‘অরোরা বরেলিস’ ছবির একটি দৃশ্য।
ফেস্টিভ্যালের একটি গুরুত্ব পূর্ণ ছবি হাঙ্গেরির পরিচালক মার্তা মেসজারোস পরিচালিত ‘আরোরাবরেলিস’।ছবি প্রসঙ্গে বলার আগে পরিচালক সম্পর্কে কিছু কথা বলা জরুরি। মার্তা ইউরোপের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পরিচালকদের মধ্যে একজন। কান, বার্লিন, ভেনিস, মস্কো-সহ পৃথিবীর প্রায় সব বড় ফেস্টিভ্যালে ওঁর ছবি দেখানো হয়েছে। হয়েছে প্রশংসিত। অনেক ছবি পুরস্কৃত হয়েছে।
আরও পড়ুন, সাহস জোগায় ‘একজন কবির মৃত্যু’
আরও পড়ুন, সোমবার ফেস্টিভ্যালে কোন কোন ছবি মিস করবেন না
১৯৬৮ সাল থেকে ছবি করছেন তিনি। ৮৬ বছরের এই পরিচালকের ছবি দেখলে মনে হয় একজন ইয়ং অ্যান্ডইনোসেন্ট মহিলা জীবনের প্রথম পর্যায়ের ছবি বানাচ্ছেন।এই প্রতিভা সকলের থাকে না।বহু বিখ্যাত বিখ্যাত পরিচালক বয়স বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একঘেয়ে হয়ে যেতেথাকেন।ব্যতিক্রম হিচকক, বুনুয়েল আর মার্তার মতো গুটিকয়েক পরিচালক।
‘অরোরা বরেলিস’ ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: ইউটিউবের সৌজন্যে।
তাঁর ছবির বিষয়বস্তু খুবই সহজ সরল। একজন নারীর চোখ দিয়ে খুবই সূক্ষ্ম ও সুচারু ভাবে তিনি জগতকে দেখাতে পছন্দ করেন।মার্তা যখন ছবি বানানো শুরু করেছিলেন, তখন ইউরোপ তথা বিশ্বচলচ্চিত্রে রাজত্ব করছেন গোদার, তারকভস্কি, জাবো, অ্যালারেনে, ওয়াইদার মতো ইউরোপিয় পরিচালকরা। তাঁদের মাঝে নিজস্বতা তৈরি করাটা খুবই চ্যালেঞ্জিং ব্যপার। এবং সেটা তিনি করতে পেরেছিলেন তাঁর সততা ও সারল্যের মাধ্যমে। তিনি সোভিয়েত অধিগৃহীত হাঙ্গেরিতে কৈশোর এবং যৌবন কাটিয়েছিলেন।ওঁর ছবিতে বারবার এই সময়ের গল্পই ফিরেফিরে আসে।
ইউরোপের যুদ্ধবিধ্বস্ত অস্থির সময়ের গল্প বলার জন্য সেই সময় অনেক পুরুষ পরিচালক ছিলেন।কিন্তু, মেয়েদের অস্থিরতা ও নির্যাতনের ভিন্ন রূপ উপলব্ধি করা এবং ছবিতে বলিষ্ঠভাবে সেটা দেখানোর জন্য ছিলেন একমাত্র মার্তা। ‘অরোরা বরেলিস’ ছবিতেও আর একবার তিনি এই গল্পই বলেছেন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ইউরোপের রাশিয়ান কমিউনিস্ট অপশাসন ও ডিক্টেটরশিপের মাঝে মারিয়া নামক একজন ইনোসেন্ট মেয়ের জীবনযুদ্ধের গল্প আমরা এই ছবিতে দেখতে পাই। মার্তার ছবির বিভিন্ন নারীচরিত্রগুলিকে দেখলে মনে হয় এই নারী যেন মার্তা নিজে।একধরনের গভীর জীবনবোধ আর উপলব্ধি না থাকলে এরকমভাবে ছবি বানানো যায় না।
আমি তো দেখলাম।সুযোগ পেলে আপনারাও ছবিটা দেখে নিন। ১৩ তারিখ দুপুর বারোটায় নবীনা আর ১৪তারিখ দুপুর তিনটেয় মানিস্কোয়ারে ছবিটি আবার দেখানো হবে।