নায়িকাদের খুঁত দেখিয়ে ইন্ডাস্ট্রি বাঁচে

নতুন ছবির প্রচারে আনন্দ প্লাসের দফতরে কল্কি কেঁকলা, রিচা চড্ডা ও আরসলান গনিনতুন ছবির প্রচারে আনন্দ প্লাসের দফতরে কল্কি কেঁকলা, রিচা চড্ডা ও আরসলান গনি

Advertisement
শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৭ ০০:২০
Share:

রিচা-কল্কি। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী, স্বাতী চক্রবর্তী

তাঁদের ছবির তালিকা খুব দীর্ঘ নয়। তবে দীপিকা পাড়ুকোন, আলিয়া ভট্টের পাশাপাশি তাঁরাও নিজেদের দর্শক তৈরি করেছেন। বলিউডের এই প্রজন্মের দুই ‘বোল্ড’ অভিনেত্রী কল্কি কেঁকলা আর রিচা চড্ডা এ বার এক ছবিতে। তাঁরা ‘বোল্ড’, কারণ জনসমক্ষে নিজেদের মতামত প্রকাশে তাঁরা কুণ্ঠা বোধ করেন না।

Advertisement

নারীবাদী ভাবমূর্তি

প্র: কল্কি আর রিচার কাছে দর্শকের প্রত্যাশা, তাঁদের অভিনীত চরিত্র হবে বলিষ্ঠ। তাঁরাও কি এমনটাই ভাবেন?

Advertisement

কল্কি: জানি, সেলুলয়েডের চরিত্রের সঙ্গে দর্শক আমাদের ব্যক্তিত্বকে মিলিয়ে দেন। যখন ‘ইয়ে জওয়ানি...’ বা ‘জিন্দেগি না মিলেগি...’ করলাম, সকলে বলতে লাগল, এমন চরিত্রও করতে পারে কল্কি! তবে দর্শককে বুঝতে হবে, আমরা অভিনেত্রী। বহুরূপীর মতো বেশভূষা বদলে বিভিন্ন চরিত্র করব।

আরও পড়ুন: পঁচাত্তরেও লাইন শুরু বচ্চন থেকেই

রিচা: দর্শকের প্রত্যাশার কথা সব সময় মাথায় রাখলে আমি একটা ইমেজেই আটকে যাব। সুপারস্টারদের মতো এমন চরিত্র করতে হবে, যেটা দেখতে দর্শক স্বচ্ছন্দ। একজন বলত আমি গোমড়া, কারণ আমি হাসি না। আসল কারণ, আমার সামনের দাঁতগুলো বড় বড়। তাই হাসি না। (দাঁত বার করে দেখালেন)

কল্কি: (রিচার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজের দাঁত দেখালেন) আমি দর্শককে কনফিউজ করতে পছন্দ করি। চরিত্রটা বাস্তবধর্মী হতে হবে। খুব অবাস্তব কিছু করতে রাজি নই। আর আমাদের সকলের সীমাবদ্ধতা আছে। সেটা যতটা অতিক্রম করা যায়, তার চেষ্টা করি। তবে প্রত্যেকের জার্নি আলাদা। আমি তব্বুকে খুব পছন্দ করি। কিন্তু আমার কেরিয়ার ওঁর মতো হবে না।

বডিশেমিং, প্রতিবাদ...

প্র: আপনারা দু’জনেই বডিশেমিংয়ের শিকার হয়েছেন ও তা নিয়ে মুখও খুলেছেন!

রিচা: যখন কাজ করতে শুরু করলাম, আমাকে বলা হয়েছিল আমি খুব স্কিনি। তার পর বলা হল, আমি বেশ ভারী। এর পর বলা হল, কোমর সরু হবে তবে শরীরের অন্য জায়গায় মেদ থাকলেও চলবে। আবার বলা হল, বাস্টি হলে ফ্যাশনেবল জামা-কাপড় পরতে পারব না। তখন আমার মনে হল, আমাদের শরীর নিয়ে সমাজের কিছু না কিছু বক্তব্য থাকবেই। আমরা যদি নিখুঁত হই, তবে অনেক ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হয়ে যাবে।

কল্কি: (বেশ চেঁচিয়ে) একদমই তাই। নায়িকাদের খুঁত দেখিয়ে তো টাকা রোজগার হয়। ইন্ডাস্ট্রি বাঁচে। ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির তখন কী হাল হবে?

রিচা: বাস্তবটা জেনেই ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি আমাদের জন্য এমন পোশাক বানায়।

আরসলান: এই ইন্ডাস্ট্রিতে সকলে সহৃদয় হন না (সকলের হাসি)।

প্র: সামাজিক ব্যাধি হোক বা ইন্ডাস্ট্রির অন্যায়, সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে কল্কির আর একটা পরিচয়, তিনি প্রতিবাদী। এর ফলে কল্কির চারপাশের লোকজনের মধ্যে কি আদৌ কোনও পরিবর্তন এসেছে?

কল্কি: না, সে ভাবে কোনও পরিবর্তন আসেনি। তবে একটা অন্য ফ্যানবেস হয়েছে যাঁরা আমার থিয়েটার, মনোলগ ফলো করেন।

প্র: সংবাদমাধ্যমের প্রতি রাগ আছে এ নিয়ে?

কল্কি: না না, একদম নয়। আমি যখন কোনও বিষয় নিয়ে লিখি, সেটা আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে। আর একটা মানুষের হয়তো আর এক রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে। একটি ম্যাগাজিনে আমার ছবি ফোটোশপ করা হয়েছিল। এক বার বলা হয়েছিল, আমাকে আইলাইনার পরানো যায় না, কারণ আমার চোখে অনেক বলিরেখা আছে। তখন আমি বাড়ি গিয়ে ভাবি, আমাকে কি দেখতে খারাপ?

রোড ট্রিপে সওয়ারি

প্র: ‘জিয়া অউর জিয়া’ ছবিটির গল্প দুই নায়িকার রোড ট্রিপকে ঘিরে। ব্যক্তিগত জীবনে রোড ট্রিপ পছন্দ করেন?

কল্কি: আমি মোটরবাইক ট্রিপে খুব যাই। বাবার সঙ্গে গিয়েছি। নিউ ইয়ারে গার্লফ্রেন্ডদের সঙ্গে ইজরায়েল আর ডেড সি দেখতে যাচ্ছি।

রিচা: আমার হাইওয়ে ড্রাইভিং খুব ভাল লাগে। দিল্লি থেকে এত জায়গায় যাওয়া যায়! আমি রাজস্থান, আগরা, পঞ্জাবে রোড ট্রিপে গিয়েছি।

ছবির কথা

প্র: তার মানে শ্যুটিংয়ে নিশ্চয়ই খুব মজা হয়েছে?

আরসলান: আমার ডেবিউ ছবি, তাই খুব স্পেশ্যাল। তিন জনেই দারুণ মজা করেছি। সকলে মিলে বরফের মধ্যে ঝাঁপিয়েছিলাম!

কল্কি: প্রথম দিনের শ্যুটিংটাই মজার ছিল। সুইডেনে আমরা সনা বাথ নিয়েছিলাম। যেখানে তাপমাত্রা ছিল ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পুরো শরীর গরম হয়ে উঠেছিল। আর তার পরে বরফ জলে আমরা নেমেছিলাম। এক বার নয়। অনেক বার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন