Entertainment News

মুভি রিভিউ: কনটেন্টের থেকেও ‘ব্ল্যাকমেল’-এর সম্পদ ক্রাফট

শেষে ইরফান জিতে যায় অবশ্য। বলা ভালো, জেতে তাঁর রিভেঞ্জ। স্ত্রী তাঁর জন্য আগের মতোই ভাত বেড়ে রাতে অপেক্ষা করে। কী ভাবে এই জয়?

Advertisement

দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ১৮:১৪
Share:

পুরোহিত নিঃসন্দেহে ‘নন-হিরো’ ইরফান।

ইরফান খান নামটা শুনলেই যে ধারার ছবির কথা ভেসে ওঠে, ‘ব্ল্যাকমেল’ তাঁর ব্যতিক্রম নয়। বরং ভীষণ ভাবেই সে রকম। ‘ব্ল্যাক কমেডি’, ‘রিভেঞ্জ স্টোরি’ যে নামেই ডাকি, এ ছবি আসলে সময়ের রোগকে চিহ্নিত করে। সেই রোগের পুরোহিত নিঃসন্দেহে ‘নন-হিরো’ ইরফান।

Advertisement

কোন রোগ? সম্পর্কে ব্যর্থতা আর তা থেকে ঘনিয়ে ওঠা প্রতিশোধ-কামনা। আদিম লালসার মতোই এ ছবির প্রতি ফ্রেম জুড়ে ঘুরে বেড়ায় সেই কালো পাপের চক্র। ইরফান অভিনীত দেব অফিস ফেরত অন্য পুরুষের সাথে নিজের স্ত্রীকে শোওয়ার ঘরে আবিষ্কার করে। এর পরেই ভাবনা শুরু হয়, কী ভাবে এই ঘটনার প্রতিশোধ নেওয়া যায়। খুন বা মারামারির বদলে নন-ভায়োলেন্ট ব্ল্যাকমেলিংয়েই আস্থা খুঁজে পায় দেব। স্ত্রীর প্রেমিককে অনুসরণ করতে থাকে সে।

জানা যায়, স্ত্রীর প্রেমিক আসলে বড়লোকের ঘরের জামাই। নামহীন অ্যাকাউন্ট থেকে তাকে মেসেজ পাঠায় দেব। তাতে লেখা, বিবাহিত মহিলার সাথে সম্পর্ক? ঘটনা চাপতে টাকার দাবিও করা হয়। এখানেই এ ছবির প্যাটার্ন তৈরি হয়। কালো ঘোলাটে প্রেমের মতোই বড় বেশি কালো সে প্যাটার্ন। সময়ের ঘা- ক্রমশই খুলে যায় তারপর। ক্রমশ সেই ঘা প্রেমিক থেকে কলিগ, কলিগ থেকে গোয়েন্দা, গোয়েন্দা থেকে প্রেমিকা, প্রেমিকা থেকে খুনি প্রমুখ নানা চরিত্রে সংক্রামিত হয়। সকলেই সকলের কাছে টাকা চায়। বিনিময়ে অপরাধ চেপে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি মেলে। এভাবেই চারিয়ে যায় অপরাধ এক শরীর থেকে আরও এক শরীরে। খুলে যায় সমাজের তলপেটের ভয়ার্ত কালো রোগ।

Advertisement


ছবির দৃশ্যে ইরফান।

শেষে ইরফান জিতে যায় অবশ্য। বলা ভালো, জেতে তাঁর রিভেঞ্জ। স্ত্রী তাঁর জন্য আগের মতোই ভাত বেড়ে রাতে অপেক্ষা করে। কী ভাবে এই জয়? তা জানতে ছবিটি দেখতে হবে। দেখতে হবে আরও কিছু কারণে। তা হল, মূল ধারার বাণিজ্যিক ছবি কীভাবে বিকল্প ধারাকে গ্রহণ করে অনন্য হয়ে উঠছে। সিংক সাউন্ড, ডি-আই কালার, ক্যমেরা, মিউজিকে কতটা অনন্য হতে পারে আজকের মূল ধারার বলিউড, হতে পারে সাম্প্রতিক, তা এই ছবি আরেকবার প্রমাণ করল। অনুরাগ-দিবাকরের হাতে তৈরি হওয়া এই ধারা জটিলতার কোন অন্য মাত্রায় পৌঁছেছে, তা এই ছবি না দেখলে সত্যিই বিশ্বাস করা কঠিন। আমি বলব, কনটেন্টের থেকেও এ ছবির সম্পদ ক্রাফট। এক লহমায় মনে হতেই পারে, চকিতে ফিল্ম স্কুলের কোনো ডিপ্লোমা ছবি যেন-বা।

আরও পড়ুন, ঘোষণা ছিল অনেক, কিন্তু হরর ফিল্ম হয়ে উঠতে পারল কোথায় ‘পরী’?

পরিচালক অভিনয় দেও এর আগের বেশ কয়েকটি অন্য ধারার কাজের মধ্যে একটি ছিল ‘দিল্লিবেলি’। এ ছবিতে তাঁর পাশাপাশি অবশ্যই সাধুবাদ পাবেন চিত্রগ্রাহক জয় ওজা এবং সম্পাদক হুজেফা লোখান্ডোয়ালা। ঊর্মিলা মাতন্ডকারকে বহুদিন পর দেখা যাওয়ার ঝলক তো রয়েছেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন