ফেসবুকের মুখ-বদল

বদলের তালিকায় কী কী? লিখছেন সোমঋতা ভট্টাচার্যঅক্ষরগুলোর কায়দাও খানিক বদলেছে। চট করে দেখলে বোঝা যাচ্ছে না। তবে খুঁটিয়ে নজর করলে চোখে পড়ছে ঠিক। খাবারে, পোশাকে, সিনেমায়, গল্পে— ধরন বদলাচ্ছে, বদলাচ্ছে নজর। কাজেই, দিনরাত ২৪ ঘণ্টা জড়িয়েমড়িয়ে থাকা যে বস্তুটিকে, তার বদলানোতেও খানিক নজর দিতে হয় বইকী!

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৫ ০০:১২
Share:

অক্ষরগুলোর কায়দাও খানিক বদলেছে। চট করে দেখলে বোঝা যাচ্ছে না। তবে খুঁটিয়ে নজর করলে চোখে পড়ছে ঠিক।

Advertisement

খাবারে, পোশাকে, সিনেমায়, গল্পে— ধরন বদলাচ্ছে, বদলাচ্ছে নজর। কাজেই, দিনরাত ২৪ ঘণ্টা জড়িয়েমড়িয়ে থাকা যে বস্তুটিকে, তার বদলানোতেও খানিক নজর দিতে হয় বইকী!

কথা হচ্ছে ফেসবুককে নিয়ে। জাগা থেকে ঘুমোনো পর্যন্ত, এমনকী ঘুমের মাঝখানেও অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী যে। সারাক্ষণ ঘর করা থুড়ি ঘর-অফিস-কলেজ-বাস-মেট্রো, সবেতেই যার সঙ্গ অনিবার্য, সে তো ভাববেই নিজের মোড়কটাকে ঘুরিয়েফিরিয়ে মনোগ্রাহী করে তোলার কথা। এতগুলো চোখ সেই দিকেই তাকিয়ে যে!

Advertisement

বদল এক: ওই যে বলা হল, কায়দা বদল অক্ষরের। ফেসবুক লেখায় ইংরেজি বর্ণমালার লিপির বদল ঘটেছে সামান্য।

বদল দুই: বন্ধুদের চেহারাও একটু বদলেছে। মানে, ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট বা ফ্রেন্ডস অপশনে অবয়ব থাকে যে ছেলে-মেয়ের, আদলে সামান্য বদল হয়েছে তাদের।

বদল তিন: পুরনো দিনগুলোকে ঘেঁটে দেখা হঠাৎ। ধরুন আজকের দিনটা। গত বছর, বা আরও বছর দুই-তিন আগে ঠিক এই তারিখেই কী করেছিলেন আপনি? ইউরোপ ট্যুর? নাকি স্পেশ্যাল কোনও ডিশ রেঁধে গৃহিণীর হৃদয়হরণ? নগণ্য নয় কোনওটাই। ফেসবুক করছে জমজমাট উদ্‌যাপন। শুধু আপনার ছোট্ট একটা অনুমতি চাই। ব্যস্! অমনি টাইমলাইনে জ্বলজ্বল করবে কারও সঙ্গে বন্ধুত্বের বর্ষপূর্তি বা অন্য কোনও ফেসবুকীয় নস্ট্যালজিয়া।

বদল চার: এখনও দৃষ্টিগোচর হয়নি সকলের। তবে ফেসবুকে নাকি এসে গিয়েছে নতুন এক স্ক্র্যাপবুক। এতে বাচ্চাদের ছবি সামলানোর আর ইচ্ছেমতো ছবিতে বাচ্চাকে ‘ট্যাগ’ করার সুবিধে পাচ্ছেন শুধুমাত্র বাবা-মায়েরাই। প্রয়োজন মতো কাস্টমাইজ করার অপশন এতে বাচ্চার ছবিকে সকলের কাছে পৌঁছে যাওয়া থেকে রুখবে। শুধু পছন্দের সার্কেলেই ঘুরবে সেই ছবি।

বদল পাঁচ: নিজের ফেসবুক খুলে হোমপেজের নিউজ ফিড স্ক্রল করতে করতেই চলমান ছবি দেখা যাচ্ছে। এই ব্যাপারটাও বেশি পুরনো নয়। আগে শুধু কোনও ভিডিও-র কভার ফোটো দেখা যেত। প্লে করলে চলত ভিডিও। এখন নিউজ ফিড থেকেই শব্দ ছাড়া শুধু ভিডিওটা চলতে দেখা যাচ্ছে, প্লে করার আগেই।

বদল ছয়: ফেসবুকীয় কোনও বন্ধুর পোস্টের নীচে কমেন্ট করার সময়ে হরেক ইমোটিকন দেওয়া যেত আগেই। চ্যাট মেসেজের মতোই- ‘টুজকি’, ‘প্লাম’, ‘কোকো’, ‘স্নুপি’ ‘মাগসি’, ‘পুশিন’, ‘প্রিকলি পিয়ার’ বা ‘চুম্বক’। এ বারএই বাস্কেটের মধ্যে থেকেই বেছে ‘হ্যাপি’, ‘স্যাড’, ‘ইন লাভ’- এ রকম সব মুহূর্তকে আরও সোজাসুজি বোঝাতে দেওয়া যাচ্ছে আরও স্পেসিফিক ইমোটিকন।

বদল সাত: নিউজ ফিডে এর পর থেকে দেখা যাবে আরও অনেক অনেক আপডেট। কোনও অনুষ্ঠান বা পার্টিতে যাওয়ার রিমাইন্ডার তো এখনই মেলে। এ ছাড়াও, খেলা-রাজনীতি সহ আপনার নির্দিষ্ট কোনও পছন্দের ঘটনার আপডেটও মিলবে সেখানে।

বদল আট: ‘ফিলিং হ্যাপি’, ‘ফিলিং স্যাড’, ‘ফিলিং ফেস্টিভ’- এই তালিকায় কিছু দিন হল এসে জুটেছে ‘ফিলিং শানদার’! সৌজন্যে শাহিদ-আলিয়ার সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘শানদার’। পাশে একটা ছোট্ট গোঁফের ছবি। উৎসবের মরসুমে রাজকীয় থাকাটাকে জানান দিতে তৈরি সকলে।

বদল নয়: ফেসবুকে প্রোফাইল ভিডিও বা ভিডিও ডিপি ফিচারটাও এক্কেবারে নতুন। নিজের শুধু ছবির পরিবর্তে কোনও বিশেষ মুডের ভিডিও রাখতে পারবেন।

বদল দশ: এর মাঝেই কিছু দিন ফেসবুকের বাজারে ঘোরাফেরা করেছে ‘ডিজিটালইন্ডিয়া’র সৌজন্যে তেরঙা ডিপি। জনক জুকেরবার্গের পোস্টের সঙ্গে সঙ্গেই ফেসবুক ছেয়েছিল ‘ডিজিটালইন্ডিয়া’ হ্যাশট্যাগের সঙ্গে তেরঙা প্রোফাইল ছবিতে।

মুখ বদলানোরই যুগ বস্! ফোর হুইলার থেকে ফিয়ঁসে- মুহুর্মুহু বদলাচ্ছে সব কিছুই। মুখবই-ই বা কেন নাম লেখাবে না সেই মুখ বদলের তালিকায়!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন