এগারো বছরের স্বপ্নপূরণ

রাজ চক্রবর্তী শুরু করতে চলেছেন তাঁর ড্রিম প্রজেক্ট ‘টং লিং’। ছবি নিয়ে আড্ডা দিলেন আনন্দ প্লাসের সঙ্গেরাজ চক্রবর্তী শুরু করতে চলেছেন তাঁর ড্রিম প্রজেক্ট ‘টং লিং’। ছবি নিয়ে আড্ডা দিলেন আনন্দ প্লাসের সঙ্গে

Advertisement

স্বর্ণাভ দেব

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৮ ০৬:৩০
Share:

রাজ চক্রবর্তী

টলিউডে শুরুর দিন থেকেই লীলা মজুমদারের উপন্যাস ‘টং লিং’ অবলম্বনে ছবি তৈরির চেষ্টা করেছেন। দীর্ঘ এগারো বছরের সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পেতে চলেছে পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর। ছবির নামও রাখছেন ‘টং লিং’। শুরু হয়ে গিয়েছে প্রি-প্রোডাকশনের কাজ। চলতি বছরের বড়দিনেই ছবিটি নিয়ে আসছেন রাজ।

Advertisement

ছবির শ্যুটিং শুরু হবে মার্চ থেকে। এপ্রিলের মধ্যেই শ্যুট শেষ হলেও ভিএফএক্স-এর কাজের জন্য অনেকটা সময় নিচ্ছেন তিনি। রাজ জানালেন, ‘‘অবশেষে ছবিটার কাজ শুরু করতে পেরে উত্তেজনা হচ্ছে। তবে এটাও ঠিক, কেরিয়ারের শুরুতে ‘টং লিং’ করলে হয়তো ঠিক হতো না। সেই সময়ে যে ভাবে ছবিটা তৈরি করতাম, এখন তার চেয়ে অনেক ভাল পরিকাঠামোগত সহায়তা পাব। তা ছাড়া আমি নিজেও এখন টেকনিক্যালি অনেকটাই স্ট্রং। তখন হয়তো টিভির মতো করে শ্যুট করতাম, এখন বড় ক্যানভাসে প্ল্যান করতে পারছি। এই ছবিতে তরুণ মজুমদার বা তপন সিংহের ঘরানার সঙ্গে হ্যারি পটারের জঁরের ফিউশন করব। ফ্যান্টাসির জগৎ তৈরি করতে ভিএফএক্সের কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই জন্যই অনেকটা সময় লাগবে।’’

মূল উপন্যাসকে বজায় রেখেই এই ছবির চিত্রনাট্য লেখা হয়েছে। তবে ফ্যান্টাসি জগতে নিজের মতো অদল-বদল ঘটাবেন রাজ। চাঁদ নামক এক শিশুকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয় ছবির গল্প। চাঁদের ভূমিকায় কে অভিনয় করবে, সেটা এখনও ঠিক হয়নি। অডিশন চলছে। তবে সিংহভাগ অভিনেতাই চূড়ান্ত। দেখা যাবে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষ, কাঞ্চন মল্লিক, পদ্মনাভ দাশগুপ্ত, অম্বরীশ ভট্টাচার্য, সুদীপ মুখোপাধ্যায়, সুপ্রিয় দত্ত, ঋদ্ধি সেন, বিভু মুখোপাধ্যায়কে। এ ছাড়া ভিএফএক্সে তৈরি করা হবে বিশে নামের চরিত্রটিকে। অভিনেতারা চূড়ান্ত হলেও কোন চরিত্রে কাকে দেখা যাবে, সেটা ঠিক করতে সময় নিচ্ছেন পরিচালক। ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক করছেন ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। দুটো গান থাকছে ছবিতে। ক্যামেরায় থাকছেন সৌমিক হালদার। চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন পদ্মনাভ দাশগুপ্ত। ছবির বাজেট দু’ থেকে আড়াই কোটি টাকা।

Advertisement

শাশ্বত-রুদ্রনীল-কাঞ্চন

ছবির মাধ্যমে বড়দের বার্তা দিতে চান পরিচালক। তিনি জানালেন, ‘‘আমরা সাধারণত ছোটদের তেমন একটা পাত্তা দিই না। কিন্তু যথার্থ গুরুত্ব পেলে একটি শিশুও ভাল কাজ করতে পারে। এটা মূলত স্বপ্নপূরণের গল্প। আমরা সকলেই ছোটবেলায় বেশ কিছু বিষয় নিয়ে ভাবতে ভাবতে হারিয়ে যেতাম কল্পনার জগতে। ছোটদের সেই ফ্যান্টাসির জগৎটাই ছবিতে আমি তুলে ধরতে চাই। মূলত ছোটদের ছবি হলেও বড়রাও এই ছবি দেখে আনন্দ পাবে।’’

ছবির নাম ‘টং লিং’ কেন? ‘‘পাঠকদের কাছে এই নামটা বেশ পরিচিত। তা ছাড়া বাড়ির পাশের এক সুড়ঙ্গ পেরিস্তানে চাঁদের বসে থাকার সময় সামনের ব্রিজের উপর দিয়ে যখন মালগাড়ি যায়, আওয়াজ আসে টং লিং... চাঁদের কাছে যার অর্থ ভয় নেই।’’

প্রসঙ্গত, রাজের শেষ কয়েকটি ছবি সেই ভাবে বাণিজ্যিক সাফল্য পায়নি। নিজের সিগনেচার স্টাইল, লাভস্টোরি ছেড়ে অন্য ধরনের ছবি তৈরির ঝুঁকি নিলেন কেন? ‘‘সাফল্য-ব্যর্থতা তো জীবনের অঙ্গ। পেশাদার পরিচালক হিসেবে সব সময়েই নিজেকে ছাপিয়ে যেতে চাই। বিশ্বাস করি, আমার সব ধরনের ছবি তৈরির ক্ষমতা রয়েছে। লাভস্টোরি, ছোটদের ছবির পাশাপাশি এর পরেই সিরাজউদ্দৌলার কাজ শুরু করব। সেটা ঐতিহাসিক ছবি। ইচ্ছে রয়েছে একটা সায়েন্স ফিকশন তৈরি করারও।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন