল, কম্পিউটার নিয়ে মানুষ দৌড়তে শুরু করল। জীবনে অবসর কমে গেল। মানুষের মধ্যে যোগাযোগ কমে গেল। ইচ্ছের বিরুদ্ধে দৌড়নোয় থেমে যাওয়া মানেই যেন পিছিয়ে পড়া!
আরও পড়ুন, ‘টলিউড বড় অদ্ভুত, কেউ কারও ভাল চায় না’
ছেলেটা ইতিমধ্যেই অ্যাপ্ল্যায়েড ফিজিক্সে বি-টেক করেছে। চাকরিও করছে। কিন্তু, সাংস্কৃতিক পরিবেশে বড় হওয়া, আর মনের মধ্যে চলতে থাকা নিরন্তর ভাবনাকে প্রকাশ করতে চাওয়া ইচ্ছেরা তাকে নাড়া দিত অবিরাম।
সেই ইচ্ছের নামই যেন সিনেমা। সে দিনের সেই ছেলেটা ইন্দ্রাশিস। ইন্দ্রাশিস আচার্য। তৈরি করে ফেলেছেন প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি ‘বিলু রাক্ষস’। আগামী ১ সেপ্টেম্বর ছবি মুক্তির আগে বললেন, ‘‘জীবন থেকে অন্য জগতে যাওয়া যায় সিনেমার মাধ্যমে। এটা আমি বিশ্বাস করি।’’
আরও পড়ুন, গেম অব থ্রোনসের জনপ্রিয়তম চরিত্র কারা
‘বিলু’র জার্নিটা কি আসলে আপনার? পরিচালকের জবাব, ‘‘শুধু আমার নয়। এটা সকলের জার্নির সঙ্গেই মিলবে। এখনকার প্রত্যেক মানুষ বিলুর জার্নির সঙ্গে নিজের মিল পাবেন।’’
গল্পটা কেমন?
জয় ও কনীনিকাকে শট বোঝাতে ব্যস্ত পরিচালক। ছবি: ইন্দ্রাশিস আচার্যের ফেসবুক পেজের সৌজন্যে।
ইন্দ্রাশিস শেয়ার করলেন, বিলু এখানে সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি। দৌড়চ্ছে নিয়মিত। একটা সময় এসে তাঁর মনে হয় কিছুই করা হল না। ক্লান্তি আসে। ফিরে যেতে ইচ্ছে করে পুরনো শিকড়ে। ছোটবেলার চেনা জায়গায় যেখানে শৈশবটা আজও বেঁচে আছে। কিন্তু সেটা আবিষ্কার করতে গিয়ে দেখে, সেখানে ফিরে পাওয়ার আর কিছু নেই।
আরও পড়ুন, ‘জীবনে ঝড় এলেও আমি সেটা ওভারকাম করেছি’
হঠাত্ ‘বিলু রাক্ষস’ নাম কেন? রহস্য সমাধান করলেন ইন্দ্রাশিস। তাঁর কথায়, ‘‘বিলু রিপ্রেজেন্টস কমন ম্যান। আর রাক্ষস যেন সবকিছু গিলে ফেলছে। এটা মেটাফরিক্যাল…পুরনো বাড়ি, পুরনো সম্পর্ক…।’’ ছবিতে ‘বিলু’র চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয় সেনগুপ্ত। এ ছাড়া কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, কাঞ্চনা মৈত্রের অভিনয় ছবিটিকে সমৃদ্ধ করেছে। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু নামী আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে নির্বাচিত এবং নমিনেশন পেয়েছে ছবিটি।
প্রথম ছবি। ইউএসপি কী?
কনফিডেন্ট ইন্দ্রাশিসের জবাব, ‘‘ছবিটার চলন, মোশন একেবারে আলাদা। সেটার টানেই দর্শক দেখবেন।’’