ইন্ডাস্ট্রিতে এলেন, দেখলেন, জয়ও করলেন। কিন্তু তার পর হারিয়ে গেলেন অভিনেতা নকুল কপূর। তিনি আজ বলিউড-বিস্মৃত।
সুদর্শন নকুলকে প্রথম বার পর্দায় দেখা গিয়েছিল ১৯৯৮ সালে। তিনি অভিনয় করেছিলেন ‘হো গ্যয়ি হ্যায় মোহাব্বত তুম সে’ অ্যালবামে। তিন বছর অপেক্ষার পরে ব্রেক বড় পর্দায়।
২০০১-এ নকুলের প্রথম ছবি ‘আ জা মেরে ইয়ার’ মুক্তি পায়। কিন্তু বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে সেই ছবি।
পরের বছর দ্বিতীয় ছবিতেই সব হিসেব উল্টে দেন নকুল। ২০০২-এ মুক্তি পায় ‘তুম সে অচ্ছা কৌন হ্যায়’। ছবিতে তাঁর বিপরীতে নায়িকা ছিলেন অনিতা ছাবড়িয়া এবং কিম শর্মা।
কম বাজেটের এই ছবি বক্স অফিসে সুপারহিট হয়। নদীম-শ্রবণের সুরে ছবির গানগুলিও দর্শক-শ্রোতাদের মন জয় করে নেয়।
নবাগত নকুল হয়ে ওঠেন মহিলা অনুরাগীদের হার্টথ্রব। চকোলেট বয় ভাবমূর্তি দিয়েই বাজিমাত করেন তিনি।
স্টারডমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে নকুলের পারিশ্রমিকও। তাঁকে ঘিরে প্রত্যাশাও বেড়ে যায়। কিন্তু দর্শকদের অপেক্ষাই সার। সুপারহিট নকুল কপূরকে আর কোনও ছবিতেই দেখা যায়নি।
কার্যত কর্পূরের মতো মিলিয়ে যান তিনি। ধীরে ধীরে হারিয়ে যান দর্শক-স্মৃতি থেকেও।
২০১৬ সালে আবার আচমকাই ভেসে ওঠে তাঁর নাম। সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর ছড়িয়ে পড়ে নকুল কপূর ইতিমধ্যেই প্রয়াত! তাঁর মৃত্যুর কারণ নিয়ে শুরু হয়ে যায় জল্পনা-কল্পনা।
এর পরই মঞ্চে অবতীর্ণ হন নকুল। সব গুজবের অবসান ঘটিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান তিনি জীবিত। তার পরই জানা যায় কোথায় আছেন, কী করছেন এই নায়ক।
নকুল জানান, দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও বলিউডে কাজ না পেয়ে তিনি হতাশ হয়ে পড়েন। অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে তিনি আঁকড়ে ধরেন তাঁর অন্য প্যাশনকে।
সেই প্যাশন ছিল যোগাভ্যাস। এ বার নকুল যোগগুরু হয়ে পাড়ি দেন কানাডা। সেখানেই ভ্যাঙ্কুভার শহরে তিনি যোগগুরু বলে পরিচিত। তাঁর ‘ডিভাইন লাইট’ প্রতিষ্ঠানে নকুলের তত্ত্বাবধানে যোগচর্চা করেন বহু ছাত্রছাত্রী।
চেহারার দিক দিয়েও নকুলের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। তাঁকে দেখলে ২০০২-এর স্মৃতি মনে পড়া কঠিন। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলেও নকুল পরিচয় দিয়েছেন যোগপ্রশিক্ষক বলে। মাঝে মাঝেই লম্বা চুল আর দাড়ি রাখেন তিনি।
এখন তিনি নিজের অভিনেতা সত্ত্বাকে ভুলে যেতে চান। বলিউডে কামব্যাকও করতে চান না, জানিয়ে দিয়েছেন ওয়ান ফিল্ম ওয়ান্ডার নকুল কপূর। পরবর্তী দিনগুলিতেও থাকতে চান যোগপ্রশিক্ষক হয়েই।
সম্প্রতি সুশান্ত সিংহ রাজপুতকাণ্ডে আবার উঠে এসেছে নকুল কপূরের নাম। অভিযোগ, বহিরাগত নকুলও স্বজনপোষণের শিকার হন। মনে করা হয়, পরিচালক ও প্রযোজকদের কাছে কাজ না পেয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে ‘ব্রাত্য’ হয়ে যান তাঁর মতো সম্ভাবনাময় তরুণ অভিনেতা।