Death

Singer KK Dies: সারা দিন মহড়া, দুর্দান্ত অনুষ্ঠান, ফেরার পথে কেকে বললেন, শীত করছে

গানেই অনুরাগীদের মন জয় করে বিদায় নিলেন কেকে। যেন সব কাজ নিখুঁত ভাবে সেরে ছুটি! লিখলেন তাঁর কলকাতার সফরসঙ্গী।

Advertisement

তোচন ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২২ ০০:৫৭
Share:

ছবি পিটিআই।

ওঁকে নিয়ে অনেক অনুষ্ঠান করেছি। এক বারের জন্য বুঝতে পারিনি, আমার নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠানই ওঁর শেষ অনুষ্ঠান হবে। এই আফসোস সারা জীবনের সঙ্গী হয়ে থাকল। হাসপাতালের বিছানায় চিরঘুমে আচ্ছন্ন তারকা গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ। মাত্র ৫৪-র তরতাজা প্রাণ। বাইরে দাঁড়িয়ে আমি। আমার সঙ্গে আরও এক খ্যাতনামী সুরকার জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও রয়েছেন। তবু এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না, কেকে নেই! সোমবার থেকে শিল্পী এ শহরে। আমি ওঁর কলকাতার সফরসঙ্গী। অনুষ্ঠান শেষে গাড়িতে ফিরতে ফিরতেই বলছিলেন, শরীরে কেমন অস্বস্তি করছে। বড্ড ঠান্ডা লাগছে!

Advertisement

হোটেলের লবিতে পা রাখা মাত্র তাঁকে ঘিরে ধরেছিলেন অসংখ্য অনুরাগী। কেকে-র সঙ্গে এই ঘটনা খুবই স্বাভাবিক। তিনিও সাধারণত অনুরাগীদের ছবি তোলার আবদার মেটান। মঙ্গলবারের রাত সত্যিই ব্যতিক্রম। সম্ভবত এই প্রথম কেকে অনুরাগীদের আবদার রাখতে পারেননি। সবাইকে বলেন, অসুস্থ বোধ করছেন। তিনি নিজের ঘরে যেতে চান। ঘরে গিয়েই শুয়েও পড়েন শিল্পী। কিন্তু তাতেও স্বস্তি বোধ না করায় সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বেসরকারি নার্সিংহোমে। তত ক্ষণে সব শেষ। চিকিৎসকেরা জানান, রাস্তাতেই স্তব্ধ শিল্পী! তবে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সম্ভবত ময়নাতদন্ত না-ও হতে পারে। বুধবার কলকাতায় আসছেন শিল্পীর পরিবার। ওঁরা কেকে-কে শেষ বারের মতো নিজের শহরে নিয়ে যাবেন।

কেকের মতো গায়ক খুব কম দেখেছি। ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ দিয়ে যাত্রা শুরু। ‘ঝঙ্কার বিটস’, ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ হয়ে অসংখ্য জনপ্রিয় গানের গায়ক। ওঁর প্রতিটি গান সুপার হিট! দিন কয়েক আগেই আরবে গানের অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সঙ্গে অমিত কুমার, রিমা গঙ্গোপাধ্যায়েরাও ছিলেন। সেখানেও নিজস্ব ভঙ্গিতেই মঞ্চ মাতিয়েছেন। মঙ্গলবারের নজরুল মঞ্চও তার ব্যতিক্রম ছিল না। একের পর এক জনপ্রিয় গান গাইছিলেন অবলীলায়। কলেজ পড়ুয়ারা মাতোয়ারা তাঁর গানে। বুধবারেও কেকে-র আরও একটি কলেজ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। তাঁর গান আর শোনা হল না!

Advertisement

সোমবার কলকাতায় পা দিয়েও তরতাজাই ছিলেন। নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া করেছেন। খুব খোশমেজাজে ছিলেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে মহড়া দিয়েছেন। সারা ক্ষণ শুধুই অনুষ্ঠান নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা। শিল্পীর প্রধান কর্তব্য, গানে গানে অনুরাগী শ্রোতাদের মন জয়। সেই কর্তব্য একেবারে নিখুঁত ভাবে পালন করেই ছুটি নিলেন তিনি। এক জন শিল্পীর এর থেকে ভাল ‘শেষ’ আর কী হতে পারে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন