নায়িকারা আগেই চলে এসেছেন। সাক্ষাৎকারের সময় পেরিয়ে গিয়েছে একঘণ্টা আগে। তবু তাঁর দেখা নেই। ছবির প্রচারের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁরা চিন্তা করতে শুরু করেছেন। অর্জুন কপূর এমনই। অনেক সময়েই বাতিল করেছেন সাক্ষাৎকার। সে ঝক্কি অবশ্য পোহাতে হল না, এলেন তিনি...
প্র: জানতাম নায়িকাদের দেরি হয়। আপনি তো তাঁদেরও ছাপিয়ে গেলেন...
উ: (হাসি) আরে না না। চার দিন ধরে মুম্বইয়ে যা বৃষ্টি হচ্ছে! রাস্তায় ট্র্যাফিক। দশ মিনিটের পথ পেরোতেও এক ঘণ্টা লাগছে।
প্র: আথিয়া শেট্টি আর আপনি আলাদা এলেন যে?
উ: উফ্, আমরা মোটেই প্রেম-টেম করছি না। (উঠে দাঁড়িয়ে) কোনও জায়গায় দু’জনকে একসঙ্গে দেখলেই ভাবতে শুরু করেন, প্রেম করছে। আমার সঙ্গে তো সব সহ-অভিনেত্রীর নামই জুড়ে দেওয়া হয়। সোনাক্ষী, পরিণীতি... এখন আথিয়া। আরে বাব্বা, এত ব়ড় প্লে বয় নই আমি। সব লিঙ্ক আপ প্রেম হতে যাবে কেন?
প্র: মালাইকার (অরোরা) সঙ্গে সম্পর্কটা কী ছিল? লিঙ্ক আপ না প্রেম?
উ: এখন যোগাযোগ অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। আগে প্রেম করা মানে ছিল বিয়ের পিঁড়িতে বসা। দেখা করাটাই তো শক্ত ছিল। এখন প্রেম আর বিয়ে সম্পূর্ণ অন্য ব্যাপার। বিয়ে মানে কারও সঙ্গে অনেকটা সময় কাটানো। যেটা আর কেউ জানে না, এমন খারাপ দিকগুলোও সে জানবে। বাবা-মায়েরাও সেটা বুঝে গিয়েছেন। যা ইচ্ছে করার অনুমতি নিশ্চয়ই দেন না। কিন্তু পাত্র বা পাত্রী খোঁজার কাজটা ছেলে-মেয়েদের উপরই ছেড়ে দিচ্ছেন। আসলে এখন চাপটা তো ‘আদর্শ’ পাত্র বা পাত্রী খোঁজা না। কোনও একজনকে খোঁজ করাটাই চাপ। ওই খোঁজ করার সময়টাতেই এখন রয়েছি।
আরও পড়ুন: সম্পর্ক মানেই সমঝোতা
প্র: ‘মুবারকাঁ’ ছবির গল্পও তো সঠিক পাত্রী খোঁজা নিয়ে।
উ: কোনও কোনও সিনেমার চিত্রনাট্য পড়েই মনে হয়, এই ছবিটার জন্যই এত দিন অপেক্ষা করছিলাম। ‘মুবারকাঁ’ তেমনই। পুরো পারিবারিক বিনোদন। এখন তো পরিবারের সকলের সঙ্গে সিনেমা হলে যেতে ভয় হয়। কোন ছবিতে কী যে দেখাবে! এটা বদলে দেবে ‘মুবারকাঁ’। অনীস বাজমির ছবির মজাটাই সেখানে। শহর বা গ্রামের বলে আলাদা করা যাবে না। ভারতীয়রা মুখে যা-ই বলুক বিয়েটা একদিন করবেই। পাত্রী খোঁজাকে কেন্দ্র করে মজা সব পরিবারেই কম বেশি হয়। সব পরিবারেই বিয়ের কথা তুলে মাথা খারাপ করে দেওয়া কাকি থাকেন। একজন ক্ষ্যাপাটে কাকা থাকেন।
প্র: ছবির কাকার সঙ্গে নিজের কাকার (অনিল কপূর) বেশ মিল বলছেন?
উ: (হাসি) একদম। শ্যুটিং শেষ হয়ে যাওয়ার পর খুব মন খারাপ হতো। সব সময় এত এনার্জেটিক থাকে কী করে কে জানে! এই মজা করছে, সেটে সবাইকে মাতিয়ে রাখছে...আবার ক্যামেরা অন হতেই চরিত্রের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে। চাচুর সঙ্গে প্রথম স্ক্রিন শেয়ার করলাম। আসলে বাড়িতে দেখা হওয়া এক রকম। সেটে আরেক রকম। অনেকে কিছু শিখলাম।
প্র: বাড়িতে অভিনয় নিয়ে পরামর্শ চাননি?
উ: বাড়িতে কথা হয়েছে বললেই লোকে বলবে, দেখো বনি কপূরের ছেলে, অনিল কপূরের ভাইপো, বাড়িতেই ইন্ডাস্ট্রির লোক। অর্জুন তো সব এমনি এমনি পায়। আরে, আমার জার্নিটা তো কেউ দেখছে না। মানছি প্রিভিলেজড পরিবারে জন্মেছি। কিন্তু তার মানে তো এই নয় যে, আমাকে কোনও পরিশ্রম করতে হয়নি...
প্র: তারকা পরিবারে বড় হওয়া চাপ বলছেন?
উ: চাপ বলব না। যদি কাজকে অবহেলা করতাম, তা হলে চাপ মনে হতো। সব সময় তুলনা শুনতে হতো। যা-ই করি না কেন, লোকে বলবে, ধুর এর চেয়ে ভাল করেনি, অমুক আরও ভাল। আমি ও সবে আর কান দিই না। পারিবারিক সূত্রে পাওয়া সুযোগগুলো অবহেলা করছি না। কিন্তু মনে রাখবেন, আমি সেটে এসে টাইমপাস করি না। নিজেকে নিংড়ে দিই ।
প্র: কেরিয়ার যে পথে এগোচ্ছে, তাতে খুশি?
উ: কখনই ভাবিনি পাঁচ বছরে ন’টা ছবি করে ফেলব। বা অনিল কপূরের সঙ্গে একই ফ্রেমে থাকব। অপূর্ণতা থাকবেই।কিন্তু আজকের দিনটা ‘ইশ্কজাদে’র সময় স্বপ্নেও ভাবিনি।
প্র: এমন কিছু আছে যেটা মনে হয় না করলেই ভাল হতো?
উ: না, একটুও না। প্রত্যেকটা ছবিতে অভিনয় করেছি নিজের মর্জিতে।
বক্স অফিসের ফল যা-ই হোক না। সব ক’টা ছবি করে আনন্দ পেয়েছি। ব্যক্তিগত জীবনের কথা জিজ্ঞেস করলেও বলব, না। সম্পর্ক ভাল হোক কী খারাপ, সব ক’টা থেকেই কিছু না কিছু শিখেছি।