এই ফেস্টিভ্যালের বহু ছবি কলকাতাই প্রথম দেখবে: বৌদ্ধায়ন

রবিবার থেকে কলকাতায় শুরু হতে চলেছে ভিন্নধারার ‘আর্টহাউজ এশিয়া ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’। কেন এই ফেস্টিভ্যাল ব্যতিক্রমী? আনন্দবাজার ডিজিটালকে জানালেন পরিচালক বৌদ্ধায়ন মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২০ ১৭:৪৮
Share:

শর্ট ফিল্ম ‘ডার্লিং’-এর একটি দৃশ্য।

আগামী ৫ জানুয়ারি, রবিবার থেকে কলকাতায় শুরু হতে চলেছে ভিন্নধারার ‘আর্টহাউজ এশিয়া ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’। কেন এই ফেস্টিভ্যাল ব্যতিক্রমী? আনন্দবাজার ডিজিটালকে জানালেন পরিচালক বৌদ্ধায়ন মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

আপনি হঠাৎ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সঙ্গে যুক্ত হতে গেলেন কেন?

শপথ দাসের এই প্রচেষ্টাকে সমর্থন না করে পারা যায় না। শপথ প্রায় অসাধ্যসাধন করছে। একটা বিখ্যাত ফ্রেঞ্চ ল্যাব ‘প্রোদুইর ও সুদ’-কে কলকাতায় নিয়ে আসছে। সাতটা সাউথ এশিয়ার প্রজেক্টকে মেনটরিং করাচ্ছে কলকাতায়। এগুলো কলকাতা কেন, ভারতেই আগে হয়নি। বিদেশের ফেস্টিভ্যালে বা মার্কেটে আমাদের বাংলা ছবির যে শোচনীয় অবস্থা তার কারণ কিন্তু ছবি তৈরির প্রাথমিক কিছু শিক্ষার অভাব। এই ফেস্টিভ্যালের মাধ্যমে সামান্য হলেও যদি এই ফিল্ম মেকিংয়ের ওপর আলো ফেলা যায়... এর জন্যই শপথের সঙ্গে আমি আছি।

Advertisement

শপথ কে?

শপথ দাস কলকাতার ছেলে। লোকার্ন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে আন্ডার থার্টি প্রোগ্রাম ‘অডিয়েন্স অব দ্য ফিউচার’, এই বিভাগে সারা পৃথিবীর ২৫ জনের মধ্যে ভারত থেকে একমাত্র শপথ ডাক পেয়েছিল। সিনেমার প্রতি ওর অদ্ভুত দায়বদ্ধতা আছে। ও এই ফিল্ম উৎসবের পরিচালক।

ফেস্টিভ্যালের তো ছড়াছড়ি... এটা আলাদা কোথায়?

হ্যাঁ। তবে বৈধ ফেস্টিভ্যালের সংখ্যা খুব বেশি নয়। এটা বুঝতে হবে। এই ফেস্টিভ্যাল শুধু ফিল্মের স্বার্থে করা। ফিল্ম নিয়ে স্বপ্ন দেখা ভালবাসার মানুষ আসছে শীতের কলকাতায়। হ্যান্ডপিকড্ সব ফিল্ম কলকাতার জন্য নিয়ে আসছে। সকলে দেখুক, এই কারণেই এই আয়োজন। স্ক্রিপ্ট লেখা, পরিচালনা, প্রযোজনা নিয়ে বিভিন্ন সেশন তৈরি হচ্ছে। মাস্টারক্লাসেস তো আছেই। এই ফেস্টিভ্যাল এমন এক পরিসর তৈরি করবে যেখানে বলা যেতে পারে, ইউ ইট ড্রিঙ্ক স্লিপ ফিল্ম। এখানে সবার ওপরে সিনেমা সত্য, তাহার ওপরে নাই।

কলকাতার বুকে এই সিনেমা নিয়ে নতুন আর কী ঘটছে?

বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত-র মাস্টারক্লাস আছে। ইরফানকে নিয়ে অসীম ছাবড়া যে বই লিখেছেন তার লঞ্চ হবে এখানেই। সিনেমা নিয়ে দুটো রাউন্ড টেবিল আছে। বাংলাদেশ থেকে রোকেয়া প্রাচী আসছেন জুরি হয়ে। সাইম সাদিকের ছবি ‘ডার্লিং’, যেটা ভেনিসে বেস্ট শর্ট ফিল্ম পেল, সেটা প্রথম দেখব আমরা সবাই। প্রত্যেকটা ছবিই কলকাতায় প্রিমিয়ার। প্রথম দেখা হবে। আশা করব সবাই ‘বসুশ্রী’তে এসে দেখবেন। আর এই যে মেন্টরিং ওয়ার্কশপ যা ফ্রেঞ্চ ল্যাব ‘প্রোদুইর ও সুদ’ করছে তা ভারতেই হয়নি, কলকাতা তো দূর! এই বিশ্ববিখ্যাত ল্যাব থেকে উপকৃত হননি এমন কোনও ফিল্মমেকার নেই। সাউথ এশিয়ান ফিল্মের স্বার্থে এমন কিছু ঘটনা ভারতেই প্রথম ঘটবে। এটা ভাবতেই ভাল লাগছে।

‘অ্যান ইরেলিভেন্ট ডায়লগ’ ছবির একটি দৃশ্য

নতুন পরিচালকরা কী পাবেন এই ফেস্টিভ্যাল থেকে?

সিনেমায় নতুন, পুরনো এ ভাবে কিছু হয় না বলে আমি মনে করি। আমি আমার মৃত্যুদিন পর্যন্ত নিজেকে নতুন পরিচালকই বলব। নবীন বা প্রবীণ যে-ই হই না কেন, প্রত্যেকে কিছু না কিছু এখান থেকে শিখবই। বেশ কিছু নতুন পরিচালকের শর্ট ফিল্ম এখানে দেখান হবে। সিনেমাপ্রেমীদের অনেক কিছু পাওয়ার আছে এখান থেকে। ৫ থেকে ১১ জানুয়ারি এই ফেস্টিভ্যাল চলবে।

মানুষ কি ভাবতে পারে এটা কঠিন ছবি বা আঁতেল ছবির উৎসব?

আঁতেল ফেস্টিভাল বলে কিছু হয় না। যে ধরনের সিনেমা একটা ফেস্টিভাল নির্বাচন করে সেই নিরিখেই ফেস্টিভালের চরিত্র গড়ে ওঠে। আর আঁতেল ছবি বলেও কিছু হয় না।

আপনার সিনেমা ‘মরিচঝাঁপি’-র কী খবর?

‘মরিচঝাঁপি’-র চিত্রনাট্য লেখার কাজ শেষ। বাকি কাজ শুরু করেছি।

কাস্টিং নিয়ে তো মুখ বন্ধ করে আছেন!

এই মুহূর্তে একটাই খবর, আদিল হুসেন অন দ্য লিড কাস্ট। আর কিছু বলার নেই।

আর মেয়ের খবরটা?

কী?

পরিচালক বৌদ্ধায়ন মুখোপাধ্যায়

আপনার মেয়ের গান শুনে রহমান টুইট করেছিলেন। আপনার ছবিতে কি ও এ বার প্লেব্যাক করবে?

(হাসি) আর্ষা ভাল গাইলে আমার ছবি কেন, যে কোনও ছবিতে ওর কণ্ঠস্বর প্রয়োজন হলে ও নিশ্চয়ই গাইবে। আমার ছবি বলে আলাদা সুযোগ ও কখনও পাবে না।

বেশ। প্রসেনজিতের সঙ্গে নাকি কাজ করবেন?

প্রসেনজিতের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে বহু দিনের। কথাও হয়েছে। এটা একটা ড্রিম প্রজেক্ট বলতে পারেন। সেটা নিয়ে কথাও বলেছি আমরা। তবে আমি একসঙ্গে তো অনেক কাজ করি। সব প্রজেক্টকে সব সময় সমান গুরুত্ব দেওয়া যায় না। তবে প্রজেক্টটা আরও এগোলে নিশ্চয়ই বিশদে বলব।

এই ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। কেন?

প্রসেনজিৎ এমন এক জন মানুষ যিনি সব সময় ভাল সিনেমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। সেই কারণেই ওঁকে যখন বলেছি এই ফেস্টিভালের কথা, উনি এক কথায় রাজি হয়ে গেলেন। আমরা কৃতজ্ঞ। চাই ওঁর মতো ইন্ডাস্ট্রির অভিনেতা পরিচালক প্রযোজক সবাই এই ফিল্মের উৎসবে যোগ দিন। কলকাতা শহরের বুকে একসঙ্গে ছবি দেখার মজাটাই আলাদা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন