মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে স্বজনপোষণ চলবে না

জন্ম তাঁদের গ্বালিয়রে। তানসেনের জন্মস্থানে ছোটবেলা কাটলেও গানের প্রথাগত শিক্ষা ছিল না মনমিত সিংহ ও হরমিত সিংহের। বলিউড অবশ্য সঙ্গীত পরিচালক দুই ভাইকে চেনে ‘মিত ব্রাদার্স’ নামে। ‘বেবি ডল’, ‘পার্টি তো বানতি হ্যায়’, ‘চিটিয়া কলইয়া’...ঝুলিতে হিটের তালিকা কম নয়।

Advertisement

অরিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৭ ০০:৫৪
Share:

জন্ম তাঁদের গ্বালিয়রে। তানসেনের জন্মস্থানে ছোটবেলা কাটলেও গানের প্রথাগত শিক্ষা ছিল না মনমিত সিংহ ও হরমিত সিংহের। বলিউড অবশ্য সঙ্গীত পরিচালক দুই ভাইকে চেনে ‘মিত ব্রাদার্স’ নামে। ‘বেবি ডল’, ‘পার্টি তো বানতি হ্যায়’, ‘চিটিয়া কলইয়া’...ঝুলিতে হিটের তালিকা কম নয়। গত বছর সাতটা ছবির সংগীত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন তাঁরা। ব্যস্ত এ বছরও। ‘নাম শাবানা’-র পর ‘মুন্না মাইকেল’।

Advertisement

সিঙ্গল্‌স না সিনেমার গান, কোনটা বেশি ভাল লাগে? ‘‘দু’টোর চার্ম দু’রকম। পরিচালক যেমন বলবেন, তেমনটা করতে হবে। সিঙ্গল্‌স পিওরেস্ট ফর্ম অব মিউজিক। ওটা নিজের জন্য। সরাসরি শ্রোতাদের কাছে পৌঁছনোর জন্য। সিনেমার মাধ্যম ঘুরে পৌঁছতে হয় না,’’ বলেন বড় ভাই মনমিত। ক্ষোভটা কি ‘রয়’ ছবির জন্য? কারণ গানগুলো হিট, এ দিকে ছবিটা মুখ থুবড়ে পড়ল বক্সঅফিসে? ‘‘না, না, না,’’ সঙ্গে-সঙ্গে প্রতিবাদ করে ওঠেন মনমিত। বলেন, ‘‘ছবি হিট হলে আরও লোকের কাছে পৌঁছে যেত। সেটা নিয়ে ভাবতে চাই না। গানগুলো তো হিট।’’

ডিজিটাল মাধ্যমের জেরে গান যেমন বেশি করে লোকের কাছে পৌঁছচ্ছে, তেমনই আবার পাইরেসিও বেড়ে গিয়েছে। ‘‘খারাপ লাগে সেটা ভেবে। ইন্টারনেট তো এখন কার্যত ফ্রি। লোকে ভাবছে গানও ফ্রি। যারা কষ্ট করল, তারা তো টাকা পেল না। গায়ক-গায়িকারা স্টেজ শো করে টাকা রোজগার করবে। কিন্তু অন্যরা?’’ প্রশ্ন ছুড়ে দেন হরমিত। পাইরেসির পাশারাশি রিমিক্স নিয়েও বিরক্ত তাঁরা। ‘‘এটা ট্রেন্ড নয়, একটা ফেজ। এক সময় যেমন ডিজে মিউজিকের চল উঠেছিল। বেশি দিন টিকবে না,’’ বলেন মনমিত।

Advertisement

চার্ট বাস্টার

বেবি ডল (রাগিনি এমএমএস টু)

পার্টি তো বানতি হ্যায় (ভুতনাথ রিটার্নস)

পিঙ্ক লিপ্‌স (হেট স্টোরি টু)

হ্যাংওভার (কিক)

চিটিয়া কলইয়া (রয়)

ছোট শহর থেকে মুম্বই এসে, তাঁরা অবশ্য অনেক দিন টিকে গেলেন। ‘‘মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে ও সব নেপোটিজম-ফিজম চলবে না ভাই। স্বজনপোষণ করতে গেলে ছবিই ঝাড় খাবে। ওটা অভিনয়ে চলতে পারে। সংগীতের জগতে প্রতিভাই শেষ কথা,’’ জানান মনমিত। কিন্তু সংগীত পরিচালকদের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায় যে, তাঁরা ট্যালেন্ট শো থেকে ‘রেডিমেড সিঙ্গার’ তুলে নেন। দু’টো গান গাওয়ানোর পর আর সুযোগ দেন না। কথাটা মানতে নারাজ হরমিত। বলেন, ‘‘ট্যালেন্ট শোয়ে যারা চ্যাম্পিয়ন হয়, তাদের অনেকে তো গাইতেই পারে না। গান রেকর্ড করা আর সিঙ্গিং কম্পিটিশনে জেতা দু’টো পুরোপুরি আলাদা।’’ মাসে একদিন তাই তাঁরা উঠতি গায়ক-গায়িকাদের ওপেন অডিশন নেন।

দু’বছর আগে বলিউডের সংগীত দুনিয়ায় সবচেয়ে বড় খবর ছিল, ‘মিত ব্রাদার্স অ্যান্ড অঞ্জন’ থেকে অঞ্জন ভট্টাচার্যের বেরিয়ে আসা। অসুবিধা হয়নি? ‘‘কাজের ক্ষেত্রে হয়েছে বলব না। তবে ইমোশনালি হয়েছে। এখনও তো অঞ্জনের সঙ্গে ছুটির দিনে একসঙ্গে ক্রিকেট খেলি, বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ি রোড ট্রিপে,’’ বলেন হরমিত। মনমিত-হরমিতের মধ্যে বিচ্ছেদ হবে না তো? ‘‘একদম না। আমরা সেই স্কুল থেকে একসঙ্গে আছি। গান নিয়ে ঝগড়া হয়, তর্ক হয়। কিন্তু আলাদা গান করব, সেটা কেউই ভাবতে পারি না,’’ স্পষ্ট বলেন মনমিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন