শতাব্দী রায়ের ক্ষতি করতে চেয়েছিল ইন্ডাস্ট্রি? ছবি: ফেসবুক।
বিনোদন দুনিয়ার অন্দরে রাজনীতি রয়েছে। এমন অভিযোগ বহু অভিনেতা, পরিচালকের। যিনি সে সব সামলে, অঙ্ক কষে চলতে পারেন, তিনি জিতে গেলেন। আর যিনি পারেন না? তাঁর অস্তিত্ব সংকটে। শতাব্দী রায়ও এই অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন!
ঠিক কী হয়েছিল শতাব্দীর সঙ্গে? সে কথা সম্প্রতি সাংসদ-রাজনীতিবিদ নিজেই জানিয়েছেন। তখন সাল ১৯৮৭। “আমি ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন। ‘প্রতিভা’ বলে একটি ছবি করছি। আমার সহ-অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক, সুমিত্রা মুখোপাধ্যায়, অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়ে তরুণ মজুমদার ‘পথভোলা’ করবেন। আমায় তার জন্য ডেকেছেন।” অভিনেত্রী দারুণ খুশি। ‘প্রতিভা’ ছবির পরিচালকের কাছে অনুরোধ জানালেন, যদি তারিখ ‘অ্যাডজাস্ট’ করা যায় তা হলে দুটো ছবিই তিনি একসঙ্গে করতে পারেন।
শতাব্দী ভেবেছিলেন, তরুণ মজুমদার ডেকেছেন শুনে প্রথম ছবির পরিচালক হয়তো রাজি হয়ে যাবেন। সে সব তো হয়ইনি। উল্টে তিনি সটান বলে দিলেন, “আমাদের আউটডোর আছে শিলঙে। আমরা ছাড়়তে পারব না। তুমি তনুদার ছবি ছেড়ে দাও!” অভিনেত্রী নতুন। কিছু না বুঝে প্রথম পরিচালকের কথাই শুনেছিলেন। তরুণ মজুমদারের ডাকে সাড়া দেননি।
নির্দিষ্ট তারিখে সত্যিই ‘প্রতিভা’ ছবির দল শিলঙে শুটিং করতে গেল। শতাব্দীকে ছাড়াই! এ বার বিস্মিত হওয়ার পালা তাঁর। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, “আমি আউটডোর শুটিংয়ে যাব না?” সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে জানানো হয়, তাঁর কলকাতায় শুটিং হয়ে গিয়েছে। শিলঙে তাঁর শুটিং নেই!
অভিনেত্রীর আফসোস, “সে দিন বাড়িতে বসেই দিন কেটেছিল! ‘প্রতিভা’ ছবির শুটিংয়ে থাকলাম না, তনুদার ছবিও করতে পারলাম না।”
সে দিন তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, অর্থকষ্ট, ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা বা ভাল চরিত্র পাওয়াই শুধু ‘স্ট্রাগল’ নয়। অভিনেতার পেশাজীবনের উন্নতি আটক দেওয়াও এক ধরনের ‘স্ট্রাগল’, যা তাঁকে সহ্য করতে হয়েছে। তিনি যাতে এগিয়ে যেতে না পারেন তার জন্য পরিচালক তাঁকে ইচ্ছা করে আটকে দিয়েছিলেন! অভিনেত্রী সেটা উপলব্ধি করার পর মনে মনে ভেঙে পড়েছিলেন। ভেবেছিলেন, আর হয়তো তরুণ মজুমদার তাঁকে ডাকবেন না। পরে সেই ভুল অবশ্য ভেঙে যায়। তিনি পরিচালকের ‘পরশমণি’-সহ একাধিক ছবিতে অভিনয় করেন। সে সব ছবি হিট।