কিক মেসে়ঞ্জার (Kik Messenger)
অ্যাপ মার্কেটে আসার সঙ্গে সঙ্গেই অল্পবয়সীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কিক মেসেঞ্জার। ২০১০-এ যখন প্রথম ইন্সটল করার জন্য বাজারে আসে, মাত্র চার দিনে দশ লাখ ব্যবহারকারী হয়ে যায় কিকের। কিকের অন্যতম সুবিধা হল আইফোন, অ্যান্ড্রয়েড, উইনডোজ ফোন, নোকিয়া ওভিআই স্টোর আর ব্ল্যাকবেরি— প্রায় সব স্মার্টফোন প্ল্যাটফর্মেই পাওয়া যায় এই অ্যাপ। তাই তো এখনই কিকের ব্যবহার কারী সংখ্যা ছাপিয়ে গিয়েছে দশ কোটি।
স্বাভাবিকভাবে টেক্সট মেসেজ বা ইমোজি আদানপ্রদান তো আছেই। কিক মেসে়ঞ্জারে জেন ওয়াইয়ের হামলে পড়ার আর একটা কারণ ওয়েব ব্রাউজারের সঙ্গে এই অ্যাপের ইন্ট্রিগ্রেশন। কিক মেসেঞ্জার ওয়েব ব্রাউজার থেকেই ব্যবহার করা যায়। ফলে কম্পিউটার বা ল্যাপটপে বসে টাইপ করার সুবিধা দেয় কিক মেসেঞ্জার।
স্ন্যাপচ্যাট (Snapchat)
ব্যবহারের দিক থেকে স্ন্যাপচ্যাট-এর কাজ অনেকটা ইন্সটাগ্রামের মতো। মূলত ছবি আদানপ্রদানের জন্যই জেন ওয়াই ব্যবহার করে স্ন্যাপচ্যাট। কিন্তু ইন্সটাগ্রামের সঙ্গে এর তফাতটা হল, যাকে ছবি পাঠাবেন তার কাছে কয়েক সেকেন্ডের জন্য থাকবে সে ছবি। হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন। ছবি দেখার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই নিজে থেকেই ডিলিট হয়ে যাবে সে ছবি। স্ন্যাপচ্যাটের সার্ভারেও থাকবে না ছবিটা। ফলে প্রাইভেসি নিয়েও তেমন চিন্তার নেই। তবু কথায় আছে না, সাবধানের মার নেই। আর এ সব কারণেই ‘সেক্সটিং’য়ের সবথেকে বড় প্ল্যাটফর্ম হয়ে দাঁড়াচ্ছে স্ন্যাপচ্যাট।
তবে এখন আবার শুধু ছবিতে থেমে থাকতে হবে না, চাইলে ভিডিয়োও পাঠাতে পারবেন আপনার সেই বিশেষ ব্যক্তিকে। ২০১৪-এর মে মাসের এক হিসাব বলছে প্রায় সত্তর কোটি ছবি আর ভিডিয়ো আদানপ্রদান হচ্ছে প্রতিদিন স্ন্যাপচ্যাটে। সাধে কি আর মার্ক জুকারবার্গ তিন বিলিয়ন ডলার অফার দিয়েছিলেন স্ন্যাপচ্যাট কিনতে।
উইচ্যাট (WeChat)
কোন চ্যাট অ্যাপ কতটা জনপ্রিয় তা বোঝার উপায় যদি হয়, কতজন সেটা ব্যবহার করছেন। তবে উইচ্যাট সে তালিকার প্রথম দিকেই থাকবে। শুধু গুগল প্লে স্টোরেই এখনও পর্যন্ত ডাউনলোড হয়েছে তিরিশ কোটি। উইচ্যাটেরও সবথেকে বড় সুবিধা হল, অ্যান্ড্রয়েড, আইওস ছাড়াও উইনডোজ ফোন, নোকিয়া সিমবিয়ান প্ল্যাটফর্ম সব স্মার্টফোনে প্ল্যাটফর্মেই সাপোর্ট করবে উইচ্যাট।
শুধু মাত্র টেক্সট মেসেজই নয়, ছবি (তাও আবার ফিল্টার ব্যবহার করে)ও পাঠাতে পারবেন উইচ্যাটে। এমনকী হোয়াটসঅ্যাপের মতো অডিয়ো কলও করতে পারবেন এই অ্যাপের মাধ্যমে। তবে উইচ্যাটের ওয়াকিটকি মোড বিশেষভাবে সাড়া ফেলেছে জেন ওয়াইয়ের মধ্যে। ওয়াকিটকি মোড অনেকটা অডিয়ো চ্যাটের মতোই। কিন্তু তফাত হল ওয়াকিটকি মোডে আসল ওয়াকিটকির মতো গ্রুপ চ্যাটও চলতে পারে।
ভাইবার (Viber)
ভাইবার অনেক দিন হল স্কাইপকে হটিয়ে ভিডিয়ো কলিংয়ে লোকজনের প্রথম পছন্দের অ্যাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ন’শো মিলিয়ন ডলারে জাপানিজ ই-কমার্স কোম্পানি ভাইবার কেনার পর থেকে ভাইবার আর নিজেকে আর একটা প্ল্যাটফর্মে আটকে রাখেনি। আইওস, অ্যানড্রয়েড-সহ সব স্মার্টফোন প্ল্যাটফর্মেই ব্যবহার করা যায় ভাইবার। সঙ্গে যোগ হয়েছে ওয়েব ব্রাউজারের মাধ্যমে চ্যাটের সুবিধাও। আর এ সব কিছুই বিনা পয়সায় এবং পুরোপুরি বিজ্ঞাপন মুক্ত। স্বাভাবিকভাবেই তাই স্কাইপকে নিজের জায়গা হারাতে হয়েছে ভাইবারের কাছে।
ভাইবারের ছিমছাম ইন্টারফেস অনেককেই টেনেছে নিজের দিকে। স্টিকার সাপোর্ট থাকলেও সেটাকে বাদ রেখেও সাদামাটা ইন্টারফেসেও চালাতে পারেন আপনার চ্যাটপর্ব। আর তাই গত মাস পর্যন্ত মান্থলি অ্যাকটিভ ব্যবহারকারীর সংখ্যাও ছিল নজর কাড়ার মতো। সে সংখ্যা তাই ছাপিয়ে গিয়েছে ২০ কোটি।
লাইন (Line)
অনেকের মতে হোয়াটসঅ্যাপের সবথেকে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হল লাইন। গুগল প্লে স্টোরে অ্যাপের বিবরণের প্রথম বাক্যই হল, ‘দেয়ার ইজ নো লিমিটস’। সেটাই বলে দেয় লাইন লম্বা রেসের ঘোড়া। হোয়াটসঅ্যাপের প্রায় সব ফিচারই আছে লাইন অ্যাপে। টেক্সট, ফোটো, ভিডিয়ো শেয়ার করা তো আছেই, সঙ্গে যোগ হয়েছে হ্যাংআউটের মতো ভিডিয়ো কলের সুবিধাও।
ব্যবহারকারীদের সংখ্যায় ছাপিয়ে যেতে না পারলেও বিশেষত্বের জায়গায় লাইন ছাপিয়ে গিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপকে। স্বাভাবিক স্মার্টফোন প্ল্যাটফর্ম তো আছেই, সঙ্গে যোগ হয়েছে ফায়ারফক্স ওস। এমনকী নোকিয়া আশা-তেও ব্যবহার করতে পারবেন লাইন মেসেজিং অ্যাপ। অবশ্য লাইন ব্যবহারকারীদের সংখ্যাও নেহাত ফেলে দেওয়া যাবে না। ২০১১-র ডিসেম্বরে যে অ্যাপের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল এক কোটি, আজ সেটাই ছাড়িয়ে গিয়েছে ৩৫ কোটি।