Entertainment News

‘মেয়েরা বৈবাহিক ধর্ষণের বিরুদ্ধে আরও আরও মুখ খুলুন’

রাস্তাঘাটে অন্যায় হলে তাও কিছু ক্ষেত্রে প্রতিবাদ করেন মহিলারা। কিন্তু অত্যাচার যদি হয় বাড়ির ভিতর? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরিবারের সম্মানের কথা ভেবে মুখ বুজে সহ্য করে নেন। কিন্তু না!

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ১৮:০০
Share:

সেলুলয়েডের রঙিন দুনিয়া বা ব্যক্তি নায়িকার ওঠাপড়ার জীবন- এর বাইরে অন্য এক ক্যাটরিনা কইফকে সম্প্রতি দেখতে পেল মুম্বই। এ সমাজে মেয়েদের অবস্থা নিয়ে নিজের ভাবনাকে যে গভীরতায়, যে তীক্ষ্ণতায় সামনে আনলেন এক সেমিনারে, তাতে ক্যাটরিনার এক অচেনা, অজানা রূপ সামনে এল। রাস্তাঘাটে অন্যায় হলে মেয়েরা প্রতিবাদ করেন অনেক সময়ই। কিন্তু ক্যাটরিনা প্রশ্ন তুললেন, বাড়ির ভিতর যে অত্যাচারের মুখোমুখি হতে হয় মেয়েদের তা নিয়ে এত কম সরব কেন মেয়েরা!
সম্প্রতি লিঙ্গ বৈষম্য এবং নারী নির্যাতন নিয়ে মুম্বইতে ‘উইইউনাইট’ কনফারেন্স-এর মঞ্চে বক্ত়ব্য রাখেন তিনি। সেখানে সামাজিক ভাবে মেয়েদের উপর নির্যাতনের কথা বলতে গিয়ে ক্যাটরিনা বিশেষ ভাবে জোর দেন পারিবারিক যৌন নির্যাতনের উপর। জোর দেন বিবাহিত মেয়েদের সম্মতি ছাড়াই স্বামীর জোর খাটানে যৌন মিলনের ঘটনায়, যা সংক্ষেপে বৈবাহিক ধর্ষণ বলে পরিচিত। তাঁর মতে, পারিবারিক হিংসা বা বৈবাহিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও মেয়েদের একই রকম ভাবে প্রতিবাদ করা উচিত। শিক্ষিত মহিলারাও সমাজের দোহাই দিয়ে, পারিবারিক অসম্মানের কথা ভেবে, অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার করে নেন। যা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বলেন ক্যাটরিনা।

Advertisement

আরও পড়ুন, বিয়ের পর প্রথম একসঙ্গে প্রকাশ্যে এলেন রানি-আদিত্য

ক্যাটরিনার কথায়, ‘‘আমি চাইব আরও অনেক মহিলা পারিবারিক হিংসার বিরুদ্ধে মুখ খুলুন। নিজেদের দুর্বল ভাবার কোনও কারণ নেই।’’ ভারতে এখনও মেয়েদের বিরুদ্ধে হওয়া বহু অপরাধের ঘটনা নথিবদ্ধই করা হয় না। সে প্রসঙ্গ তুলে নায়িকা বলেছেন, ‘‘ভারতে এক সময় ক্ষমতার প্রশ্নে সকলের মাথার ওপর ছিলেন একজন মহিলা। অবাক লাগে সেই দেশেই লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে এত আলোচনা হয়। আমরাই করি, প্রতি দিন। এখানে মেয়েদের ওপর ভয়ঙ্কর অপরাধ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। শুধু এটাই ভাবি, আরও কত অপরাধ নথিবদ্ধ হয় না।’’
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০০১-এ মহিলাদের ওপর অত্যাচারের এক লক্ষ ৪৩ হাজার ৭৯৫টি ঘটনা নথিবদ্ধ হয়েছিল। ২০০৫-এ সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় তিন লক্ষ ২৭ হাজার ৩৯৪টি। ক্যাটরিনার কথায়, ‘‘আমি এটাই বিশ্বাস করতে চাই অপরাধের সংখ্যা বাড়েনি। বরং অপরাধ নথিভুক্ত করার সংখ্যা বেড়েছে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন, ‘সিনেমা দেখতে গিয়ে আমাকে কেন দেশপ্রেমিক হতেই হবে?’

তবে বৈবাহিক ধর্ষণের ঘটনা যদি ধরা যায়, তবে রেকর্ড অনুযায়ী ২০১৪-এর তুলনায় ২০১৫-তে তা কমেছে। ২০১৪-তে তিন লক্ষ ৩৭ হাজার ৯২২টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়। সেখানে ২০১৫-এর নথিভুক্ত ঘটনার সংখ্যা তিন লক্ষ ২৭ হাজার ৩৯৪টি। ধরে নিতেই হবে দুটি বছরের ক্ষেত্রেই বড় সংখ্যক ঘটনায় আদতে কোনও অভিযোগই নথিভুক্ত হয়নি।
বিবাহিত জীবনে মেয়েদের সম্মতিহীন মিলন বা বৈবাহিকধর্ষণের সমস্যা সারা পৃথিবী জুড়েই রয়েছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদও শুরু হয়েছে বহু কাল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি স্টেটেই বৈবাহিক ধর্ষণ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু এ দেশে এখনও বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে কোনও আইন নেই। এমনকী মেয়েরাও বিবাহিত জীবনে অনিচ্ছার বিরুদ্ধে যৌনমিলনে বাধ্য হলেও, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা মুখ বুজে মেনে নেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন