শ্রেয়ান ভট্টাচার্য
রিয়্যালিটি শোয়ের ইতিহাসে সম্ভবত এই প্রথম বার! এই বছরের ‘সারেগামাপা লিটল চ্যাম্পস’-এর সেরার শিরোপা জিতল এক জন নয় বরং দু’জন শিশুশিল্পী। এক জন মেদিনীপুরের শ্রেয়ান ভট্টাচার্য। অন্য জন মহারাষ্ট্রের অঞ্জলি গায়কোয়াড়। বারো বছরের শ্রেয়ান ডি এ ভি পাবলিক স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। আনন্দ প্লাসের সঙ্গে শ্রেয়ান শেয়ার করল তার গানের সফর, স্বপ্ন ও ভাল লাগার কিছু মুহূর্ত।
প্র: ট্রফি জয়ের ঠিক পরের মুহূর্তে কেমন লাগছিল তোমার?
উ: এই সফরটা ভীষণ ইমোশনাল ছিল। নিজের নামটা শোনামাত্রই এত খুশি হয়েছিলাম, কী বলব! এত দিনের পরিশ্রমের ফল পেলাম। একটু নার্ভাসও লাগছিল। মনে পড়ছিল, প্রথম দিন যখন এখানে এসেছিলাম। এখন নিজেকে অনেক পরিণত শিল্পী হিসেবে দেখি।
আরও পড়ুন: 'বিয়ের পর অনেক সৎ হয়ে গিয়েছি'
প্র: কত বছর বয়স থেকে তুমি গান শিখছ?
উ: আমার বাবা নির্মাল্য ভট্টাচার্য সংগীত শিল্পী। উনি এক সময় স্টেজ শো-ও করতেন। আমার যখন চার বছর বয়স, তখন প্রথম বার বাবার সঙ্গে স্টেজে উঠেছিলাম। তার পর পাঁচ বছর বয়স থেকে আমার সংগীতের তালিম শুরু হয়। আমার গুরু জয়ন্ত সরকার। ওঁর কাছে আমি ধ্রুপদী সংগীত এবং আধুনিক বাংলা গান শিখছি।
প্র: স্কুল, খেলাধুলো, গান, রিয়্যালিটি শো, সব কিছু একসঙ্গে সামলাও কী করে?
উ: স্কুলে পড়াশোনা খুব মন দিয়ে করি। বাড়িতে এসে খাওয়াদাওয়া করে একটু বিশ্রাম নিই। তার পর বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে খেলা। বাড়ি ফিরে সন্ধে সাতটা থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত আমার রেওয়াজের সময় বাঁধা। এতে কিন্তু কোনও ফাঁকি নেই।
প্র: কোন বিষয় পড়তে তোমার বেশি ভাল লাগে?
উ: বিজ্ঞানের বিষয়গুলো ও ইংরেজি আমার খুব প্রিয়। অঙ্ক করতে একদম ভাল লাগে না। যদিও পরীক্ষায় একশোয় আশি-নব্বই পাই (হেসে)।
প্র: ছোটবেলা থেকেই রিয়্যালিটি শো করছ। এর জন্য বাড়তি চাপ অনুভব করো?
উ: একদমই না। খুব ছোটবেলা থেকেই স্টেজে গান গাইছি। লাইভ দর্শকের সামনে পারফর্ম করার আলাদা চার্ম আছে। তাই আমার ‘স্টেজ ফিয়ার’ নেই। ‘লিটল চ্যাম্পস’-এর আগে কলকাতায় বাংলা ‘সারেগামাপা’ এবং ‘গ্রেট মিউজিক গুরুকুল’-এ অংশগ্রহণ করেছি। কোনও দিনই আমি বাড়তি চাপ নিইনি। খুব খোলামনে পারফর্ম করি। মা-বাবাকে সব সময়ে পাশে পেয়েছি। ওঁদের স্বপ্ন আমি পূরণ করতে চাই।
প্র: গায়ক জাভেদ আলিকে তোমার মেন্টর ভাবার কারণ?
উ: জাভেদ আলি একজন প্রতিভাবান শিল্পী। শোয়ের প্রথম দিন থেকেই উনি আমাকে গাইড করেছেন। আমার ভুল-ত্রুটি সব শুধরে দিয়েছেন। ‘গ্রেট মিউজিক গুরুকুল’-এ উনি বিচারক ছিলেন। অনেক দিন ধরে আমার গান উনি শুনছেন। তাই আমার ভাল-মন্দ সবটাই উনি জানেন।
প্র: কোন সংগীত নির্দেশকের সঙ্গে কাজ করতে চাও ভবিষ্যতে?
উ: আমি অনুপম রায়ের পরিচালনায় ‘ধূমকেতু’ ছবিতে গান গেয়েছি। ওঁর সঙ্গে আরও কাজ করব বলে আশা করছি। এ ছাড়া প্রিতম চক্রবর্তীর সঙ্গে কাজ করার খুব ইচ্ছে আছে।
প্র: অবসর সময়ে কী করতে ভালবাস?
উ: ক্রিকেট খেলতে ভীষণ ভাল লাগে। আমার একটা মজার শখ আছে। সেটা হল বিভিন্ন মডেলের গাড়ি জমানো। আমার ফেভারিট হল, রোলস রয়েস আর আলফা রোমিও মডেলস।
প্র: ভবিষ্যতের পরিকল্পনা কী?
উ: খুব ভাল ভাবে পড়াশোনা শেষ করতে চাই। তার পর গান। কলকাতা-মুম্বই দুই ইন্ডাস্ট্রিতেই প্লেব্যাক করতে চাই। অনেক বাংলো কিনতে চাই। আর তার সঙ্গে একটা রোলস রয়েস গাড়ি (হাসি)।