ঋত্বিক চক্রবর্তী। ছবি: সুদীপ্ত চন্দ
প্র: আপনার তো এখন এক সেট থেকে আর এক সেটে ঘুরেই দিন কাটছে?
উ: (স্বভাবসিদ্ধ হাসি) অনেক ছবি করলাম... রঞ্জন ঘোষের ‘রংবেরঙের কড়ি’, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘নগর কীর্তন’, প্রদীপ্ত ভট্টাচার্যের ‘রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত’, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের ‘গুডনাইট সিটি’, শৌভিক গুহর ‘বুড়ো সাধু’, চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘তারিখ’। এখন খানিকটা ফাঁকা সময় পাওয়া গিয়েছে!
প্র: ‘রংবেরঙের কড়ি’-সহ বেশ কয়েকটি ছবিতেই আপনি ছাড়াও অনেকেই রয়েছেন। এ সব ক্ষেত্রে কী দেখে চরিত্রটা করেন?
উ: ‘রংবেরঙের কড়ি’ আসলে চারটে গল্প নিয়ে। আমাদের যে গল্পটা, সেটায় ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত আর ধী মজুমদারও আছে। গল্পের সঙ্গে ডিমনিটাইজেশনের যোগাযোগ আছে। ইন্টারেস্টিং স্ক্রিপ্ট আর চরিত্র হলে তো না করার কোনও কারণ নেই। রঞ্জনের কাজও আমার ভাল লাগে।
প্র: শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় আপনার জায়গায় অজিত করছেন অরিন্দম শীলের ব্যোমকেশে... এ সব নিয়ে ‘তারিখ’-এর সেটে আলোচনা করতেন?
উ: (হাসতে হাসতে) অজিত, বিজিত... কিছু নিয়েই আলোচনা হয়নি। অত গুরুত্ব নেই অজিতের।
প্র: ব্যোমকেশ তো একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি। যেখানে স্বাভাবিক নিয়মে এক জন অভিনেতা একটি চরিত্রেই কাজ করেন। প্রথম থেকেই সেটা জানলেও পরে সরে এলেন কেন?
উ: অজিত একেবারেই টানছে না আমাকে। মনে হচ্ছিল, একই চরিত্র করছি। আমি ভেবেছিলাম টানবে, তাই করতে গিয়েছিলাম।
আরও পড়ুন: ‘ঘুমিয়ে ঘুমিয়েও অভিনয় করতে পারি’
প্র: শুনেছি, অরিন্দম শীলের সঙ্গে আপনার ইগোর লড়াই থেকে আপনি অজিত করছেন না...
উ: আমার সঙ্গে অরিন্দমদার কথা হয়েছিল ফোনে। সেটা তৃতীয় কারও শোনার কথা নয়। পুরোটাই লোকে কল্পনা করছে। এ বার কল্পনাটায় জল ঢেলে দেওয়া বা কল্পনাটাকে টেনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া— কোনওটাই আমি করব না।
প্র: ‘বালিঘর’ করলেন না কেন?
উ: সে ভাবে দেখলে গোটা কেরিয়ারে আমি ৮৫টা ছবি করিনি। কেন হঠাৎ ‘বালিঘর’ নিয়ে কথা বলতে যাব!
প্র: ‘রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত’ শরৎচন্দ্রের ক্লাসিকের চেয়ে কতটা আলাদা?
উ: পুরোপুরি শরৎবাবুর রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্তের মতো নয়। কোথাও একটা ছবির সঙ্গে শ্রীকান্ত এবং রাজলক্ষ্মীর জীবনের মিল আছে। আবার অমিলও আছে। পাশাপাশি এটা কনটেম্পোরারি সময়ের গল্প।
প্র: কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় একটা কথা বলেছেন, ‘ঋত্বিক চক্রবর্তীকে গাছের ভূমিকায় অভিনয় করতে দিলে ও সেটাও অসামান্য করে দেবে’...
উ: (খুব হাসি) কৌশিকদা ভালবাসেন আমাকে, তাই এ সব বলেছেন! আমরা সম্প্রতি ‘নগর কীর্তন’-এর কাজ করলাম একসঙ্গে। ছবিটা এমন একটা বিষয় নিয়ে, যেটার ব্যাপারে আমরা এমনিই কথা বলি না। কিন্তু গল্পটা সাধারণ দুটো মানুষকে নিয়েই। এবং খুবই অন্য ভাবে বলা।
প্র: ঋদ্ধি সেন কি আপনার উত্তরসূরি? চেহারায় বিশেষত্ব না থাকলেও দু’জনেরই অভিনয় মারকাটারি!
উ: ঋদ্ধি ওর বয়সের তুলনায় এগিয়ে থাকা অভিনেতা। সুন্দর চেহারার যে ধারণাটা রয়েছে, সেটা নিয়ে অভিনেতারা বোধহয় খুব একটা ভাবেন না। মানে, চেহারা নিয়ে হয়তো ভাবেন। তবে সেটা সুন্দর কি না, তা নিয়ে ভাবেন না। আপনাকে যদি একটা বিমল হতে হয়, তা হলে বিমলই হতে হবে। আপনার নাকটা কতটা টিকলো, বা সেটা আর্য নাক কি না— না ভাবলেও চলবে! ঋদ্ধিও এ সব নিয়ে ভাবে না। ও একজন ফিনিশড অভিনেতা। ওর বয়সে আমার মধ্যে ওই ফিনিশিংটা ছিল না।
প্র: আপনার তো বরং বদনাম আছে, সহ-অভিনেতাদের আপনি ‘ফিনিশ’ করে দেন বলে!
উ: (জোর হাসি) কী যে বলেন!