‘আমি মায়ের মতোই চিন্তাভাবনা করি’

সম্পর্ক, কেরিয়ার, সৎবোন— সব নিয়ে আনন্দ প্লাসের সঙ্গে কথা বললেন অর্জুন কপূর সম্পর্ক, কেরিয়ার, সৎবোন— সব নিয়ে আনন্দ প্লাসের সঙ্গে কথা বললেন অর্জুন কপূর

Advertisement

শ্রাবন্তী চক্রবর্তী

মুম্বই শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮ ০০:০০
Share:

অর্জুন

প্র: নতুন প্রজন্মের অভিনেতাদের মধ্যে আপনি অন্যতম যিনি #মিটু নিয়ে কথা বলেছেন...

Advertisement

উ: #মিটু নিয়ে যাঁরা কথা বলছেন, তাঁদের সকলকে হ্যাটস অফ! আমার বোনেরা এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করে। তাই আমি চাইব তাদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ হয়ে উঠুক আমাদের এই ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু তার জন্য সবাইকে মিলিত ভাবে এগিয়ে আসতে হবে। বাড়ির পরিবেশও খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। ছোটবেলা থেকে এক জন ভাই তার বোনের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করছে, এক জন স্বামী তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কী ভাবে কথা বলছেন— এই সব আমাদের খেয়াল করা উচিত। আর একটা বিষয় এই #মিটু-র সম্পর্কে আমি বলতে চাই। সেটা হল এই সমস্যা শুধু আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে নয়, সব ইন্ডাস্ট্রিতেই। এ রকম একটা মুভমেন্ট যখন শুরু হয়েছে, তখন এই সমস্যা নির্মূল করা উচিত।

প্র: আপনি পরিবারের কার কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি শিখতে পেরেছেন?

Advertisement

উ: আমার মা। কারণ বাবা বেশির ভাগ সময়ে নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। জেনেটিক্যালি আমি অনেকটা বাবার মতো। সেটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু আমি আমার মায়ের মতো চিন্তাভাবনা করি। আমার জীবনে মেয়েদের ভূমিকা বিরাট। তাই অনেক কিছু আমি খুব সহজ ভাবে শিখতে পেরেছি। কী ভাবে নমনীয়তার সঙ্গে মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে হয়, কী ভাবে মেয়েদের সহজ করা যায়— এগুলো আমি অনেক ছোট থেকেই জানি। আর একটা জিনিস আমি বিশ্বাস করি। সব সময়ে সব কিছু কাউকে শিখিয়ে হয় না। নিজের থেকেও অনেক কিছু করা যায়। আমাদের সমাজে কিছু জিনিস খুব অদ্ভুত। ছেলেরা কাঁদলে বলা হয় মেয়েদের মতো কাঁদছিস কেন? কিন্তু আমি জানি, ছেলেরাও কাঁদতে চায়।

প্র: আপনি সাধারণত সোজাসাপটা কথা বলে থাকেন। তার ফল ভুগতে হয়েছে?

উ: অভিনেতারা তো রোজ সকালে উঠে জানতে পারে, কত জন আমাদের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়িয়েছেন! নিজের চিন্তাভাবনা এবং স্ট্যান্ড নেওয়ার ক্ষমতা আমাকে অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র করেছে। নিজের ব্যক্তিত্ব কখনওই অন্য কারও জন্য ছাড়া উচিত নয়।

প্র: ‘নমস্তে ইংল্যান্ড’ করার সময়ে আপনার দিদা নাকি পরিণীতিকে আপনার বৌ বানানোর জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন...

উ: দিদার একটাই স্বপ্ন, আমার বিয়ে দেওয়া! পরিণীতির সঙ্গে দিদার সে ভাবে দেখাই হয়নি যে, পরিণীতিকে আমার বৌ বানাবেন। তবে ছবির ট্রেলারের কিছু দৃশ্য ওঁর খুব পছন্দ হয়েছিল। আর পরিণীতির সঙ্গে আমার কো-স্টার এবং বন্ধু হিসেবে সম্পর্কটাও খুব মজবুত।

প্র: আপনার বয়স এখন ৩৩। বিয়ে নিয়ে ভাবছেন না?

উ: এত দিন আমি শুধু কাজের মধ্যে ছিলাম। খুব অল্প বয়সে নানা সমস্যার মোকাবিলা করেছি। এখন আমার জীবনে কিছুটা শান্তি এসেছে। ভালবাসাকে মর্যাদা দিতে পারি। এখন ইচ্ছে করে সেটল করতে। তবে নিজেকে কোনও ডেডলাইন দিইনি। আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে বিয়ে করব, তা-ও নয়। লং টার্ম রিলেশনশিপে আগ্রহী আমি। আগে প্রেম-ভালবাসা এ সবকে খুব ভয় পেতাম। এখন কাজের দিক থেকে অনেক শান্তিতে আছি। ইমোশনালিও অনেক শান্ত আমি।

প্র: কী রকম মেয়ে পছন্দ আপনার?

উ: গাড়ির মডেল তো নয় যে, দেখেশুনে পছন্দ করব! সে রকম কিছু ভাবিনি। আর জীবনে আমি যা ভেবেছি, তার উল্টোটাই হয়। তাই ভাবি না।

প্র: শ্রীদেবীর মৃত্যুর পরে জাহ্নবী এবং খুশির যোগ্য দাদার ভূমিকা পালন করছেন আপনি। সকলের বাহবাও পাচ্ছেন...

উ: আমি সেটাই করেছি, যেটা আমার মা বেঁচে থাকলে চাইতেন। ওদের মতো আমিও অল্প বয়সে মাকে হারিয়েছি। সেই দুঃখ ভোলার নয়। ওদের সঙ্গে দাঁড়ালে ওদের দুঃখ-কষ্ট যদি একটু কম হয়, তা হলেই আমি খুশি। আমার মা যখন চলে গিয়েছিলেন, তখন কিন্তু আমি একাই ছিলাম। আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দ আর সবচেয়ে নির্মম দুঃখের সময়টা একই ছিল। ডেবিউ ছবির প্রচার করছিলাম। ছবি মুক্তি পাওয়ার ঠিক আগেই মা চলে গেলেন। আপনাদের সকলের সঙ্গে তখন কথাও বলেছিলাম। সেটা যদি না করতাম তা হলে হয়তো পাগল হয়ে যেতাম। জাহ্নবীকেও একই ভাবে ফিল্ম প্রোমোট করতে হয়েছিল। আর ও খুব সুন্দর নিজেকে সামলিয়েছে। ও যে লেগাসি থেকে এসেছে, সেটার মর্যাদা দিতে পেরেছে। তবে কাউকে কিছু প্রমাণ করার জন্য আমি এ সব করিনি। ক্যামেরার সামনে অভিনয় করি। ক্যামেরা অফ হলে কিন্তু আমি স্বাভাবিক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন