Dhurandhar Movie Release

‘ধুরন্ধর’ নিয়ে আড়াআড়ি বিভক্ত পরিবেশকমহল, রণবীর-ঝড়ে কি শঙ্কায় রুক্মিণী, জয়ব্রতদের ছবি!

অগ্রিম বুকিংয়ের নিরিখে ‘ধুরন্ধর’ মুক্তির পাঁচ দিন আগেই কোটি টাকা আয় করেছে। রণবীর সিংহের ছবির দাপটে বেকায়দায় কোন কোন বাংলা ছবি?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৫৯
Share:

‘ধুরন্ধর’ বনাম বাংলা ছবি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক।

একটা লম্বা সময়ের পরে রণবীর সিংহের ছবি নিয়ে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে দর্শকমহলে। দাবি করা হচ্ছে, ইতিমধ্যে অগ্রিম টিকিট বুকিং থেকে এই ছবি আয় করে নিয়েছে ১ কোটি টাকা। এই ছবি মুক্তি পেলে কী হবে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েকটি বাংলা ছবির দর্শক-ভাগ্য, সেই প্রশ্নের উত্তরে আড়াআড়ি বিভক্ত বাংলা পরিবেশক ও হলমালিকেরা।

Advertisement

নভেম্বরের শেষের দিকে একগুচ্ছ বাংলা ছবি মুক্তি পেয়েছে। ২১ নভেম্বর মুক্তি পেয়েছে ‘ডিপ ফ্রিজ’, ‘দি অ্যকাডেমি অফ ফাইন আর্টস’, ‘লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল’ ও ‘পুলিশ’। একেবারে শেষ সপ্তাহে মুক্তি পেল ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’ ও ‘দেরি হয়ে গেছে’। ওই সপ্তাহেই দু’টি হিন্দি ছবি মুক্তি পেয়েছে ‘তেরে ইশ্‌ক মেঁ’ ও ‘গুসতাখ দিল’। যদিও এই সবক’টি ছবির দর্শক-ভাগ্য নাকি এক ধাক্কায় প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে আদিত্য ধর পরিচালিত ছবি ‘ধুরন্ধর’! বাড়ছে ‘ধুরন্ধর’-এর টিকিটের দামও।

বাংলা এসএসআর সিনেমার মালিক ও পরিবেশক শতদীপ সাহা অবশ্য ‘ধুরন্ধর’ ছবির টিকিটের দাম বৃদ্ধির পক্ষে। তাঁর কথায়, ‘‘রণবীর সিংহের ছবির পরিবেশকেরা সবক’টি শো চাইছেন। সেটা নিয়ে কথাবার্তা চলছে। কিন্তু আমার হলগুলিতে বাংলা ছবিই চালাব। সেটা নিয়ে যত ক্ষণ না ‘ধুরন্ধর’ টিমের সঙ্গে একটা বোঝাপড়া হচ্ছে, তত ক্ষণ পর্যন্ত আমি ওদের অগ্রিমও নিচ্ছি না।’’ তিনি যেমন প্রেক্ষাগৃহে বাংলা ছবি চালানোর পক্ষে, একই সঙ্গে রণবীরের এই ছবি নিয়ে দর্শকমহলে উন্মাদনা দেখেও আশাবাদী। শতদীপের কথা, ‘‘যে ক’টি বাংলা ছবি মুক্তি পেয়েছে তার মধ্যে একমাত্র ‘দি অ্যাকাডেমি’ ভাল ব্যবসা দিচ্ছে। ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’ অবশ্য গত সপ্তাহে কিছু শো হাউসফুল ছিল। তবে ‘ধুরন্ধর’-এর টিকিটের দাম বাড়লে আমাদের পক্ষে ভাল। কারণ প্রেক্ষাগৃহ চালানোর তো খরচ রয়েছে। সব ছবির ক্ষেত্রে তো টিকিটের দাম বাড়ানো যায় না। এই ছবির ক্ষেত্রে হচ্ছে, সেটাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।’’

Advertisement

নবীনা সিনেমার মালিক নবীন চৌখানির অবশ্য ভিন্ন মত রয়েছে। তিনি সাফ জানান, ‘ধুরন্ধর’ ছবির পরিবেশকেরা মোটেও সবক’টি শোয়ের দাবি করেননি। সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী, বাংলা ছবি যেমন চলার তেমনই থাকবে। কে বা কারা এই গুজব ছড়াচ্ছে, তা নিয়ে তিনি সন্দেহও প্রকাশ করেন। যদিও নবীনা-তে এই মুহূর্তে একটি বাংলা ছবিও চলছে না। নবীনের কথায়, ‘‘আমাদের প্রেক্ষাগৃহে ‘তেরে ইশক্ মেঁ’ ছবিটা চলছে। খুবই ভাল ব্যবসা দিচ্ছে। কলকাতায় ধনুশের অনুরাগী আছে। আর বাংলা ছবি কেউ দেয়নি বলে চালাইনি। ‘ধুরন্ধর’ও আমাদের প্রেক্ষাগৃহে চলবে কি না সেটা নিয়ে সন্দিহান এই মুহূর্তে।’’

কলকাতায় আরও বেশ কিছু ‘সিঙ্গল স্ক্রিন’ রয়েছে যেখানে বাংলা ছবি চলছে। যদিও সেখানে দর্শকের উপস্থিতি হাতেগোনা। অন্তত ‘বুক মাই শো’ সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। প্রিয়া হলের মালিক অরিজিৎ দত্ত ‘ধুরন্ধর’ ছবিটি চালাতে খুবই আগ্রহী। একই সঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে দেন, হিন্দি ছবি চললেও সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী তাঁদের বাংলা ছবি চালাতেই হবে। তার অন্যথা হবে না বলে তিনি জানান।

টলিউডের বাণিজ্যিক বিশ্লেষক পঙ্কজ লাডিয়ার মতে, ছবি চলে বড় তারকা কিংবা ভাষার বিভাজনে নয়, বরং ‘কনটেন্ট’ কিংবা গল্পের উপর। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলা ছবি কেমন চলছে প্রেক্ষাগৃহে, সেটা ‘বুক মাই শো’ খুললেই বোঝা যাবে। তবে আশার কথা, এত দিন পরে রণবীর সিংহ পর্দায় আসছেন। দর্শকের মধ্যে উন্মাদনা রয়েছে। আর এই ছবির পরিবেশকেরা মোটেও সব আঞ্চলিক সিনেমার ক্ষেত্রে কোনও দাবি করেননি। বাংলা ছবি যেমন শো পেয়েছে তেমনই থাকবে।’’ তবে পঙ্কজও জানান, সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তি পাওয়া একঝাঁক বাংলা ছবির মধ্যে সাড়া ফেলেছে জয়ব্রত দাসের ‘ দি অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস।’

পরিবেশ থেকে হলমালিক— সকলেই বাংলা সিনেমার চালানোর পক্ষে থাকলেও ব্যবসায় ভাটা রয়েছে। সেই কারণেই কি ঝুঁকছেন হিন্দি ছবির দিকে? প্রশ্নটা রয়েই যাচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement