Bombay high Court

‘এই দেশ হেনস্থাকারীদের জন্যই!’ যৌন হেনস্থা নিয়ে আদালতের নয়া রায়ে ক্ষুব্ধ বলি-পাড়া

২০১৬ সালে দায়ের হওয়া এক মামলার প্রেক্ষিতে কোর্ট রায় দিয়েছে যে হেতু আক্রান্ত শিশুটির জামাকাপড় খোলা হয়নি বা জামাকাপড়ের ভিতরে হাত গলানো হয়নি, তাই এই ঘটনাটিকে যৌন নির্যাতন বলা যাবে না।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২১ ১৫:৫০
Share:

যৌন হেনস্থা নিয়ে আদালতের নয়া রায়ে ক্ষুব্ধ বলি-পাড়া গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ

বিক্ষুব্ধ নানা মহল! তারকা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। যৌন হেনস্থা নিয়ে বোম্বে হাইকোর্টের নয়া রায়ের সঙ্গে অনেকেই এক মত হতে পারছেন না। রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বলি-তারকা তাপসী পান্নু থেকে শুরু করে সোনি রাজদান।

Advertisement

২০১৬ সালে দায়ের হওয়া এক মামলার প্রেক্ষিতে কোর্ট রায় দিয়েছে যে হেতু আক্রান্ত শিশুটির জামাকাপড় খোলা হয়নি বা জামাকাপড়ের ভিতরে হাত গলিয়ে তার শরীরের কোথাও স্পর্শ করা হয়নি, তাই এই ঘটনাটিকে যৌন নির্যাতন বলা যাবে না। যদি আক্রান্ত ১২ বছরের শিশুর তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল, তাকে পেয়ারার লোভ দেখিয়ে ঘরে নিয়ে গিয়ে অভিযুক্ত তার বুকে হাত দেয়।

বোম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চের মহিলা বিচারপতি পুষ্প গানেদিওয়ালা রবিবার এই রায় দিয়েছেন। এর আগে নিম্ন আদালত ৩৯ বছরের ওই অভিযুক্তকে পোকসো আইনের ৮ নং ধারার ৩ বছরের সাজা দিয়েছিল। অভিযুক্ত ব্যক্তি এর পর আবেদন করেছিল উচ্চ আদালতে। তার প্রেক্ষিতে এই রায়। তবে রায়ে এটাও বলা হয়েছে, অঙ্গপ্রবেশ বা ‘পেনিট্রেশন’ না করে যদি কোনও শিশুকে যৌন ইচ্ছায় স্পর্শ করা হয়, সেটা যৌন নির্যাতন বলেই বিবেচিত হবে। কিন্তু শেষমেশ এই অভিযুক্তের সাজা কমিয়ে দেওয়া হল। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ এবং ৩৪২ নম্বর ধারা অনুযায়ী, ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হল তাকে।

Advertisement

এই রায় শোনানোর পরেই বিক্ষোভ শুরু হয় নেটদুনিয়া জুড়ে। সকলেরই প্রশ্ন, পোশাকের উপর দিয়ে মেয়েদের গায়ে হাত দিলে, তাকে যৌন হেনস্থা বলা হবে না কেন! তাপসী পান্নুর টুইট দেখে স্পষ্ট, তিনি বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না। তাঁর দাবি, ‘অনেক ক্ষণ ধরে চেষ্টা করলাম। তাও কোনও ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। এই খবরটা পড়ার পর থেকে আমি বাক্যহারা’। আলিয়া ভট্টের মা অভিনেত্রী সোনি রাজদান টুইট করলেন, ‘এটা হতে পারে না! এই রায়ের মাধ্যমে আসলে প্রত্যেক হেনস্থাকারীর পথ সহজ করে দেওয়া হল। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানাতেই হবে’। অভিনেতা অঙ্গদ বেদীও তাঁর ক্ষোভ প্রকাশ করলেন টু‌ইটারে। তিনি এই রায়টিকে বিশ্বাসই করতে চাইলেন না। তাঁর প্রশ্ন, ‘এটা কি আদৌ সত্যি? নাকি কেবল মানুষের প্রতিক্রিয়ার জন্য এটা করা হল’! অভিনেত্রী কীর্তি খারবন্দাও অঙ্গদের মতোই বিশ্বাস করতে নারাজ। দক্ষিণী গায়িকা চিন্ময়ী শ্রীপদের স্পষ্ট দাবি, ‘ঠিক এই রকম আইনের সম্মুখীন হই আমরা মহিলারা। অপূর্ব না? এই দেশ হেনস্থাকারীদের জন্য, এবং হেনস্থাকারীদের দ্বারাই পরিচালিত হচ্ছে’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন