Updates Of Bangladesh Anarchy After Osman Hadis Death

ধ্বংস ‘ছায়ানট’, প্রাণ বাঁচাতে তড়িঘড়ি বাংলাদেশ ছেড়ে কোথায় গেলেন আলাউদ্দিন খানের বংশধর?

খবর, খান সাহেবের বংশধরও সেতারবাদক। ১৯ ডিসেম্বর ‘ছায়ানট’-এ অনুষ্ঠান করার কথা ছিল তাঁর। তার আগেই প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:৫৪
Share:

প্রাণভয়ে বাংলাদেশ থেকে শহরে সিরাজ আলি খান। ছবি: ফেসবুক।

‘ছায়ানট’-এ অনুষ্ঠান করার কথা ছিল তাঁর। ১৯ ডিসেম্বর তাঁর সরোদে ধ্বনিত হত নানা স্বাদের গানের সুর। ছাত্রনেতা ওসমান হাদির মৃত্যুতে ১৮ ডিসেম্বর উত্তাল বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানের একদিন আগে ভাঙচুর জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেওয়া হয় সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান।

Advertisement

খবর, প্রাণ বাঁচাতে রাতারাতি বাংলাদেশ ছেড়ে কলকাতায় চলে আসতে বাধ্য হলেন সরোদিয়া সিরাজ আলি খান।

ঢাকায় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ১৬ ডিসেম্বর উড়ে গিয়েছিলেন সরোদবাদক। ১৭ ডিসেম্বর বনানীতে তাঁর একটি ছোট্ট অনুষ্ঠান ছিল। সংবাদমাধ্যমকে সিরাজ জানিয়েছিলেন, জনা কুড়ি শ্রোতার উপস্থিতিতে সেই অনুষ্ঠান জমে গিয়েছিল। নিজেকে উজাড় করে বাজিয়েছিলেন তিনি। এর পরেই ‘ছায়ানট’-এ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠান ছিল তাঁর। রাতারাতি বাংলাদেশ রণক্ষেত্রে পরিণত হওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েন শিল্পী। সে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।

Advertisement

সিরাজের মনে এখনও তাণ্ডবের ছবি স্পষ্ট! তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “কোনও সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দেওয়া হতে পারে, ধারণার বাইরে ছিল। পরের দিন দেখতে গিয়েছিলাম প্রতিষ্ঠানটিকে। দেখলাম, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে প্রতিষ্ঠান। ইতস্তত ছড়িয়ে পোড়া, ভাঙাচোরা বাদ্যযন্ত্র। অসাবধানতায় তার একটিতে আমার পা ঠেকে গিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি সঙ্গীতের দেবী সরস্বতীর কাছে।” এই দিনও যে দেখতে হবে তাঁকে, স্বপ্নেও ভাবেননি সিরাজ।

সিরাজের বাবা ধ্যানেশ খান খ্যাতনামী সরোদবাদক আলি আকবর খানের ছেলে। আলাউদ্দিন খান তাঁর প্রপিতামহ। খ্যাতনামী আলাউদ্দিনের জন্ম বাংলাদেশের ব্রহ্মবেড়িয়ায়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে সিরাজ জানিয়েছেন, তিনি মূলত কলকাতার বাসিন্দা। তবে বাংলাদেশে এখনও তাঁদের অনেক আত্মীয় বসবাস করেন। অনুষ্ঠান ছাড়াও তাই তাঁদের যাতায়াত আছে। ব্রহ্মবেড়িয়ায় আলাউদ্দিন খানের নামে একটি কলেজ ছিল। সিরাজ জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে সেটিও নষ্ট করে মৌলবাদীরা।

এই পরিচয় সিরাজকে বাংলাদেশ ছাড়তে সহযোগিতা করেছে। সরোদবাদকের কথায়, “কোনও দিন নিজের পরিচয় লুকোইনি। এই প্রথম সেটাও করতে হল। আমার মা ব্রহ্মবেড়িয়ায় জন্মেছেন। মায়ের কাছে ওই অঞ্চলের ভাষা শিখেছি।” ঢাকা বিমানবন্দরে সে দিন আঞ্চলিক ভাষা তাঁকে রক্ষা করেছিল। ভারতীয় পরিচয়পত্র সিরাজ দিয়েছিলেন গাড়ির চালকের হাতে। তিনি গাড়ির ড্যাশবোর্ডে সেটি লুকিয়ে রাখেন। পরে যথাসময়ে সেটি তুলে দেন সরোদবাদকের হাতে। “খান পদবি এবং বংশক্রম দেখে সবাই বিশ্বাস করেছেন আমি বাংলাদেশের।” এখনও সিরাজের মা বাংলাদেশে। তাঁর একাধিক বাদ্যযন্ত্রী এখনও ও পার বাংলায়। তাই প্রাণ নিয়ে নিজের শহরে ফিরতে পেরেও নিশ্চিন্ত নন সিরাজ আলি খান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement