নিমরত
প্র: ব্যক্তিজীবনেও কি আপনি একজন ফাইটার?
উ: (হাসি) মা সব সময় বলতেন, খারাপ পরিস্থিতিতে মেয়েদের লড়াই করার ক্ষমতা বেড়ে যায়। আমার মনোবল বা়ড়়ানোর জন্যই বলতেন। কিন্তু দেখেছি, নেতিবাচক মন্তব্য কিংবা আচরণের সামনে মায়ের ওই কথাটাই আমাকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে।
প্র: আপনি কি মনে করেন, রুখে দাঁড়ানোর মানসিকতা ভারতীয় মেয়েরা সব পরিস্থিতিতে কার্যকর করতে পারেন?
উ: সবার পরিস্থিতি তো সমান নয়! হরিয়ানার প্রত্যন্ত গ্রামের যা রীতিনীতি, মুম্বই শহরের রীতিনীতি সে রকম হবে না! তবে আমার মতে, একটা মেয়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকাটা খুব জরুরি। কোনটা অন্যায়, সেটা মেয়েদের বুঝতে হলে তাদের শিক্ষা থাকাটা দরকার। শিক্ষাই মেয়েদের সমানাধিকার পাওয়ার একমাত্র রাস্তা।
আরও পড়ুন: ‘নেগেটিভ কিছু মনে রাখব না’
প্র: আপনার কি মনে হয়, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে মেয়েদের আরও বেশি করে যোগ দেওয়া উচিত?
উ: অবশ্যই। আমার বাবা নিজে সেনাবাহিনীর অফিসার ছিলেন। ওঁর থেকেই আমি আর আমার বোন শিখেছি, অনুশাসন আর শৃঙ্খলার কতটা প্রয়োজন একটা মানুষের জীবনে। এটাও জানি যে, সেনাদের জীবন মসৃণ নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ট্র্যাজিকও। যেমন বাবা আমাদের ছেড়ে দিনের পর দিন বাইরে থাকতেন, একটা সময়ের পর তো পুরোপুরিই চলে গেলেন (নিমরতের বাবা মারা যান ফিল্ড অপারেশনে)। তবে সংখ্যাতত্ত্বের দিক থেকে বলতে গেলে, ১৩০ কোটির দেশটায় মোটে একটা ছোট অংশের হাতে প্রতিরক্ষার দায়িত্ব। সেখানে যদি মহিলারা অংশ নেন, একটা ভারসাম্য থাকবে।
প্র: মহিলা কম্যান্ডোর চরিত্রে প্রস্তুতির জন্য নিশ্চয়ই বাড়তি খাটুনি হয়েছে?
উ: হাড়ভাঙা খাটুনি! কঠিন কঠিন সব ট্রেনিং নিতে হয়েছে। নিয়মিত। শেপে থাকার জন্য নুন-চিনিও বাদ দিয়েছিলাম ডায়েট থেকে। বাদ ছিল পছন্দের খাবার। আমাকে তো দেখে মনে হতে হবে যে, আমি একজন মহিলা কম্যান্ডো!
প্র: পারিশ্রমিকের ক্ষেত্রে বৈষম্য বা কর্মক্ষেত্রে হেনস্থা— এই বিষয়গুলো নিয়েও এখন মেয়েরা সরব।
উ: সেটা একটা খুবই ভাল দিক। সময়টা যে বদলাচ্ছে, এতে বোঝা যাচ্ছে। এখনকার মেয়েরা খুব স্পষ্ট করে বলে দিতে পারেন, কোনটা তাঁরা চান, কোনটা চান না। তবে এখনও অনেক কিছু বদলানো বাকি। অনেক কিছুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হওয়াও বাকি।