Entertainment News

‘জাগো দুর্গা’ বাজবে বছর বছর, শুধু থেমে গেল দ্বিজেনের কণ্ঠ

১৯২৭-এর ১২ নভেম্বর উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুরে বনেদি এক পরিবারে দ্বিজেনের জন্ম। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই মেগাফোন থেকে তাঁর প্রথম আধুনিক গানের রেকর্ড।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৮:৩৭
Share:

চেহারার মতো দ্বিজেনের ব্যক্তিত্বও ছিল ঋজু। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।

এক দিকে, আধুনিক গান। অন্য দিকে, রবীন্দ্রসঙ্গীত। দু’টি ধারাতেইদ্বিজেন মুখোপাধ্যায় ছিলেন সমান জনপ্রিয়। দু’ধরনের গানেই তিনি প্রতিষ্ঠিত এবং যশস্বী। সঙ্গে ফিল্মি বাংলা ও হিন্দি গান তো রয়েইছে।

Advertisement

সেই সময়টায় পঙ্কজকুমার মল্লিকের একনিষ্ঠ ফলোয়ার অনেকেই। দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ও বাদ ছিলেন না। পঙ্কজকুমারের সঙ্গীত শিক্ষার আসরের নিয়মিত ছাত্রও ছিলেন তিনি। পাশাপাশি দ্বিজেন আরও এক জনের ফলোয়ার ছিলেন। তিনি হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। আধুনিক গানে হেমন্তই ছিলেন দ্বিজেনের আদর্শ। সে কথা প্রকাশ্যে বলতেনও তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি আজ যতটুকু হতে পেরেছি, তার বেশির ভাগটাই হেমন্তদার দান।’’

১৯২৭-এর ১২ নভেম্বর উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুরে বনেদি এক পরিবারে দ্বিজেনের জন্ম। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই মেগাফোন থেকে তাঁর প্রথম আধুনিক গানের রেকর্ড। সুরকার নচিকেতা ঘোষের সঙ্গে। এর পর আকাশবাণীতে অডিশন। কিছু দিনের মধ্যেই রেডিয়োয়দ্বিজেন গাইলেন রবীন্দ্রসঙ্গীত। ধীরে ধীরে তাঁর ব্যাপ্তি বাড়তে থাকে। সে বার হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের দায়িত্বে আকাশবাণীতে মহিষাসুরমর্দিনী রেকর্ডিং হল। দ্বিজেনকে দিয়ে তিনি গাইয়েছিলেন। তার পরেরটা ইতিহাস। মহালয়ার দিন বাঙালি যে সব গানে আপ্লুত হয়ে পড়ে, তারই অন্যতম ‘জাগো দুর্গা...’দ্বিজেনেরই গাওয়া।

Advertisement

আরও পড়ুন, প্রয়াত দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়

সলিল চৌধুরীর সঙ্গে দ্বিজেনের পরিচয় সেই আইপিটিএ করার সময় থেকে। তখন থেকেই তাঁদের বন্ধুত্ব। সলিলই তাঁকে নিয়ে গিয়েছিলেন বম্বে। ১৯৬১তে মুক্তি পায় ‘মায়া’। সেই ছবিতে পর্দায় দ্বিজেনের গানে লিপ দিলেন দেবানন্দ, ‘অ্যায় দিল কাহাঁ তেরি মনজিল...’। সলিলের সুরে সেই গানে‘হামিং’ করতে শোনা গেল লতা মঙ্গেশকরকে। গোটা দেশ মজে গেল দ্বিজেনের গলায়।

চেহারার মতো দ্বিজেনের ব্যক্তিত্বও ছিল ঋজু। তিনি শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক ছিলেন না। কিন্তু, রবীন্দ্রসঙ্গীতে তাঁর নজরকাড়া উত্থানের জন্য বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের প্রধান হয়েছিলেন। দায়িত্বশীল সেই পদের মর্যাদাও রেখেছিলেন দ্বিজেন।৯১ বছরের জীবনে পেয়েছেন একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি লিট। পেয়েছেন দেশ-বিদেশের একাধিক পুরস্কার ও সম্মান। তার মধ্যে রয়েছে পদ্মভূষণ, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সর্বোচ্চ সম্মান বঙ্গবিভূষণ, সঙ্গীত-নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার, সঙ্গীত আনন্দ পুরস্কার।

আরও পড়ুন, গৌতমদাকে আর হাসিমুখে শুটিংয়ে দেখব না, ভাবতেই পারছি না

বেশ কয়েক বছর ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। মাঝে মাঝেই হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা করাতে হত। সোমবার দুপুরে বাড়িতেই মারা গেলেন বাংলা সঙ্গীত জগতের অন্যতম এই ব্যক্তিত্ব।

(হলিউড, বলিউড বা টলিউড - টিনসেল টাউনের টাটকা বাংলা খবর পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদনের সব খবর বিভাগে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement