‘মাঝে মাঝেই নিজেকে ‘সাইকো উওম্যান’ মনে হয়’ কেন বললেন তাপসী?

তবে প্রতিযোগিতা যে থাকবে, সেটা জেনেই ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলেন তাপসী পান্নু   পর পর সিরিয়াস ছবি করতে করতে ইদানীং তাঁর মাঝে মাঝেই নিজেকে ‘সাইকো উওম্যান’ মনে হয়। সেই জন্য কয়েক সপ্তাহের বিরতি নিয়ে ঘুরতে চলে যান তাপসী।

Advertisement

অন্তরা মজুমদার

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৮ ০০:০০
Share:

তিনি পর পর এমন সব ছবি করছেন, যেখানে ভাবনার খোরাক রয়েছেই। সঙ্গে রয়েছে সাফল্যের রসদও। এ বার অনুরাগ কাশ্যপের প্রথম রোম্যান্টিক ছবিতে নায়িকা হয়েছেন তাপসী পান্নু। ট্রেলারেই বোঝা গিয়েছে, বেশ ডাকাবুকো আর হুল্লোড়ে মেয়ে রুমি, তাপসীর চরিত্রের নাম। তিনি নিজেও কি এ রকম? তাপসীর উত্তর, ‘‘অনুরাগ কাশ্যপের আমাকে নেওয়ার কারণই হল, আমি রুমির মতো। ওঁর মনে হয়েছে, আমি ১০০ শতাংশ রুমি। আমার মনে হয়, ৯০ শতাংশ। রুমি হল প্রথাগত ভাবে কনফিউজ়ড এক জন মানুষ। আমি খুব সর্টেড। এটাই যা তফাত।’’ ভিকি কৌশল এবং অভিষেক বচ্চনের মধ্যে কার সঙ্গে বেশি ‘বন্ডিং’ হয়েছে, এই প্রশ্নের উত্তরে তাপসী জানালেন, দু’জনেই তাঁর খুব ভাল বন্ধু এখন। ‘‘ওদের দু’জনের সঙ্গেই তো স্ক্রিন টাইম এক। ফলে সমান সময় কাটিয়েছি। বন্ডিংও সমান হয়েছে,’’ হাসতে হাসতে বললেন তিনি।

Advertisement

পর পর সিরিয়াস ছবি করতে করতে ইদানীং তাঁর মাঝে মাঝেই নিজেকে ‘সাইকো উওম্যান’ মনে হয়। সেই জন্য কয়েক সপ্তাহের বিরতি নিয়ে ঘুরতে চলে যান তাপসী। ‘‘এটা ঠিক যে, টানা ইনটেন্স বিষয়ের উপর কাজ করতে থাকলে ক্লান্তি আসে। কিন্তু সেই কারণেই আমি খুব বেছে ছবি করি। এমন ছবিতেই সই করি যে, অন্তত শুটিংটা উপভোগ করতে পারব। আর চেষ্টা করি, শুটিংয়ের পর ব্রেনের সেই অংশের সুইচটা অফ করে দিতে, যেখানে চরিত্রের অবসাদগুলো জমা হয়,’’ ব্যাখ্যা তাপসীর। আর যে সব দিনে শুটিং করেন না? ‘‘৮-১০ ঘণ্টা ঘুমিয়ে নিই। বাড়িতেই থাকি, আলসেমি করে কাটাই। তবে এক বার স্কোয়াশ খেলতে যাই-ই। ওটা আমার রেগুলার স্পোর্ট বলে। সিনেমা দেখি বা বোনের (শগুন) সঙ্গে ডিনারে যাই,’’ বললেন অভিনেত্রী।

এখন ইন্ডাস্ট্রিতে এমন একটা অবস্থা, যেখানে স্টারকিডদেরই আধিক্য। আর দিন দিন সেই সংখ্যাটা বাড়ছে। তাপসী কি চাপ অনুভব করেন? ‘‘প্রতিযোগিতা যে থাকবে, সেটা জেনেই এই ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছি। কারও কারও জন্য রাস্তাটা ছোট হয়। কারও জন্য বড্ড দীর্ঘ। তাই আমার কোনও অভিযোগ নেই। কিন্তু এখনও যখন কোনও প্রজেক্টের জন্য ডেট ব্লক হয়ে যায় আর তার পর ছবিটা আমার কাছ থেকে কোনও স্টারকিডের কাছে চলে যায়, তখন খারাপ লাগে,’’ স্পষ্ট বললেন তিনি। পরপর সফল ছবিতে কাজ করার পরেও এটা ঘটে? ‘‘হ্যাঁ ঘটে,’’ জোর দিয়ে বললেন তাপসী।

Advertisement

ইন্ডাস্ট্রিতে পারিশ্রমিকের ক্ষেত্রে অভিনেত্রীদের সঙ্গে বৈষম্যের মনোভাব নিয়ে আগেও কথা বলেছেন তাপসী। বিষয়টা নিয়ে এখন অনেক বাস্তববাদী তিনি। বললেন, ‘‘বৈষম্য দূর হওয়ার আগে আমাদেরই অনেক দূর যেতে হবে। এমন যদি হয়, প্রযোজকরা আমার কাঁধে একটা গোটা ছবির দায়িত্ব দিলেন, সেই ছবি বক্স অফিসে তুমুল সাফল্যও পেল, তখন হয়তো সুপারস্টার অভিনেতাদের সমান পারিশ্রমিক দাবি করতে পারি। কারণ একটা কথা পরিষ্কার ভাবে বুঝতে হবে যে, এটা বিজ়নেস। এখানে প্রযোজকের ক্ষতি হলে সেটা আমারও ক্ষতি। ফলে একক অভিনেত্রীর ছবি যে দিন একক অভিনেতার সমান ওপেনিং দিতে পারবে, সে দিন এই বৈষম্যের আর জায়গাই থাকবে না। একই সঙ্গে প্রয়োজন অভিনেত্রীদের জন্য সে রকম জোরদার কনটেন্টও।’’

সিরিয়াস চরিত্রে পর পর তাঁকে দেখা গেলেও প্রতিটা চরিত্রই পরস্পরের চেয়ে আলাদা। তাঁর কথায়, ‘‘এটা খুব সচেতন ভাবেই আমি করে থাকি। সুজয় ঘোষের ‘বদলা’তেও আমাকে এমন চরিত্রে দর্শক দেখবেন, যেখানে আগে দেখেননি। কারণ আমি এটা বুঝি যে, আমার কাছ থেকে একটা প্রত্যাশা রয়েছেই দর্শকের। ইন্ডাস্ট্রিরও। আর এই প্রত্যাশাটা থাকা প্রয়োজনও, না হলে বুঝতে হবে দর্শকের আমার অস্তিত্ব সম্পর্কেই বিশেষ উৎসাহ নেই।’’ কিন্তু বাড়তি চাপ? ‘‘তার জন্য মাঝে মাঝে স্ট্রেস হয়। কিন্তু এই প্রত্যাশাই আমাকে ব্যতিক্রমী কাজ করার অনুপ্রেরণা দেয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন