আটকে ‘উড়তা পঞ্জাব’! মোদীকে খুশি করতে চান সেন্সর বোর্ড প্রধান?

গেরো যেন কাটতেই চাইছে না। হাজার টালবাহানার পরেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, আদৌ কি মুক্তি পাবে তো অভিষেক চৌবে পরিচালিত ‘উড়তা পঞ্জাব’?

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৬ ১৩:১৪
Share:

গেরো যেন কাটতেই চাইছে না। হাজার টালবাহানার পরেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, আদৌ কি মুক্তি পাবে তো অভিষেক চৌবে পরিচালিত ‘উড়তা পঞ্জাব’?

Advertisement

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই সেন্সর বোর্ডের চোখ রাঙানিতে যে ভাবে পিছু হটতে হচ্ছে উড়তা পঞ্জাবকে, তাতে শেষমেশ তার ওড়ান নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই ছবিটিতে ৮৯টি সংলাপ কেটে দিতে হয়েছে।

ছবির পটভূমিকায় রয়েছে পঞ্জাব। সে রাজ্যের ড্রাগ সমস্যা এবং নেশাসক্ত যুব সমাজকে এই ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে। কিছু দিন আগে সেন্সর বোর্ড ছবির সমস্ত জায়গা থেকে ‘পঞ্জাব’ শব্দটি বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যান পহলাজ নিহালনি। বাদ দিতে বলা হয় ছবিতে ব্যবহৃত পঞ্জাবের বিভিন্ন জায়গাগুলোর নামও।

Advertisement

এ দিকে ‘উড়তা পঞ্জাব’ মুক্তি পাওয়ার কথা আগামী ১৭ জুন। কিন্তু, ছবির প্রযোজক অনুরাগ কাশ্যপ জানিয়েছেন, ছবিতে অন্তত ৬০-৬৫ বার পঞ্জাব শব্দটি রয়েছে। এই মুহূর্তে সেগুলি ছাঁটতে গেলে ছবিটি আর মুক্তিই পাবে না। সেন্সর বোর্ডের উপর তোপ দেগে কাশ্যপ টুইট করেন, ‘মাঝে মাঝে মনে হয় উত্তর কোরিয়ায় বাস করছি।’ কিন্তু, হঠাৎ কেন এই ছবি নিয়ে আপত্তি তুলেছেন পহলাজ? কাশ্যপের অভিযোগ, সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যান নরেন্দ্র মোদীকে তুষ্ট করতেই এ সব করছেন। পহলাজ চক্রান্ত করছেন। আসলে কোনও ছবি তৈরির পর প্রথমে তা সেন্সর বোর্ডের এগজামিন কমিটি দেখে। সেখানে আটকালে তা যায় রিভাইসিং কমিটির কাছে। সেই কমিটিতেও ছাড়পত্র না পেলে বোর্ডের ট্রাইব্যুনালে আবেদনের সুযোগ থাকে। কিন্তু পহলাজ নাকি কোনও নিয়মই মানছেন না। তিনি কোনও লিখিত নির্দেশও দেননি। অনুরাগের সংযোজন, ‘‘শুধুমাত্র ফোন করে নানা রকম কথা বলছেন। ফলে হাতে লিখিত কিছু না থাকায় আমরা না যেতে পারছি ট্রাইবুন্যালে না যেতে পারছি আদালতে।’’

আরও পড়ুন: ‘উড়তা’ রাজনীতিতে না

তবে এর পিছনে থাকা অন্য একটি কারণও দেখচ্ছে বিভিন্ন মহল। অনেকের মতে, ২০১৭ সালে পঞ্জাবে নির্বাচন। তাই ভোটের ঠিক আগেই ড্রাগের মতো একটি জ্বলন্ত সমস্যা নিয়ে তৈরি এই ছবি মুক্তি পেলে সেখানে ব্যাকফুটে চলে যেতে পারে বিজেপি। আর সেই কারণেই ছবি মুক্তির স্বপক্ষে গলা চড়িয়েছে আপ। পাশে দাঁড়িয়েছেন রাহুল গাঁধীও। বিভিন্ন সূত্রে খবর, ভোটের কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় সরকারকে তুষ্ট করতেই ‘উড়তা পঞ্জাব’-এর ওপর কাঁচি চালাতে চাইছেন পহলাজ। এর আগেও তিনি ইউটিউবে মোদীকে নিয়ে ছবি বানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুনজরে আসার চেষ্টা করেছিলেন।

কিন্তু, দমে যাওয়ার পাত্র নন অভিষেক-অনুরাগও। সম্প্রতি ছবির মুক্তি ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তাঁরা। তথ্যসম্প্রচার মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিংহ রাঠৌরের সঙ্গে দেখাও করতে গিয়েছিলেন কাশ্যপ। দেখা করার পরিকল্পনা রয়েছে তথ্যসম্প্রচার মন্ত্রকের পূর্ণমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গেও। কাশ্যপের কথায়, ‘‘যদি কেউ সত্যিই পঞ্জাবকে ড্রাগ মুক্ত করতে চান তা হলে এই ছবি মুক্তি পেতে অসুবিধা কোথায়?’’

কিন্তু, যে ভাবে নানা রকম বিতর্কে বার বার বিদ্ধ হতে হচ্ছে এই ছবিকে তাতে অনিশ্চয়তার কালো মেঘে ঢাকা পড়েছে তাক মুক্তির সম্ভাবনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন