#মিটু নিয়ে বাংলা ইন্ডাস্ট্রি কি আদৌ মুখ খুলবে?

ইতনা সন্নাটা কিঁউ হ্যায়? বলিউড এত সরব, অথচ টলিউডে সকলে চুপইতনা সন্নাটা কিঁউ হ্যায়? বলিউড এত সরব, অথচ টলিউডে সকলে চুপ

Advertisement
শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮ ০০:০৭
Share:

বলিউড #মিটু নিয়ে তোলপাড়। নানা পটেকরের বিরুদ্ধে তনুশ্রী দত্ত যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনার পর থেকে মুখ খুলছেন নায়িকারা। পরিচালক-প্রযোজক বিকাশ বহেলের বিরুদ্ধেও উঠেছে নিগ্রহের অভিযোগ। বিকাশের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন কঙ্গনা রানাউতও। অভিযোগের তালিকায় রয়েছেন অভিনেতা-পরিচালক রজত কপূর। হিন্দি ধারাবাহিকের জনপ্রিয় মুখ অলোক নাথের নামও জড়িয়েছে এই বিতর্কে।

Advertisement

এক জন মহিলা সাহস করে কথা বলার পরে সেই সাহস বলিউডে চারিয়ে গিয়েছে বাকিদের মধ্যেও। কিন্তু বলিউডে যখন এত হইচই এবং প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে, বাংলা ইন্ডাস্ট্রি চুপ কেন? এখানে কাস্টিং কাউচ কিংবা যৌন হেনস্থার ঘটনা নেই? সব কর্মক্ষেত্রে যখন রয়েছে, সেটা বিশ্বাস করারও উপায় নেই। তা হলে?

মঙ্গলবার মাঝরাতে জনৈক ভদ্রলোক এক মহিলার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি স্টেটাস আপডেট দেন ফেসবুকে। সেখানে ওই মহিলা (নাম প্রকাশ করা হয়নি) জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে তিনি যখন জার্মানিতে ছিলেন, সেই সময়ে কাজের খোঁজ করতে গিয়ে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। সৃজিত তখন মহিলাকে জানান, তিনি ‘রাজকাহিনি’র শুটিং শুরু করতে চলেছেন, সেখানে কোনও কাজের সুযোগ হতে পারে। দু’জনের কথা এগোয় স্কাইপে এবং হোয়াটসঅ্যাপে। মহিলার ফেসবুক জবানবন্দিতে, ‘‘সৃজিত কাজের কথা ছেড়ে আমার চেহারা, ঠোঁট-গাল নিয়ে মন্তব্য করা শুরু করেন। পরে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আমি সিঙ্গল কি না। আমি জানিয়ে দিই, আমার একটি সম্পর্ক রয়েছে। সে বছর ডিসেম্বরে কলকাতায় ওঁর সঙ্গে কাজের জন্য যাওয়ার কথা ছিল আমার। কলকাতা পৌঁছে আমি ওঁকে ফোন করি কিন্তু উনি উত্তর দেননি। পরে জানিয়েছিলেন, শুটিং শুরু হয়ে গিয়েছে, আমার কাজের আর স্কোপ নেই।’’

Advertisement

সৃজিতও তাঁর ওয়ালে আপডেট দেন। জানিয়েছেন, যা হয়েছে তাতে দু’জনেই সমান অংশ নিয়েছিলেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছিল এবং ধীরে ধীরে তিনি উপলব্ধি করেন, ‘ইমোশনালি ডিপেন্ডেন্ট’ হয়ে গিয়েছেন। আনন্দ প্লাসকে সৃজিত জানিয়েছেন, ‘‘অভিযোগ ভিত্তিহীন। কাজের সূত্রে উনি যোগাযোগ করেন। ওঁকে আমি আমার আসন্ন ছবির কথা বলি। তার পরে নানা বিষয়ে মাস তিন-চার ধরে আমাদের কথাবার্তা চলতে থাকে। মেয়েটিকে আমার ভাল লাগে এবং হৃদ্যতা বাড়ে। মানসিক ভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ি। যে দিন জানতে পারি উনি সিঙ্গল নন, সে দিন থেকে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিই। পরে তিনি যখন দেশে আসেন, আমার ছবির শুটিং তখন শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই কাজ দেওয়া সম্ভব হয়নি।’’ ওই পোস্টে সৃজিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন রেচেল হোয়াইটও।

কিন্তু এই ঘটনাকে যদি ‘প্রেম’ বলে চালিয়ে দেওয়াও যায়, ইন্ডাস্ট্রিতে এর চেয়েও ভীতিকর ঘটনা আকছারই ঘটে। সেই নিয়ে সকলে চুপ কেন? অভিনেত্রী পার্নো মিত্রের কথায়, ‘‘হাতে প্রমাণ থাকলে মুখ খোলাই উচিত। কিন্তু সবাই সাহসটা পায় না। অনেক ঘটনার কথাই শুনেছি। কিন্তু ভবিষ্যতে কাজ পেতে সমস্যা হবে বলে কেউই মুখ খুলতে রাজি নয়।’’

অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীরও মত মোটামুটি এক। তাঁর কথায়, ‘‘বলিউডে যে ঘটনাগুলো সামনে আসছে, সেগুলো সব দশ-কুড়ি বছর আগেকার কথা। সুতরাং ওই সাহসটা সঞ্চয় করতে সময় লাগে। এখানে একটা ভয়ও কাজ করে। মুখ খুললে যদি ইমেজ নষ্ট হয়, কাজ পাওয়া যাবে না। আশা করা যায়, এই ভয়টা কাটবে।’’

তবে অভিযোগের অপর পিঠেই আছে মিথ্যে অভিযোগ। কোথায় রেখা টানা দরকার, কারা আসলে শাস্তি পাওয়ার যোগ্য, সেই বিষয়টা কতটা স্পষ্ট? ‘‘যাই হয়ে যাক, এর যেন অপব্যবহার না হয়,’’ মন্তব্য সুদীপ্তার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন