জায়েদ খান।
প্র: টেলিভিশনে আসার সিদ্ধান্তটা কী ভাবে নিলেন?
উ: প্রযোজক সিদ্ধার্থ পি মলহোত্রর সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা অনেক দিন ছিল। উনি যখন আমাকে ‘হাসিল’-এর গল্প শোনালেন, আর বললেন কাজটা কিন্তু টেলিভিশনের। তখনই জানতাম রিস্ক ফ্যাক্টরটা আছে। কিন্তু জানতাম, খাতায়-কলমে যা আছে তা যদি স্ক্রিনে রূপান্তরিত হয়, তা হলে রিস্ক নেওয়াটা সার্থক। কারণ টিভিতে এত ব্যয়বহুল শো খুব কমই তৈরি হয়।
প্র: আপনি কি নিয়মিত টেলিভিশন দেখেন?
উ: (হেসে) না, টেলিভিশন আমি দেখি না। তবে ‘হাসিল’ সাইন করার পর আমি কয়েকটা শো দেখতে শুরু করেছি। কিন্তু যে শোয়ে আমি কাজ করছি ,তার থেকে এগুলো অনেক আলাদা। অনেকেই হয়তো জানেন না, আমার কিন্তু অভিনেতা হিসেবে হাতেখড়ি হয়েছিল টেলিভিশনেই। বাবার (সঞ্জয় খান) শো ‘টিপু সুলতান’-এ। সেই সময়টা অনেক আলাদা ছিল। ভীষণ নার্ভাস ছিলাম। কারণ ডায়লগ ছিল উর্দুতে। কিন্তু মেকআপ আর কস্টিউম পরে ক্যামেরার সামনে আসার পরে অনেকটা সহজ হয়ে গিয়েছিলাম। শট ওকে হওয়ার পর বুঝেছিলাম যে, আমার মধ্যে অভিনেতা হওয়ার সামর্থ্য আছে।
প্র: আপনি নিজে কী রকম শো বানাবেন?
উ: আমার কোম্পানি ডিজিটাল প্রোডাকশন নিয়ে কাজ করবে। আমার মতে ডিজিটাল স্পেসে সার্টিফিকেশন নেই, তাই ক্রিয়েটিভিটির দিক থেকে ডিজিটাল স্পেস খুব ভাল। তবু এখন অনেক ভাল ভাল ছবি বানানো হচ্ছে। আমাদের দেশের অভিনেতারা হলিউডে গিয়ে কাজ করছেন। ওখানকার অভিনেতারা এখানে কাজ করছেন। যে পরিবর্তন হচ্ছে, সেটা খুব পজিটিভ।
প্র: আপনাদের পরিবারের অনেকেই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে জড়িত। আপনার বাবা সঞ্জয় খান, কাকা ফিরোজ খান... এঁদের দ্বারা আপনি কতটা প্রভাবিত?
উ: আমার কাকা ফিরোজ খানের দ্বারা আমি খুবই প্রভাবিত। ওঁর ব্যক্তিত্বতে আমি খুব আকৃষ্ট হতাম। ওঁর কাউবয় টুপি পরা এবং যে ভাবে ওয়েস্টার্ন স্টাইলকে হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এনেছিলেন, সেটা অভাবনীয়। আমি যখন আমার বিয়ের কার্ড নিয়ে গিয়েছি, উনি বলেছিলেন, ‘‘পাগলা হয়ে গিয়েছিস নাকি?’’ আমি বলেছিলাম, না, প্রেমে পড়েছি। উত্তরে উনি বলেছিলেন, ‘‘মানুষ হয় খুশি হয়, নয় বিবাহিত। দুটো একসঙ্গে হওয়া মুশকিল!’’ (হেসে)
প্র: নিজের কেরিয়ারকে কী ভাবে দেখেন?
উ: কিছুটা সফলতা আর অনেকটা বিফলতা। আমরা নিজেদের জীবনকে খুব সিরিয়াসলি নিয়ে থাকি। দর্দ না পেলে কেউ মর্দ হয় না। তবে মনের মধ্যে কখনও বিষ পুষে রাখতে নেই।
প্র: আপনার কেরিয়ারে কোনও কিছুর খামতি ছিল?
উ: অল্প বয়সে আমার জীবনে কোনও শৃঙ্খলা ছিল না। এখন বুঝতে পারলেও অল্প বয়সে সেটা উপলব্ধি করিনি। এখন বুঝি। তাই উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাত্রা পাল্টে ফেলেছি। সবার আগে সেটে আসি, সবার শেষে সেট ছাড়ি। ফোনে কম কথা বলি, নিজেকে সেরা ভাবি না, এখনও নিজেকে একজন স্কুলের ছাত্র ভাবি।
প্র: বাবা হওয়ার পর জীবন কতটা পাল্টে গেল?
উ: আমার জীবনে সবথেকে বিশেষ সময়টা ছিল, যখন আমার বাচ্চা আমাকে ‘বাবা’ বলে ডাকতে শুরু করে। সেই ডাকটা একটা বিরাট বড় পরিবর্তন এনে দেয়। মানুষ অনেক দায়িত্বশীল হয়ে যায়।
প্র: আপনি কী ধরনের বাবা?
উ: আমি তো এখনও বাবা হইনি (হেসে)। আমার দুই ছেলের কাছে আমি বাবা কম, বন্ধু বেশি। যে দিন আমাদের জীবনে মেয়ে আসবে, সে দিন আমি প্রকৃত অর্থে বাবা হব।
প্র: জীবন থেকে আর কী পাওয়ার আছে?
উ: লোকজনের ভালবাসা আর ভরসা। ওটা এখন আর আমার কাছে নেই। ওটা আবার ফেরত পেতে চাই।