দুপুরের গনগনে রোদ। তার মধ্যেই দক্ষিণ কলকাতার একটি অভিজাত মলের প্রবেশদ্বারের পাশে বাঁধা মঞ্চে আস্তে আস্তে ভিড় বাড়ছে। সেখানে কলেজ পড়ুয়া অষ্টাদশীদের সংখ্যা বেশি হলেও, ছেলেরাও নেহাত কম ছিল না। তত ক্ষণে খবর ছড়িয়ে পড়েছে, একটি নামী ব্র্যান্ডের জুতো লঞ্চ করতে শহরে আসছেন কার্তিক আরিয়ান। ‘সোনু কে টিটু কী সুইটি’র অভাবনীয় বক্স অফিস সাফল্যের পরে কার্তিকের জনপ্রিয়তা যে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে, তা ওই ভিড় চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মঞ্চে কার্তিক ওঠার পর থেকেই তাঁর জন্য মেয়েদের সমস্বরে চিৎকার, ‘উই লাভ সোনু’র কোলাহল শুনে মনেই হয় না, কার্তিকের ঝুলিতে ছবি মাত্র ছ’টি। আর শেষ ছবির সুবাদেই তাঁর এতটা পরিচিতি।
জীবন কি আদৌ বদলেছে? প্রশ্ন শুনে একগাল হেসে অভিনেতা বললেন, ‘‘না, সে ভাবে বদলায়নি। তবে আমি খুব খুশি। যেখানে পৌঁছতে চেয়েছিলাম, কিছুটা হলেও সেই পথে এগিয়েছি।’’ পাপারাৎজ়ির নয়নের মণি হয়ে উঠেছেন তো! ‘‘হ্যাঁ, আগেও অনেক জায়গায় যেতাম। তবে এত লোকে ছবি তুলত না। এখন যেখানেই যাই, ক্যামেরা পিছু ছাড়ে না। ছবির সাফল্যের জন্যই এত কিছু। লাইমলাইট উপভোগ করছি,’’ বলছেন কার্তিক। শোরুমের ভিতরে বসে কার্তিক যখন সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন, বাইরে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে তাঁর ভক্তরা। মাঝেমাঝেই কানে আসছে তাঁদের ‘কার্তিক, কার্তিক...’ ডাক।
কেরিয়ারের শুরুতেই একশো কোটির ক্লাবের সদস্য হওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ? ‘‘সবচেয়ে বড় কথা, বক্স অফিসে ছবির ভাল ব্যবসা করা। তা একশো কোটির ম্যাজিক অঙ্ক না-ও অতিক্রম করতে পারে। এক জন অভিনেতার কাছে বক্স অফিসে সাফল্য পাওয়া খুব জরুরি। এতে প্রযোজকের ভরসাও পাওয়া যায়। আমার সৌভাগ্য, হাতে গোনা কয়েক জন অভিনেতার মধ্যে আমার ছবিও এত ভাল ব্যবসা করেছে,’’ বলছেন কার্তিক।
শোনা যাচ্ছে, রোহন সিপ্পির পরের ছবিতে ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনের বিপরীতে কাস্ট করা হয়েছে কার্তিককে। কর্ণ জোহরের প্রযোজনা সংস্থার তরফেও নাকি ছবির প্রস্তাব পেয়েছেন। তবে সাবধানী অভিনেতা এখনই সে ব্যাপারে মুখ খুলতে চাইলেন না। ‘‘আমার পরিচালক বা প্রযোজক আগে বলুন, সেটাই সমীচীন হবে।’’
কলকাতায় প্রায়ই আসতে হয় কার্তিককে। আর তার জন্য ভক্তদের যে উচ্ছ্বাস, আসবেন না-ই বা কেন! ‘‘দ্বিতীয় বাড়ি হয়ে গিয়েছে কলকাতা। আর আমি খেতে ভালবাসি। মিষ্টি খেতে একটু বেশিই। তাই এখানকার রসগোল্লা আর মিষ্টি দই তো বটেই!’’
কার্তিকের জন্য মেয়েরা পাগল। তবে নায়কের জীবনে ঝড় তুলেছেন কে? মুম্বইয়ের ক্যাফে, কখনও বা রেস্তরাঁয় ডিম্পল শর্মা নামে এক মডেলের সঙ্গে হালফিল দেখা গিয়েছে কার্তিককে। প্রেম করছেন? প্রশ্ন শুনে এমন হাসলেন, মনে হল, ‘হ্যাঁ’ তিনি বলতে পারছেন না। আর ‘না’ তিনি বলতে চাইছেন না। দুটোর মাঝামাঝি সদুত্তর খুঁজতে কয়েক সেকেন্ড সময় নিয়ে বললেন, ‘‘পেশাদার জীবনের বাইরে কথা বলি না।’’
তবে উত্তর যা পাওয়ার, তা বোধহয় সোনুর অনুরাগীরা পেয়েই গিয়েছেন!