Pankaj Tripathi

Pankaj Triptahi: ‘ইতিহাস রিক্রিয়েট করতে গিয়ে ওই সময়টায় পৌঁছে গিয়েছিলাম’

আমি যখন গ্রামে গুলি-ডান্ডা খেলছিলাম, তখন আমার দেশ ক্রিকেটে ইতিহাস তৈরি করছিল!

Advertisement

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৫১
Share:

পঙ্কজ

প্র: সদ্য কলকাতায় শুটিং করে গেলেন। এটাই কি প্রথম শুট এই শহরে?

Advertisement

উ: দু’বছর আগে একটা শর্ট ফিল্মের শুটিং করেছিলাম। তার পর এই ‘শেরদিল’-এর জন্য শুট করলাম। কিন্তু সেটা মোটে একদিনই। বাকি অংশের শুটিং নর্থ বেঙ্গলে হয়েছে। আমার শ্বশুরবাড়ি কলকাতায়, তাই বাঙালিদের সঙ্গে কাজ করতে ভাল লাগে। শুটিংয়ের সময়ে চার দিক থেকে টুকরো টুকরো বাংলা কথা ভেসে আসত। ‘তাড়াতাড়ি কর’, ‘ঝটপট হাত চালা’... ইউনিটের প্রায় সবাই তো বাঙালি। বাংলা ভাষার মধ্যে একটা মাধুর্য আছে। ছবির স্ক্রিপ্টটাও দারুণ আর সৃজিত (মুখোপাধ্যায়) খুব অদ্ভুত একজন পরিচালক।

প্র: অদ্ভুত কেন বলছেন?

Advertisement

উ: সেটা ব্যাখ্যা করে বলাটাও খুব অদ্ভুত হবে (হাসি)!

প্র: ‘এইটিথ্রি’ নিয়ে একটা উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। ভারতের বিশ্বকাপ জেতার সময়ের কোনও স্মৃতি আছে আপনার?

উ: কোনও স্মৃতি নেই। কারণ আমার গ্রামে ওই সময়ে রেডিয়ো পৌঁছয়নি। আমি যখন গ্রামে গুলি-ডান্ডা খেলছিলাম, তখন আমার দেশ ইতিহাস তৈরি করছিল! বিশ্বকাপ জেতার বিষয়টা জেনেওছি অনেক দিন পরে।

প্র: ক্রিকেট নিয়ে আগ্রহ ছিল?

উ: অল্প বিস্তর খেলেছি। আমাদের গ্রামের স্থানীয় মিস্ত্রি ক্রিকেট ব্যাট বানিয়ে দিতেন। আসলে আমি স্প্রিন্টার ছিলাম। দৌড়ানো, হাইজাম্প এগুলোয় বেশি ফোকাস ছিল। অ্যাথলিট হতে চাইতাম। কলকাতায় যেমন ক্রিকেট-ফুটবল দুটো নিয়েই মানুষের আগ্রহ দেখেছি। ব্যক্তিগত ভাবে আমার ফুটবল বেশি পছন্দ। ৯০ মিনিটে খেলা মিটে যায়।

প্র: ছবিতে আপনি টিমের ম্যানেজার মান সিংহের চরিত্রে। ওঁর সম্পর্কে মানুষ বেশি জানেন না। চরিত্রটা শুনে আপনার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া কী ছিল?

উ: কবীর খান যখন চরিত্রটা শোনাচ্ছিলেন, আমি একদৃষ্টে ওঁর চোখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। সেই দিন ওঁর চোখের মধ্য দিয়ে আমি পুরো ছবিটা দেখে নিয়েছিলাম। মনে মনে ভাবছিলাম, কী অসাধারণ একটা জার্নি! চিত্রনাট্য শোনার সময়েই ভীষণ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। পি আর মান সিংহের মতো অফস্ক্রিনে থাকা ব্যক্তিদের অবদান প্রকাশ্যে আসে না। ছবিটা দেখে এ বার সকলে জানতে পারবেন।

প্র: রিয়্যাল লোকেশনে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?

উ: অসাধারণ। ইতিহাস পুনর্নির্মাণের ছলে আমরাই যেন ওই সময়টায় পৌঁছে গিয়েছিলাম। ওই একই মাঠ, গ্রিনরুম, ড্রেসিংরুম, ব্যালকনিতে শুট হয়েছে। লর্ডস, ওভালে শুট করেছি। শুটিংয়ের সময়ে আমাদের গায়ে রীতিমতো কাঁটা দিত।

প্র: সিনেমা-সিরিজ় মিলিয়ে মনে রাখার মতো অনেক চরিত্র করেছেন। কোন চরিত্রটা কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল বলে মনে হয়?

উ: আমার কেরিয়ারে সে ভাবে কোনও টার্নিং পয়েন্ট নেই। তবে ২০১৭ সালে ‘নিউটন’ করার পরে দেখলাম, লোকজন চিনতে পারছে। আমার জার্নি অনেকটা নদীর মতো। পাহাড় থেকে বইতে শুরু করেছে। জানে না কোথায় যাবে, কিন্তু বয়ে যাওয়ার নেশায় চলে যাচ্ছে... ‘শেরদিল’-এর শুট করতে গিয়ে তিস্তা নদী দেখে এলাম। কী অপূর্ব। জীবনটাও ওই রকমই মনে হয়।

প্র: ওটিটির সুপারস্টারের তকমা জুড়ে গিয়েছে আপনার নামের সঙ্গে। এটা কি উপভোগ করেন?

উ: লোকে এ সব বলে। আমার নিজের আলাদা করে কিছু মনে হয় না। আগে যেমন ডাল-ভাত খাওয়া সাধারণ মানুষ ছিলাম, এখনও তাই আছি। তবে লোকের ভালবাসা বেড়েছে। আর সেটাই আমার দায়িত্ববোধ বাড়িয়েছে। ভাল কাজের জন্য তাগিদ বেড়েছে। আমি চাই না আমার দর্শক হতাশ হন।

প্র: পরিচালনা নিয়ে আগ্রহ আছে?

উ: খুবই আগ্রহ আছে। সৃজিত যেমন বলছিল, ‘আপনি খুব তাড়াতাড়ি ক্যামেরার পিছনে আসবেন।’ আমি বললাম, কোনও দরকার নেই। এখন ক্যামেরার সামনের দোকানটা ভাল চলছে। পিছনে যাবই না (হাসি)!

প্র: তার মানে ভবিষ্যতে নির্দেশনা দিতে পারেন?

উ: আমি মাঝে মাঝেই বিভিন্ন গল্প ভিসুয়ালাইজ় করি। ক্যামেরার সামনে গল্প বলতেও ইচ্ছে করে। কিন্তু ওই ইচ্ছে আর নিজের ভাবনাটা, অভিনয় করার সময়ে ছবির পরিচালকের উপর দিয়ে কারসাজি করে চালিয়ে নিই (হাসি)! অভিনয়ের মধ্যেও তো পরিচালনা আছে। একজন ডিরেক্টর যেটা বলছেন, সেটা নিজেকে দিয়ে করিয়ে নেওয়াটাও এক রকম নির্দেশনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন