Kiara Advani

বিন্যাসেই গলদ

তনুকে কেন্দ্র করে গল্প এগোলেও ছবিতে তার চেয়ে নানকির স্ক্রিনটাইম বেশি।

Advertisement

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২০ ০০:০২
Share:

ফাইল চিত্র

গিল্টি (ওয়েব মুভি)
পরিচালনা: রুচি নারাইন
অভিনয়: কিয়ারা, আকাঙ্ক্ষা, গুরফতেহ, তাহির
৫/১০

Advertisement


সিনেমা তৈরির ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক ও জরুরি বিষয় নির্বাচন যেমন একটা চ্যালেঞ্জ, তার চেয়েও কঠিন সেটাকে মর্যাদা সহকারে উতরে দেওয়া। পরিচালক রুচি নারাইন প্রথম চ্যালেঞ্জ টপকালেও দ্বিতীয়টায় ব্যর্থ। ধর্ষণের মতো জ্বলন্ত বিষয় নিয়ে ‘গিল্টি’ বানিয়েছেন। কিন্তু কর্ণ জোহরের প্রযোজনা সংস্থার ছবিগুলো যে সব দোষে দুষ্ট, ঠিক সেগুলোই রয়েছে ‘গিল্টি’তে। অথচ শুরুটা ঠিকঠাক ভাবেই করেছিলেন।

কলেজের সবচেয়ে হট অ্যান্ড হ্যাপেনিং ছেলে বিজয় প্রতাপ সিংহ ওরফে ভিজে (গুরফতেহ সিংহ পিরজ়াদা)। তার বাবা রাজনৈতিক নেতা। একদম ছক মেনে তৈরি একটা চরিত্র। ভিজের সঙ্গে নানকির (কিয়ারা আডবাণী) প্রেম। মেয়েটির একটি কালো অতীত থাকলেও সে জায়গাটা আঁধারেই থাকে। ভিজে-নানকির মাঝে হাইফেনের মতো ঢুকতে চায় তনু (আকাঙ্ক্ষা রঞ্জন কপূর)। ছেলেটিকে প্রলুব্ধ করতে নানা কৌশলও প্রয়োগ করে। সে রকমই এক দিনে মেয়েটি আচমকা অভিযোগ জানায়, তাকে ধর্ষণ করেছে ভিজে। কিন্তু মেয়েটির আগেকার আচরণ ইঙ্গিত করে, এখানে ভিক্টিম ছেলেটি। সত্যি-মিথ্যের দোলাচল ছবির শুরু থেকে জিইয়ে রেখেছেন পরিচালক। একমাত্র এই কারণেই শেষ পর্যন্ত ধৈর্য থাকে। কিন্তু ক্লাইম্যাক্সেই যেন পরিচালকেরও ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে।

Advertisement

তনুকে কেন্দ্র করে গল্প এগোলেও ছবিতে তার চেয়ে নানকির স্ক্রিনটাইম বেশি। কাহিনিও বলা হচ্ছে নানকির দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই। সেটা তবু মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু তা বলে তনুর চরিত্রটির কোনও আগাপাশতলা থাকবে না? গভীরতা নেই কাহিনির বিন্যাসেও। একটি মেয়ে আর একটি মেয়ের দিকে আঙুল তুলবে, তাকে দোষী সাব্যস্ত করবে, এমনটা আমরা দেখেই থাকি। প্রভাবশালীরা বিচারব্যবস্থায় প্রভাব খাটাবে, এমনও হয়। এই ছকের বাইরের কোনও ভাবনার প্রকাশ নেই ‘গিল্টি’তে। যবনিকা পতনের জন্য যে ভাবে মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছিল, সেটাও বালখিল্যের মতো।

অথচ কিছু জোরালো স্টেটমেন্ট দেয় ছবিটি। ছেলেটিকে যে সে প্রলুব্ধ করতে চেয়েছিল, তা জোর গলায় জানায় মেয়েটি। কিন্তু তাতে কি ছেলেটির ধর্ষণের অধিকার জন্মায়?

ওয়েবে এখন নতুন মুখেরা দাপিয়ে কাজ করছেন। এখানেও তুলনামূলক ভাবে বেশ কিছু নতুন মুখ ছিলেন। কিন্তু তাঁরা প্রত্যেকেই কমজোরি। আর কিয়ারা আডবাণীর জন্য পরিচালক যে মলাট চরিত্রটি লিখেছেন, তাতে ‘সেক্স এডুকেশন’-এর মিভ চরিত্রের ছায়া এত বেশি স্পষ্ট যে, নানকি তার মৌলিকত্ব হারায়।

ক্রমশ বড় পর্দার জায়গা দখল করছে ওয়েব মুভি। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ইন্ডি-ওয়েবে আরও বেশি মৌলিকত্ব এবং সংবেদনশীলতা প্রয়োজন। কিন্তু কর্ণ জোহরের প্রযোজনা তার নিজস্ব গণ্ডির বাইরে বেরোতে পারল কই?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন