ফাইল চিত্র।
এত দিন পাঠক ও দর্শক এক পক্ষেরই বক্তব্য শুনছিলেন। শুনতে শুনতে অভ্যস্ত হয়েও গিয়েছিলেন। সেই বিতর্কে নতুন প্রাণ ঢাললেন হৃতিক রোশন। অভিযোগের তির অবশ্যই কঙ্গনা রানাওয়াতের দিকে। তবে টুইটারে দেওয়া হৃতিকের দীর্ঘ পোস্টটি বেশ মার্জিত ও সংযত ভাষায় লেখা। সংশ্লিষ্ট টেলিভিশন শোয়ে কঙ্গনা যে ভাবে সরাসরি হৃতিককে আক্রমণ করেছিলেন, হৃতিক কিন্তু সেই পথে হাঁটেননি। তবে নিজের অবস্থান আরও এক বার স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
হৃতিকের দীর্ঘ পোস্টের প্রথম বক্তব্য, গঠনমূলক কাজের বাইরে তাঁর দিকে যতই আঙুল তোলা হোক, তিনি সচেতনভাবে সেই সব বিষয় থেকে দূরত্ব রাখেন। কঙ্গনার বিষয়টিও তার ব্যতিক্রম নয়। উপরন্তু তাঁর অভিযোগ, এই বিষয়টিতে তাঁকে জোর করে টেনে আনা হয়েছে, যার উপর তাঁর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।
আরও একটি বিষয় হৃতিক খোলসা করেছেন বিবৃতিতে। যদিও তা নতুন কিছু নয়। ওই বিবৃতি অনুযায়ী, কাজের বাইরে কঙ্গনার সঙ্গে তাঁর একান্তে কখনও দেখা হয়নি। এই প্রসঙ্গে তিনি কঙ্গনার বাগদানের অভিযোগটিকেও একহাত নেন। কঙ্গনার অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে প্যারিসে হৃতিকের সঙ্গে তাঁর বাগদান হয়। কিন্তু অভিনেতার পাল্টা চ্যালেঞ্জ, এমন বাগদানের কোনও সাক্ষী, পাপারাৎজির ছবি এমনকী নিদেন পক্ষে একটি সেলফি পর্যন্ত নেই। নিজের সমর্থনে হৃতিক আরও বলেন, ওই সময়ের পাসপোর্ট রেকর্ড দেখলেই জানা যাবে যে, তিনি ভারতের বাইরে তখন ছিলেন না।
হৃতিকের দাবি, তাঁর ল্যাপটপ ও ফোন এখনও পর্যন্ত সাইবার সেলের কাছেই জমা রয়েছে। যদিও ‘অপর পক্ষ’ (কঙ্গনা) তেমন কোনও কাজ করেননি। যে তিন হাজার ই-মেল পাঠানো নিয়ে এত শোরগোল, তার সত্যাসত্যও কিছু দিনের মধ্যে প্রমাণ হয়ে যাবে বলে দাবি করেন তিনি।
হৃতিক লিখেছেন, এই বিবৃতিতে তাঁর ‘ভালমানুষির’ সাফাই গাইছেন না। পাশাপাশি একটি মোক্ষম কথাও বলে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার পরিবারেও মেয়েদের সব সময় নিরাপদে রাখার কথা শেখানো হয়েছে। আমিও সেই আদর্শে বিশ্বাসী। তাই মেয়েদের কখনও পাল্টা প্রশ্ন করার তাগিদ আমরা অনুভব করি না। সমাজও এই নিয়ম অনুসরণ করে। একটি মেয়ে নির্যাতিতা আর একটি পুরুষ তার উপরে নির্যাতন করে। কিন্তু এর উল্টোটাও যে সত্যি হতে পারে, তা আমাদের মনে হয় না। তবে মানুষ যদি এটাকে মেনে নেন, তা হলে সেটাই থাক।’’ আসলে হৃতিক যে কাকে কী বলতে চেয়েছেন, তা জলের মতোই পরিষ্কার।
কঙ্গনা এর প্রত্যুত্তরে কিছু বলবেন না, সেটাই অস্বাভাবিক। তাঁর আইনজীবী রিজওয়ান সিদ্দিকি মারফত তিনি সাত-আটটি প্রশ্নের জবাব তলব করেছেন হৃতিকের কাছে। যার মধ্যে বেশির ভাগ প্রশ্ন ই-মেল, এফআইআর নিয়ে হৃতিকের গড়িমসি ইত্যাদি প্রসঙ্গে।
টুইট করেছেন কঙ্গনার বোন রঙ্গোলিও। কঙ্গনা-হৃতিকের ভাইরাল হওয়া একটি ছবিকে ‘ফোটোশপড’ বলে কটাক্ষ করেছেন হৃতিক। সেই সূত্র ধরেই রঙ্গোলি প্রশ্ন তুলেছেন হৃতিকের বিরুদ্ধে। কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন হৃতিকের প্রাক্তন স্ত্রী সুজানকেও।
প্রশ্ন আর পাল্টা প্রশ্ন চলতেই থাকবে, যতক্ষণ না এই মামলার তদন্ত সম্পূর্ণ হচ্ছে। আর সত্যিও তত দিন মিথ্যের সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে থাকবে!