নাগেশ।
প্র: ‘ধনক’, ‘লক্ষ্মী’, ‘রকফোর্ড’। ছোটদের গল্প বলতে ভালবাসেন?
উ: না, সে রকম ভেবে কিছু করিনি। আসলে ‘লক্ষ্মী’র পরে একটা খুশির ছবি বানাতে চেয়েছিলাম। পৃথিবীতে খারাপটাই যে সব নয়, অন্ধকারের ওপারে আলোরও দেশ আছে, সেই ভাবনা থেকেই ‘ধনক’।
প্র: আপনার ছবিতে তারকা অভিনেতাদের দেখা যায় না...
উ: এটা ছবির বিষয়ের উপর নির্ভর করে। তারকা অভিনেতা নিলে ছবিটি তাকে ঘিরেই আবর্তিত হয়। দর্শকের মনে প্রত্যাশা তৈরি হয়ে যায়। যখন বেশি বাজেটের থ্রিলার ‘...তসবির’ করেছি, অক্ষয়কে নিয়েছি। বড় স্টার না থাকলে বেশি বাজেটের ছবি করাও যায় না।
প্র: সেন্সর বোর্ডের জন্য ছবি তৈরি করা কি কঠিন হয়ে যাচ্ছে?
উ: আমার প্রথম ছবি ‘হায়দরাবাদ ব্লুজ’ (১৯৯৮)-এ ৯১টি কাট ছিল। ২০ বছর ধরে এই প্রথার বিরুদ্ধে লড়ছি। আমি মনে করি, সেন্সর কাটিং নয়, সেন্সর রেটিং চাই। কোন ছবি দেখা হবে বা হবে না, সেটা দর্শক ঠিক করবেন। ক্ষমতায় থাকা চার-পাঁচ জন ব্যক্তি এক বিশাল সংখ্যক মানুষের পছন্দ ঠিক করে দিচ্ছেন! আরও কী বলুন তো, এটা কোনও সরকারের সমস্যা নয়। যে-ই আসে সে-ই এটা করে।
প্র: নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম, এই মিডিয়ামগুলোর উত্থান কি বড় পরদাকে চ্যালেঞ্জ করছে?
উ: দেখুন, প্রতিটি মিডিয়ামে ছবি দেখার অভিজ্ঞতা আলাদা। আমরা বড় পরদার জন্য ছবি বানাই। তাই অন্য মিডিয়ামে সে ছবি দেখলে সেই স্বাদ পাওয়া যাবে না। কিন্তু এটাও মানছি যে, এখন হলে কী চলছে সেটা বড় কথা নয়। দর্শক ওই মুহূর্তে কী দেখতে চাইছেন সেটাই মুখ্য। তাই নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন এগুলো থাকবে। এখনও আমি নিজেকে চাইল্ড অব সিনেমা বলে মানি। নেটফ্লিক্স যে স্বাধীনতার জায়গা দিচ্ছে, শিল্পী হিসেবে সেটা মানতেই হবে। এমন অনেক গল্প আছে যা দু’ঘণ্টার মধ্যে বলা যায় না। সেই ধরনের কাজ নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করার সুযোগ দিচ্ছে এই ফ্ল্যাশ মিডিয়ামগুলো।
প্র: হিন্দি ছবি কোন দিকে এগোচ্ছে বলে মনে হয়?
উ: গত পাঁচ বছরে হিন্দি ছবিতে গল্প বলার ক্ষেত্রে একটা যুগান্তকারী অধ্যায় এসেছে। ডিজিটালে অনেক সুবিধে। যাঁদের বাজেটের সমস্যা আছে, তাঁরা শর্ট ফিল্ম বানিয়ে ইউটিউবে দিচ্ছেন। তাতে কিন্তু তাঁরা একটা বিশাল সংখ্যক দর্শকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন।
প্র: অবসর সময়ে কী করেন?
উ: আমার প্রথম ভালবাসা বেড়াতে যাওয়া। তাই যখন কাজ থাকে না, বেশির ভাগ সময়ে মুম্বইয়ের বাইরে থাকি। ন্যাশনাল পার্ক হোক, সমুদ্র হোক, ঘুরতে যাবই। আর তার পরেই হল ভাল-মন্দ খাওয়া।
প্র: কলকাতার কী কী খাবার পছন্দ?
উ: কোনও সাংবাদিককে বলছি বলে নয়, কলকাতা আমার অন্যতম পছন্দের খাওয়ার জায়গা। (হাসি) অনেক বাঙালি বন্ধুর সুবাদে ডাবচিংড়ি, লুচি-মাংস খুবই পছন্দের। জানি বাঙালিরা মানবেন না, তবে আমার মনে হয় ইলিশ মাছ ওভাররেটেড। আমি ভেটকির ভক্ত। এ বারে পেট ঠিক নেই। তবে গাঙ্গুরামের রসগোল্লা নিয়েই ফিরব। (হাসি)
প্র: ইন্ডাস্ট্রি কি আপনাকে আপনার প্রাপ্য জায়গা দিয়েছে?
উ: (খুব জোরে হাসি) ইন্টারেস্টিং প্রশ্ন। আপনার কী মনে হয়?
প্র: আপনিই বলুন...
উ: আমি খুব প্রাইভেট মানুষ। মেনস্ট্রিম ইন্ডাস্ট্রির অনেককে চিনলেও যোগাযোগ খুব কম। বাঁধাগতের ছবি করি না বলে তেমন যোগাযোগ বাড়েওনি। সে নিয়ে আমার অভিযোগ নেই। একটা সময় আমার ছবিকে সমান্তরাল ছবি বলা হতো। এখন সেই বিভেদের গণ্ডিটা অনেকটাই মুছে গিয়েছে। নিজের খুশিতে ছবি বানাই। আর আমার খারাপ ছবির দায়ও আমার। (হাসি)