বাস্তবে রমন রাঘব কেমন ছিলেন?

নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি অভিনীত এবং অনুরাগ কাশ্যপ পরিচালিত ‘রমন রাঘব’ ছবিটি অনেকেই হয়তো এর মধ্যেই দেখে ফেলেছেন। কিন্তু যাকে নিয়ে এই ছবিটি তৈরি করা হয়েছে তার আসল নাম কি জানেন? ছবিতে নওয়াজ তার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঠিকই, কিন্তু রিল লাইফ আর রিয়েল লাইফের মধ্যে কিছু তো ফারাক থেকেই যায়, তাই না?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৬ ১১:৪৩
Share:

নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি অভিনীত এবং অনুরাগ কাশ্যপ পরিচালিত ‘রমন রাঘব’ ছবিটি অনেকেই হয়তো এর মধ্যেই দেখে ফেলেছেন। কিন্তু যাকে নিয়ে এই ছবিটি তৈরি করা হয়েছে তার আসল নাম কি জানেন? ছবিতে নওয়াজ তার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঠিকই, কিন্তু রিল লাইফ আর রিয়েল লাইফের মধ্যে কিছু তো ফারাক থেকেই যায়, তাই না? কে এই রমন রাঘব? কী-ই বা তার আসল পরিচয়? খুব সাদা-মাটা জীবনযাপন করা রমন কী ভাবে হয়ে উঠেছিল মধ্যপ্রদেশের ত্রাস?

Advertisement

রমনের আসল নাম সরমন শিভারে। মধ্যপ্রদেশের পান্না জেলার বাসিন্দা। দ্বাদশ শ্রেণি পাস করার পর সে ভর্তি হয়েছিল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। কিন্তু প্রথম বছরেই কলেজ ছেড়ে দেয় সে। তার পর একটা সেলসম্যানের কাজ জোটায়। এই কাজ করতে করতেই তার জীবনের বাঁক শুরু। হয়ে ওঠা মধ্যপ্রদেশের ত্রাস।

ছোটবেলা থেকেই তার উচ্চাকাঙ্খা ছিল রাজনীতির বড় হোতা হবে। গ্রেফতার হওয়ার পর পুলিশও অবাক হয়ে গিয়েছিল তার স্মার্টনেস আর ক্যারিশমাটিক পার্সোনালিটি দেখে। ধরা পড়ার পর পুলিশকে সে বলেছিল, “স্যর মারবেন না। যা জিজ্ঞাসা করবেন বলে দেব। আমি অনেক বড় মানুষ হতে চাই। শুধু নির্বাচনটা জিততে দিন…”

Advertisement

পুলিশের কাছে সরমন স্বীকার করেছিল সে মোট ২২টি খুন করেছে। এক পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, সরমন দুটো জিনিস প্রচণ্ড অপছন্দ করত— মোবাইল ফোনের ব্যবহার আর কাউকে বিশ্বাস করে নিজের কথা বলা। আরও একটা বদ গুণ ছিল তার। তা হল তার কুসংস্কার। অন্য এক পুলিশ অফিসার জানান, এক দিন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বিড়াল তার রাস্তা কেটেছিল। তার মনে হয়েছিল এই দোষ কাটানো দরকার। দোষ কাটাতে সে খুন করার পরিকল্পনা করে। তাকে পুলিশ যখন প্রশ্ন করেছিল, “ধরা পড়ার ভয় করত না?” সরমন স্মার্টলি উত্তর দিয়েছিল, “যে শহরে গাড়ি ট্রাফিক সিগন্যাল মানে না, সেখানে আবার ভয় কীসের?”

সেলসম্যানের কাজ করতে করতেই বন্দুকে হাত পাকানো শুরু সরমনের। গ্বালিয়রের এক অস্ত্র ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দেশি পিস্তল কেনে সে। পিস্তল শুধু কিনলেই তো হবে না, এর টেস্ট দরকার। এক মহিলাকে বাড়ির ভিতর ঢুকে ওই পিস্তল দিয়ে গুলি করে খুন করে। পুলিশকে সে জানায়, ওই মহিলাকে তড়পাতে তড়পাতে মরতে দেখতে তার খুব ভাল লেগেছিল। মনে হয়েছিল একটা ঐশ্বরিক শক্তি তার মধ্যে চলে এসেছে।” এখান থেকেই শুরু তার রক্তাক্ত হাতের যাত্রা। এর পরে দেশি পিস্তল তার আর পোষায়নি। কিনেছিল একটি ৯ এমএম পিস্তল। সেটা দিয়ে খুন করেছিল জব্বলপুরে এক পুলিশকে। ধীরে ধীরে রক্তের নেশা যেন তার মাথায় চেপে বসেছিল।

সরমন একা কাজ করতে ভালবাসত। কিন্তু পরে একটি ছেলের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়। দু’জনে মিলে অনেক অপরাধমূলক কাজ করে। কিন্তু সেই পার্টনারশিপ বেশি দিন টেকেনি। ছেলেটি একটি মেয়ের প্রেমে পড়ে। এটা মেনে নিতে পারেনি সরমন। ছেলেটিকে খুন করে। এই ভাবে একের পর এক শিকার বানিয়েছে এই সাইকোপ্যাথ কিলার সরমন। তবে পুলিশের জালে তাকে পড়তে হয় ২০১১-য়। সে বার একটি গয়নার দোকানের মালিকের বউকে খুন করে ডাকাতি করে পালানোর সময় ধরা পড়ে সে। পুলিশের কাছে ২২টি খুনের কথা কবুল করলেও সে এর থেকেও বেশি খুন করেছে সেটা পুলিশ নিশ্চিত।

আরও পড়ুন:
কোন নারী তাঁকে কী শিখিয়েছেন শেয়ার করলেন শাহরুখ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন