চলে গেলেন ডক্টর জিভাগো

ডক্টর জিভাগো মারা গেলেন। বরিস পাস্তেরনাকের উপন্যাসের নায়কের মতোই তাঁর মৃত্যু হল বিধ্বস্ত মাতৃভূমে। ৮৩ বছর বয়সে কায়রোর হাসপাতালে আজ শেষ নিশ্বাস ফেললেন ওমর শরিফ। অভিনেতা এবং ক্লাসিক চরিত্র যে কী ভাবে একাকার হয়ে যায়, এই দুনিয়ায় তারই উদাহরণ ছিলেন তিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৫ ১৯:৫৯
Share:

ছবি: এপি।

ডক্টর জিভাগো মারা গেলেন। বরিস পাস্তেরনাকের উপন্যাসের নায়কের মতোই তাঁর মৃত্যু হল বিধ্বস্ত মাতৃভূমে। ৮৩ বছর বয়সে কায়রোর হাসপাতালে আজ শেষ নিশ্বাস ফেললেন ওমর শরিফ। অভিনেতা এবং ক্লাসিক চরিত্র যে কী ভাবে একাকার হয়ে যায়, এই দুনিয়ায় তারই উদাহরণ ছিলেন তিনি। শেষ কয়েক মাস অ্যালজাইমার্স রোগে ভুগতেন, নিজের অভিনীত ‘ডক্টর জিভাগো’ থেকে ‘লরেন্স অব অ্যারাবিয়া’ কোনও ছবিরই নাম মনে পড়ত না। মনে কি পড়ত দিলীপকুমার নামে এক ভারতীয় অভিনেতার নাম? ডেভিড লিনের ছবিতে গেরিলা যোদ্ধা টি ই লরেন্সের ভূমিকায় প্রথম অভিনয় করার ছিল তাঁর। পরে দিলীপকুমারের বদলে সেই চরিত্র গেল এই মিশরী অভিনেতার হাতে। তার পরই ইতিহাস। হলিউড খুঁজে পেল গ্রেগরি পেকের মতো নায়কের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো স্বর্ণখনি। আজও কে ভুলতে পারে ‘ম্যাকেনাস গোল্ড?’

Advertisement

শুধু অভিনয় নয়। কন্টাক্ট ব্রিজ খেলায় অন্যতম চ্যাম্পিয়ন, আলেকজান্দ্রিয়ায় বেড়ে ওঠার সময় এডওয়ার্ড সইদের ক্লাসমেট। সেই এডওয়ার্ড সইদ, যাঁর ‘ওরিয়েন্টালিজ্ম’ পরে উত্তর-আধুনিক পৃথিবীকে নতুন তত্ত্বের সন্ধান দেয়। সইদের মতোই ওমর ধনাঢ্য মিশরী পরিবারের সন্তান। মিশরের রাজা ফারুক সেই পরিবারের বন্ধু। বিপ্লবোত্তর মিশরে রাজা ফারুক সিংহাসন ছাড়তে বাধ্য হন, ক্ষমতা যায় নাসেরের হাতে। শরিফ পরিবারও ক্রমে হতমান হতে থাকে। তারই মধ্যে মিশরী ছবিতে নতুন তারকার জন্ম। মাইকেল দমিত্রি তাউব। সেটিই তাঁর আসল নাম। পরে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর ওমর শরিফ।

জীবন তাঁর থেকে কম কিছু কাড়েনি! খ্যাতি, তিনটে গোল্ডেন গ্লোব, অস্কারের মনোনয়ন সবই ছিল। কিন্তু প্রেম? ‘এ স্টার ইজ বর্ন’ ছবির নায়িকা বারবারা স্টেইস্যান্ডের প্রেমে তখন মজে আছেন শরিফ। বারবারা ইজরায়েলের সমর্থক বলে নাসের একবার শরিফের মিশরী নাগরিকত্ব কেড়েও নিয়েছিলেন। অতঃপর স্ত্রী ফতিন হামামার সঙ্গে আইনসঙ্গত বিচ্ছেদ। কিন্তু দু জনের বন্ধুত্ব ছিল শেষ দিন অবধি অটুট। ওমর আর বিয়ে করেননি, ফতিনের গর্ভজাত তারেক আল শরিফই তাঁর একমাত্র সন্তান। কায়রোর হাসপাতালে মৃত্যুর সময়েও পুত্র তারেকই ওমরের পাশে।

Advertisement

ফতিন হামামা মারা গিয়েছেন এই বছরেই। আজ হৃদরোগে তাঁর স্বামীও। বিশ্ব-রাজনীতির ঝড় তাঁদের আলাদা করে দিয়েছিল, আজ আবার দু’ জনে এক। মৃত্যুও অস্বীকার করতে পারে না ওমরের রোমান্টিক ক্যারিশমা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন