সদ্য মুক্তি পেয়েছে ‘গাল্লি বয়’। ছবির অভাবনীয় সাফল্যের জন্য কলাকুশলীর অভিনয়ের পাশাপাশি কৃতিত্ব পরিচালকেরও। বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে ছবির স্ক্রিনিং থেকে শুরু করে ছবি তৈরির পিছনের গল্পের ঝাঁপি খুললেন পরিচালক জ়োয়া আখতার। বার্লিনের দর্শক যে ভাবে ‘গাল্লি বয়’কে আপন করে নিয়েছেন, তাতে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত জ়োয়া। বললেন, ‘‘পর্দায় প্রত্যেক অভিনেতার এন্ট্রিতে দর্শক সিটি দিচ্ছিলেন। আলিয়া বলছিল, এঁরা তো মুম্বইয়ের সিঙ্গল স্ক্রিন থিয়েটারের দর্শকের মতো!’’
জ়োয়ার আগের ছবি, অর্থাৎ ‘লাক বাই চান্স’, ‘জ়িন্দেগি না মিলেগি দোবারা’ বা ‘দিল ধড়কনে দো’র আপাত চাকচিক্য ‘গাল্লি বয়’-এ নেই। ছবিটা জ়োয়ার প্রথম মিউজ়িক্যালও। মুম্বইয়ের হিপহপের সঙ্গেও বিশেষ পরিচিত ছিলেন না তিনি। তবে এ ছবির রসদ পেয়ে গিয়েছিলেন ‘দিল ধড়কনে দো’র সময়েই। ‘‘তখন আমি ‘দিল...’-এর এডিট করছিলাম। এডিটর আনন্দ সুবাইয়া আমাকে একটা ভিডিয়ো দেখায়। দেখে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম! ওই ভিডিয়োটা না দেখলে কোনও দিনই গল্পটার এত গভীরে ঢুকতে পারতাম না। পরে মুম্বইয়ের র্যাপারদের সঙ্গে দেখা করি। সঙ্গীত পরিচালক অঙ্কুর তিওয়ারিও আমাকে সাহায্য করেছে।’’
রণবীর সিংহের সঙ্গে আগে কাজ করেছেন জ়োয়া। কিন্তু রণবীরই কি ছবির প্রথম পছন্দ ছিলেন? ‘‘আসলে ‘দিল...’-এর অনেক আগে থেকে আমরা পরস্পরকে চিনি। যখন ও অভিনেতা হয়নি আর আমিও পরিচালনায় আসিনি... তখন থেকে আমরা বন্ধু। রণবীর ভীষণ ভাল র্যাপ লেখে। মুম্বইয়ের যে স্থানীয় ভাষা ছবিতে ব্যবহার হয়েছে, রণবীর সেটাও ভাল বলতে পারে। আর ও তো গিরগিটির মতো! একই বছরে আলাউদ্দিন খিলজি, সিম্বা আর মুরাদ হতে পারে!’’ জবাব মুগ্ধ পরিচালকের।
ধারাভিতে দিনরাত শুট করেছে গোটা টিম। এক সময়ে চামড়ার জিনিস কিনতে হলে ওই পাড়াতেই যেতেন জ়োয়া। বললেন, ‘‘অনেক বছর আগে মীরা নায়ারকে অ্যাসিস্ট করার সময়ে ধারাভিতে কাজ করেছিলাম। তবে ওঁরা এত শুটিং দেখেছেন যে, আর কৌতূহল নেই।’’
জ়োয়া স্ট্রাগ্লও করেছেন অনেক। ‘‘২৮ বছর বয়সেই ছবি বানাতে পারতাম। কিন্তু প্রথম ছবি বানাই ৩৫ বছরে। দু’বার ছবির ঘোষণা হয়। প্রেসে লেখার পরেও ছবি শুরু হয় না। কাস্টিং থেকে প্রোডাকশন... সব নিজে করেছি।’’ অনেক শিখেওছেন ইন্ডাস্ট্রি থেকে। ‘‘আমি ঝুঁকি নিতে ভয় পাই না। আগের ছবির ভুল থেকেও শিখেছি। তবে ফিল্মের ক্রু ভাল হওয়া উচিত। একা পরিচালক ছবি বানাতে পারে না,’’ বললেন তিনি।
বাবা জাভেদ আখতার কিংবদন্তি লেখক। তাঁর কাছ থেকে পরামর্শ নেন? ‘‘অবশ্যই। মেরি পুরি ফ্যামিলি পাগলো কা বারাত! ওদের দেখেই আমি লেখায়-নির্দেশনায় মন দিয়েছি! ফারহানের সব সময়ে অভিনয়ে রুচি ছিল। আমার লেখা এবং ফোটোগ্রাফিতে...’’
‘জ়িন্দেগি না মিলেগি দোবারা’র সিকুয়েল করবেন? জ়োয়া জানালেন, অর্থপূর্ণ গল্প না পেলে নয়। স্পষ্ট বললেন, ‘‘ওই ছবিটাকে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি বানানোর ইচ্ছে নেই। তবে হৃতিক, ফারহানকে আবার কাস্ট করতে চাই।’’