Drama Festival

পাঁচ দিনের নাট্যমেলায় উচ্ছ্বাসে ভাসল জঙ্গিপুর

মঞ্চ বিনিময়ে নাটকের খরা কেটেছে জঙ্গিপুরে। বছর তিনেক থেকেই নাট্য মেলার হিড়িক পড়েছে শহরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২০ ০০:৫৩
Share:

নাট্যমেলায় বালিগঞ্জ ব্রাত্যজনের ‘পালক’। নিজস্ব চিত্র

মঞ্চ বিনিময়ে নাটকের খরা কেটেছে জঙ্গিপুরে। বছর তিনেক থেকেই নাট্য মেলার হিড়িক পড়েছে শহরে। গড়ে উঠেছে একাধিক নাট্যসংস্থা। ক’দিন আগেই বাংলাদেশ থেকে ঘুরে এসেছে জঙ্গিপুরের নাট্য সংস্থার ১৬ জনের একটি দল। রঘুনাথগঞ্জ থেকে তিন তিনটি নাট্যসংস্থা রাজ্য নাট্যমেলায় নাটক মঞ্চস্থ করার সুযোগ পেয়েছে কলকাতার মঞ্চে। ফলে নাটক নিয়ে উন্মাদনা বেড়েছে শহরে।

Advertisement

এ বার বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জের ‘হিরণ কিরণ থিয়েটার’ সহ ৮টি দলকে নিয়ে রঘুনাথগঞ্জ নাট্য নিকেতন দশম বর্ষ উদযাপনে ৫ দিনের নাট্যমেলা শেষ হল সোমবার।

সংস্থার কর্ণধার নারায়ণ মণ্ডলের মতে, ‘‘জগদীশচন্দ্র বসু ও অতীশ দীপঙ্করের জন্মভিটে মুন্সিগঞ্জ। তাই সেখানে ডাক পাওয়া এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা।’’

Advertisement

জঙ্গিপুরের এই নাট্যমেলার শুরু আয়োজক নাট্য সংস্থার ‘রূপকথা এখনও’ নাটক দিয়ে। দ্বিতীয় দিনে রঘুনাথগঞ্জ অকপট সংস্থার নাটক ‘আবির্ভাব’। রজতাভ ঘোষের লেখা, নাটকের নির্দেশনা অরিন্দম বিশ্বাসের। দ্বিতীয়ার্ধে ‘আঁধি’ নাটকটি উপস্থাপনা করেছেন হুগলির বাঁশবেড়িয়া বৃশ্চিক নাট্য সংস্থা। শনিবারও ছিল জোড়া নাটক। রঘুনাথগঞ্জ থিয়েটার গ্রুপের ‘মেঘমুলুকে’ ও কলকাতার প্রেক্ষাপট সংস্থার ‘বনরাজ’। রবিবার বালিগঞ্জ ব্রাত্যজনের প্রযোজনায় সুদীপ্ত ভৌমিকের নাটক ‘পালক’ ও নাট্যম শ্রদ্ধাঞ্জলির নাটক ‘পাথর’। সোমবার শেষ দিনে বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জের হিরণ কিরণ থিয়েটারের নাটক ছিল ‘সিডর’। সে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে লেখা হয়েছে নাটকটি।

নাট্য নিকেতনের কর্ণধার নারায়ণবাবুর মতে, নাট্য সাহিত্য বাংলা দেশে যথেষ্ট আদৃত।

নাট্য পরিমণ্ডল যথেষ্ট শক্তিশালী, মঞ্চ যথেষ্ট উন্নত। সে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে নাটকের ভূমিকা ছিল অপরিসীম, তাই নয়, বাংলাদেশে নাট্যশিল্পী, নাট্যকার ও নাট্য নির্দেশকদের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল সে দেশের মানুষ। সে দেশে সমস্ত নাট্য দলের বেশ উন্নত সংগঠন রয়েছে।

বিভিন্ন শহরের নাট্য উৎসবে অন্য শহর থেকে আসছেন বিভিন্ন নাট্য দল। বিনিময়ে জঙ্গিপুরের নাট্য দল যাচ্ছে তাদের নাট্যোৎসবে। এতে পরিচিতি বাড়ছে, বাড়ছে অভিজ্ঞতাও। উৎসবের সব চেয়ে বড় সাফল্য এই ভাবে মঞ্চের আদান প্রদান।”

রঘুনাথগঞ্জের নাট্যচর্চা গত চার বছরে অনেকটাই বেড়েছে। নাট্য দল বেড়েছে, বেড়েছে নাট্যকর্মীর সংখ্যাও। নাটকের মঞ্চে যেখানে জনা কুড়ি কর্মী পাওয়াও ছিল সমস্যার, এখন সেখানে নাট্যকর্মীর সংখ্যা প্রায় দেড়শো। স্বভাবতই দর্শকের সংখ্যাও বেড়েছে অনেকটাই। টিভি সিরিয়ালের সামনে থেকে টেনে এনে তাঁদের যে মঞ্চমুখী করতে পারা গিয়েছে, এটাই বড় সাফল্য।

তবু আয়োজক সংস্থার অভিযোগ, “নাটকে আলো ও শব্দই তো মূল। দুটিই অকেজো রবীন্দ্র ভবনে। তাই উৎসবে প্রতিদিনের জন্য ৬০০০ টাকায় ভাড়া করে শব্দ ও আলোর ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। ৫ দিনের জন্য মঞ্চ ভাড়াও কম নয়। এর ফলে বাড়তি ব্যয় ছাড়িয়েছে ৩ লক্ষ টাকা। তবু দর্শকেরা আসছেন, নাটকমুখী হচ্ছেন এটাই শুভ ইঙ্গিত। ’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন