‘নাম ঘোষণার সময়ে ভাবিনি, এ বারও মানুষ পাশে থাকবেন’

নির্বাচনী ফলাফল বেরোনোর আগে আনন্দ প্লাসকে বললেন দেবএকটা দলকে সমর্থন করি মানে বাকিরা শত্রু, তেমনটা কিন্তু নয়। এই বার্তাই সকলকে দিতে চেয়েছি। ‘বন্দেমাতরম’, ‘জয় শ্রী রাম’ তো আমারও। বিভেদের বিষ ছড়াচ্ছি আমরাই।

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৯ ০০:০১
Share:

দেব। ছবি: অর্পিতা প্রামাণিক

প্র: আপনি প্রত্যয়ী যে, নির্বাচনে জিতছেন?

Advertisement

উ: মানুষের ভালবাসার উপরে আস্থা আছে কি না যদি বলেন, তা হলে বলব, রাজ্যের যেখানে যেখানে প্রচারে গিয়েছি, আশীর্বাদ ও ভালবাসা উপচে পড়েছে। তার পরেও মানুষ কাকে বেছে নেবেন, সেটা তাঁদের উপরে ছেড়ে দেওয়া উচিত। ঘাটালে ভোট শেষ হওয়ার পরে অনেক মেসেজ পেয়েছি এ রকম, ‘‘তুই যে ভাবে নির্বাচনটা হ্যান্ডল করলি, তোর প্রতি শ্রদ্ধা বেড়ে গেল। অভিনেতা হিসেবে হয়তো তোকে শ্রদ্ধা করিনি। তবে মানুষ দেবকে চিনতে পারলাম।’’

প্র: কারা পাঠিয়েছেন এই মেসেজ?

Advertisement

উ: অঙ্কুশ একদিন মেসেজ করেছিল। আর ফেসবুকে অনেকে রাজনীতি নিয়ে লেখেন না, তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জন। তাঁরা আমার দলের নন। অন্য রাজনৈতিক দলের।

প্র: নিন্দুকেরা বলে, তারকা দেবকে দেখতে ভিড় হয়, প্রার্থী দেবকে নয়। এটা মানবেন?

উ: আমি সেটা বিশ্বাসও করতে চাই। যত দিন থাকব, তারকা দেবও যেন বেঁচে থাকে। কারণ, এ বার যখন নাম ঘোষণা হল, ভেবেছিলাম মানুষ আমার সঙ্গে থাকবেন না।

প্র: কেন?

উ: ২০১৪ এবং ২০১৬-য় বড় পরিসরে ক্যাম্পেন করেছি। ভেবেছিলাম, এক মুখ কত বার দেখবেন মানুষ? কিন্তু এ বার ক্যাম্পেনেও দারুণ সাড়া পেয়েছি। কানায় কানায় ভর্তি ছিল প্রতিটা সমাবেশ। একটা দলকে সমর্থন করি মানে বাকিরা শত্রু, তেমনটা কিন্তু নয়। এই বার্তাই সকলকে দিতে চেয়েছি। ‘বন্দেমাতরম’, ‘জয় শ্রী রাম’ তো আমারও। বিভেদের বিষ ছড়াচ্ছি আমরাই। প্রত্যেক ভোটারের দায়িত্ব, তাঁরা যে ট্যাক্স দিচ্ছেন, তার পরিবর্তে ভাল পরিষেবা পাচ্ছেন কি না, সেটা দেখার। আমি ঘাটালেও ভোট চাইনি। লোকের যদি মনে হয়, কাজ করেছি, তাঁরা ভোট দেবেন। আমি এই রাজনীতিতে বিশ্বাস করি।

প্র: সংসদে কম হাজিরা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে...

উ: যতক্ষণ না সাফল্য পাচ্ছি, প্রশ্ন আসতেই থাকবে। আমার ঘাটালে হাজিরা যে ভাল, তা নিয়ে কেউ প্রশ্ন করছে না। এ দিকে শুনলাম, মুনমুন সেনের সংসদে হাজিরা ৬০ শতাংশের বেশি। তাঁকে প্রশ্ন করা হচ্ছে, নির্বাচনী কেন্দ্রে কেন তিনি যাননি? মোদীজিকে প্রশ্ন, বারাণসীতে কেন বেশি আসেননি? ঘাটালের মানুষের যদি এই বিষয়টায় খারাপ লাগে, তাঁরা ভোট দেবেন না। আমি যে পার্লামে‌ন্টে যাইনি, তার বদলে তো বাড়ি বসে ঘুমোইনি। টলিউড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিও একটা বড় দায়িত্ব আছে আমার।

প্র: মিমি-নুসরতকে টিপ্‌স দিতে আপত্তি জানিয়েছেন?

উ: প্রথম বার নির্বাচনে নাম ঘোষণার পরে ৩০ সেকেন্ডের বেশি কথা বলতে পারিনি। কী বলব, কতটুকু বলব, জানতাম না। কিন্তু ওদের ইন্টারভিউ দেখছি, দে আর ডুয়িং ব্রিলিয়ান্ট জব! আমার ওদের দেখে শেখা উচিত। নুসরতের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওর জন্য ক্যাম্পেন করতে বলেছিল। আমি বলেছি, তুই এমনিই জিতবি। মিমির সঙ্গে অবশ্য কথা বন্ধ।

প্র: মিমি চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা বন্ধ কেন?

উ: ‘হইচই আনলিমিটেড’ কেন ছেড়েছিল, তার সদুত্তর ও আমাকে দেয়নি। আমিও ওকে সেই ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করিনি।

প্র: নিজের প্রযোজনায় পরপর চারটে ছবি করার পরে আবার অন্য প্রযোজনায় কাজ করছেন...

উ: সুরিন্দর ফিল্মস, ভেঙ্কটেশ ফিল্মস পরিবারের মতো। ১৫ বছর ধরেই ওদের সঙ্গে বড় হয়েছি। আমার প্রোডাকশনেও পরপর ছবি রয়েছে। ‘কিডন্যাপ’-এর প্ল্যান গত দু’বছর ধরে চলছে। ডেট নিয়ে সমস্যা ছিল। আসলে নিজের প্রোডাকশনে জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ পর্যন্ত করতে হয়। তাই ছ’মাসের ব্রেক চেয়েছিলাম। যেখানে অন্য কেউ আমার জায়গায় সিদ্ধান্ত নেবে।

প্র: দেবের পরে তাঁর চেয়ে বড় কমার্শিয়াল হিরো ইন্ডাস্ট্রিতে আসেনি। আবার এটাও ঠিক, গত পাঁচ বছরে যিশু-আবীর-ঋত্বিক প্রথম সারিতে চলে এসেছেন। এই মুহূর্তে ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনেতা দেবের অবস্থান কোথায়?

উ: এত ভাবার সময় নেই আমার। মনে হচ্ছে, সকলেই আমার চেয়ে এগিয়ে। যশ, অঙ্কুশ, সোহমের মতো কমার্শিয়াল হিরোও আছে। আসলে সব ছবিই যে চলবে, এটা তো হয় না। কেউ সেফ খেলে। কেউ রিস্ক নেয়। কেউ যেমন কাজ পায়, তেমনই করে। কারণ তার আপত্তি জানানোর মতো ক্ষমতা নেই। আমি সেফ খেলতে চাই না। কাকাবাবু আর ব্যোমকেশ বক্সী যদি প্রতি পুজোয় আসে, তা হলে ইন্ডাস্ট্রি এগোতে পারবে না। কাউকে ঝুঁকি নিতেই হবে। আর কেউ এ কথাটা বলতে পারবে না, দেব যে জায়গাটা পেয়েছে, তার অপব্যবহার করেছে!

প্র: আপনার ছবির সঙ্গে জিতের ছবিও মুক্তি পাচ্ছে। সমঝোতা ভেঙে গেল?

উ: ‘পাসওয়ার্ড’-এ পরমব্রতের (চট্টোপাধ্যায়) চরিত্রটা জিতের করার কথা ছিল। ও বলল, পুজোয় ওর রিলিজ় আছে। আমি বললাম, ‘‘কথা তো হয়েছিল, তুমি ইদে আর আমি পুজোয় আসব।’’ তখন ও বলল, ‘‘দু’বছর আগে কথা হয়েছিল। এখন তো হয়নি। তুই তোরটা দেখে নে।’’ তখন আমি রানেকে (নিসপাল সিংহ) বললাম, ইদে রিলিজ় করাতে।

প্র: এত বছর পরেও রুক্মিণী আপনাদের সম্পর্ক স্বীকার করতে চান না কেন?

উ: তা হলে অন্য কোথাও হয়তো প্রেমটেম করছে! তাই এমন বলছে।

প্র: ইন্ডাস্ট্রির কাউকে কিডন্যাপ করতে চান?

উ: কোন ইন্ডাস্ট্রি?

প্র: টলিউড ইন্ডাস্ট্রির...

উ: নাহ। আমিই না কোন দিন কিডন্যাপড হয়ে যাই! (হাসি)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন