বেশ কয়েক বছর হল চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন রঞ্জিত। বিদেশেই স্থায়ী আস্তানা গেড়েছে ছেলে। যোগাযোগ বলতে ফোন, আর বছরে এক বার ছেলের সপরিবার ভারত-দর্শন। বুড়োবুড়ি বসে থাকতেন বাড়িতে। স্ত্রী ব্যস্ত সিরিয়ালে। সময়টাই কাটতে চাইত না। শেষমেশ ছাত্রছাত্রীরাই স্যরকে পরামর্শ দিল ফেসবুকে প্রোফাইল খুলতে। এসএমএসও যে করতে পারেন না ঠিক করে! ফেসবুক খায় না মাথায় দেয় কে জানে! শেষমেশ ছাত্রছাত্রীরাই ভার নিল। স্মার্টফোন কিনিয়ে, টাচ-টাইপে সড়গড় করিয়ে, ফেসবুকে তালিম দিয়ে তবে শান্তি!
বেঁচে থাকার গান
এখন কিন্তু তরতরিয়ে সময় কাটে রঞ্জিতের। ছাত্রছাত্রী, পুরনো বন্ধুবান্ধব তো বটেই, এমনকী ছেলে-বৌমা-নাতনির খবরও দিব্যি মুখস্থ। গিন্নিকে চমকে দেন আমেরিকার নাচের স্কুলে নাতনি আজ কী শিখল, গল্প শুনিয়ে। ফেসবুকে সমবয়সি বন্ধুদের একটা দলও জুটে গিয়েছে। গল্পগুজব, সঙ্গে নিয়মিত দেখাসাক্ষাৎ। অবসরযাপনে এখন অক্সিজেনের দরজা খোলা।
আমার মা সব জানে
মাঝেসাঝে রীতিমতো আঁতে ঘা আটচল্লিশের বন্দনার। মেয়েটা দিনদিন যেন কেমন হয়ে উঠছিল। খালি বন্ধু, পার্টি, হুল্লোড়। আজকালকার মেয়েরা অনেক চালাকচতুর ঠিকই, তবু ভয় হয় মায়ের। খবরের কাগজে যা সব লেখে! কিছু বলতে গেলে? ষোলো বছরের মেয়ে সোজা বলে দেয় ‘মা, তুমি কিচ্ছু বোঝো না!’
ডেটলাইন ২০১০: ‘উফ্ বাবা, এসএসএমএসটা অন্তত নিজে করতে শেখো না!
ডেটলাইন ২০১৫: ‘তোমার সেল্ফিটা কিন্তু টু গুড বাবা! এটাকে প্রোফাইল পিকচার কোরো কিন্তু।’
পিদিমের মধ্যে জিন। আর ফোনের মধ্যে ফেসবুক।
বাকিটা?
ম্যাজিক!