হ্যালোউইনের হল্লা

পাল্লা দিয়ে পশ্চিমী ভূত চতুর্দশী পালন করছে বলিউড থেকে টলিউডপাল্লা দিয়ে পশ্চিমী ভূত চতুর্দশী পালন করছে বলিউড থেকে টলিউড

Advertisement
শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৭ ০৮:০০
Share:

সুহানা ও গৌরী

কথায় আছে না, ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ! তা সেই ভূতেদের জন্যও বরাদ্দ থাকে বিশেষ দিন। সে দিন ঘটা করে মনে করা হয় ভূত বাবাজীবনদের। এখানে যদি ভূত চতুর্দশী পালন হয় তো পাশ্চাত্যে তা হল হ্যালোউইন। তবে এ কথা বলতেই হবে যে, হ্যালোউইন শুধু পশ্চিমেই আটকে নেই। বিশ্বায়নের হাত ধরে পশ্চিমী ভূত-স্মরণ প্রথা এ দেশেও সমান ভাবে বিরাজমান।

Advertisement

কী হয় হ্যালোউইনে? নিজেরই বাড়িতে বা এলাকার কমিউনিটি হলে বিশেষ পার্টি দেওয়া হয়। অনেক পার্টিতে থিম থাকে। তা হতে পারে সুপারহিরো অথবা ‘কনজুরিং’ জাতীয় ভূতের সিনেমা। কুমড়োর খোল শুকিয়ে চোখ-মুখ কেটে ভিতরে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বাতি। এই দিনটায় সমস্ত বাচ্চারা কিম্ভূত সাজগোজ করে। কেউ রক্তখেকোর সাজে তো কেউ জম্বি-র। বাচ্চারা দল বেঁধে এলাকার প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে ঝুলি পেতে ক্যান্ডি, মিষ্টি, স্ন্যাক্স কিংবা ছোটখাটো গিফ্‌ট চায়। তা না দিলে কিন্তু আপনাকে পড়তে হতে পারে ‘ট্রিক অর ট্রিট’-এর গেরোয়। অর্থাৎ গিফট না পেলে বাচ্চারা মজার ছলেই এটা-ওটা নষ্ট করে।

বলিউডেও হ্যালোউইনের কদর বেড়েছে। সম্প্রতি শাহরুখের গিন্নি গৌরী খান দিয়েছিলেন হ্যালোউইনের পার্টি। যদিও সেখানে কেউ অদ্ভুত সেজে আসেননি। কিন্তু নিমন্ত্রিতের তালিকা ছিল বেশ বড়। মালাইকা, আরবাজ খান, সুজান খান, সুশান্ত সিংহ রাজপুত— বাদ পড়েননি কেউই। তবে গৌরীর পার্টিতে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছেন শাহরুখ-গৌরীর মেয়ে সুহানা। এর আগে হ্যালোউইনে মজেছেন সোনম কপূর, বরুণ ধবন, আলিয়া ভট্ট, প্রীতি জিন্টা, প্রিয়ঙ্কা চোপড়া থেকে শুরু করে অনেকেই। আর অর্জুন রামপালের হ্যালোউইন স্পেশ্যাল ‘দ্য জোকার’ লুক রীতিমতো নজরও কেড়েছিল।

Advertisement

কলকাতাও পিছিয়ে নেই হ্যালোউইন পার্টিতে। বিভিন্ন হোটেল, রেস্তোরাঁয় এই পার্টি দেওয়া হয়। টাকা দিয়ে টিকিট কেটে সেখানে সাধারণ মানুষও ভিড় জমান। ঘরোয়া পার্টিও কম হয় না। কলকাতার সেলেব-মহলও মজে হ্যালোউইনে।

রিয়া ও রাইমা

কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন নিয়মিত হ্যালোউইন পার্টি দিতেন একটা সময়। কেমন ভাবে করতেন পার্টির প্ল্যান? ‘‘হ্যালোউইন বলতে কিন্তু সোজা ভাষায় আমাদের বাঙালিদের ভূত চতুর্দশী। এই পার্টিতে সব কিছু উল্টোপাল্টা হতে হবে। যে যেমন খুশি রাক্ষস, খোক্ষস সেজে চলে আসত। অদ্ভুত কিছু করাটাই ছিল মজার।’’

শহরের এক হোটেল কর্তৃপক্ষের কথায়, ‘‘হ্যালোউইন পার্টির ক্রেজ দিন দিন বা়ড়ছে। টিকিট কেটে প্রচুর মানুষ আসেন। তবে কমবয়সিরাই বেশি। সেরা পোশাক বা স্টাইলের জন্য প্রাইজও থাকে।’’ নতুন কিছু করার মধ্যেই মজা। সাজ-পোশাক অদ্ভুত হলেও তার মধ্যে শিল্পের ছোঁয়া থাকতে পারে। ইউটিউবে হ্যালোউইন মেকআপ ভিডিয়ো থাকে। সে সব দেখেও সাজগোজ করতে পারেন, জানান কনীনিকা।

শুধু পোশাকই নয়, হ্যালোউইন পার্টির খাবারেও কিন্তু বৈচিত্র থাকে। ‘‘হয়তো খাবারটা সাধারণ কিন্তু কিছুটা ভুতুড়ে ভাবে ডেকরেট করা হল। ড্রিংকের হয়তো একটা মজার নামকরণ করা হল। এই সব করেই অভিনবত্ব আনতাম,’’ বলছিলেন কনীনিকা। যেমন কোনও পার্টিতে সাধারণ প্যানকেকের উপর ছড়িয়ে থাকে চকলেটের স্পুকি পতঙ্গ। আবার কাচের গ্লাস থেকে গড়িয়ে পড়া রক্ত কিন্তু আসলে ওয়াইন।

তাই এই দিন বাংলার ভূত চতুর্দশীর চোদ্দো শাক খাওয়া আর মন্দিরে মন্দিরে গিয়ে রঙিন বাতি দেওয়া নয়। হ্যালোউইনে অনেক বেশি করে জড়িয়ে থাকে ছেলেমানুষির আনন্দ। লোককে মজার ফাঁকে ভয় দেখিয়ে, অদ্ভুত সাজপোশাকে কিম্ভূত খাবার খেয়ে, সেই আনন্দে মাতছে বলিউড থেকে টলিউডও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন