আউটডোর শুটিংয়ের ফাঁকে আড্ডায় মৈনাক ও স্বস্তিকা।
খাদ্য-সংস্কৃতির বিস্তর ফারাক, এক জনগোষ্ঠীর রুচির সঙ্গে আর এক জনগোষ্ঠীর। তেমনই অভিজ্ঞতা হল মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় আর স্বস্তিকা দত্ত’র। ‘ঠাকুরমার ঝুলি’ ধারাবাহিকের ‘পাতালকন্যা মণিমালা’ গল্পের শুটে তাঁদের যেতে হয়েছিল ব্যাংকক। চন্দ্রকুমারের ভূমিকায় মৈনাক আর স্বস্তিকা মণিমালা।
মূল শহর থেকে ঘণ্টা দু’য়েক জার্নি করে তবে শুটিং লোকেশন কাঞ্চনাবুরি। পাহাড় ঘেরা অসাধারণলোকেশন। কিন্তুশুটিং শেষে সন্ধ্যেবেলাস্ট্রিট ফুড স্টলে খেতে গিয়ে তো চক্ষু চড়কগাছ!
স্বস্তিকা বললেন, ‘‘মৈনাক যেমন সবকিছুই খেতে পারে, কোনও বাছবিচার নেই। আমার আবার ভীষণ বাছবিচার রয়েছে। ফুড সারভাইভিং ব্যাপারটা...কী বলব...মানে খুব চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার হয়ে গেছিল। হোয়াট টু ইট, হাউ টু ইট, হোয়ার টু ইট...খুব চাপের হয়ে গেছিল আরকি! আমি জানতাম এরকমই কিছু একটা হবে। কেননা, ওখানে খাওয়া-দাওয়ার খুব প্রবলেম। যেখানে আমরা থাকতাম সেখান থেকে একটু দূরে একটা স্ট্রিট ফুড কলোনি পড়ে। এটার নামই ‘স্ট্রিট ফুড কলোনি’। সেখানে সব বিচিত্র বিচিত্র খাবার।’’
আরও পড়ুন: সারা-জাহ্নবী নাকি প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী! ছবি কিন্তু তা বলছে না
মৌমাছি থেকে আরশোলা, পতঙ্গের লার্ভা থেকে ঝিঁঝি পোকা ভাজা বিকোচ্ছে দোকানে।
কী খাবার দেখলেন তাঁরা ‘স্ট্রিট ফুড কলোনি’-তে? উত্তেজিত স্বস্তিকা বললেন,‘‘খাবারের স্টলে থরে থরে সাজানো বিভিন্ন রকমের পতঙ্গ ভাজা। মৌমাছি থেকে আরশোলা, পতঙ্গের লার্ভা থেকে ঝিঁঝি পোকা, সব আছে!’’
তা হলে? এসবই খেলেন নাকি তাঁরা? মৈনাক কী বলছেন? তিনি হাসতে হাসতে বললেন,‘‘খেয়েছি যেগুলো, সেগুলো মোটামুটি ঠিকঠাক। আমি চিকেন খেয়েছি, সি ফুড খেয়েছি, পর্ক খেয়েছি। শুধু পোকামাকড় খাইনি।হয়তো টেস্ট করতাম। কিন্তু পরদিন শুটিং, যদি শরীর খারাপ হয়ে যায়, সেসব ভেবেই খাইনি।’’
আপনার নায়িকা কী খেলেন? মৈনাকের উত্তর:‘‘স্বস্তিকা তো এমনিতেই কিছু খায় না। তো ওখানে একটা ডিশ বিক্রি হচ্ছিল ভাত আর ডিম সেদ্ধ। স্বস্তিকাকে ভাত খেতে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেছিলাম। বলতে গেলে, ও তো সারাদিন কয়েকটা বাদাম খেয়ে কাটায় (হাসি)।’’
স্বস্তিকা হেসেই কুটোপাটি। বললেন, ‘‘এটা মৈনাক খুব খারাপ বলছে...(একটু সময় নিয়ে) অবশ্য ঠিকই বলছে ও...আমি কলকাতা থেকে প্রচুর ড্রাই ফ্রুটস ক্যারি করেছিলাম। ওখানের শপিং মল থেকে মৈনাক আমার জন্য কুকিজ, চকলেট কিনে আনতো। আমি এগুলোর ওপরেই মোটামুটি বেঁচে ছিলাম।’’
আরও পড়ুন: মেয়েমানুষ নয়, মেয়েদের মানুষ ভাবা হোক
ব্যাঙ্ককে স্ট্রিট ফুড চাখতে ব্যস্ত অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্ত।
শুটিংয়ের শেষ দিনে সে এক সাঙ্ঘাতিক অভিজ্ঞতা! মৈনাক হাসতে হাসতেই যোগ করলেন, ‘‘শুটিংয়ের শেষ দিন সে এক যাচ্ছেতাই অবস্থা! শুটিংয়ের একেবারে শেষে আমার পায়ে বোলতা কামড়ে দিল। সেটা নিয়েই একটা লেকে কোমরজল অব্দি নেমে শুটিং করলাম। সং সিকোয়েন্স, ফাইট সিন সবই করলাম ওই কামড় নিয়ে। তারপর ল্যাংচাতে ল্যাংচাতে এয়ারপোর্টে আসতে হল। পা ফুলে একেবারে যা তা অবস্থা! জুতো পরার মতো অবস্থাও ছিল না।’’
রোমান্স হল? স্বস্তিকা:‘‘রোমান্স?...(হাসি)...ছেলেটা খারাপ নয়, ভাল...কিন্তু এত কুঁড়ে ছেলে...এত কুঁড়ে...মানে...আমিই ওকে টেনে টেনে ঘুরতে নিয়ে যেতাম...একটা জিনিস বলতেই হবে, হি টুক গুড কেয়ার অব মি...কিন্তু রোমান্স জাস্ট মৈনাকের সঙ্গে...হবে না...অনেস্টলি স্পিকিং, আই অ্যাম বিগ ফ্যান অব মৈনাক ফ্রম দ্য মুভি ‘বরবাদ’। আমার বিপরীতে মৈনাক কাজ করছেন বুঝতে পেরে আমার এক্সপ্রেশন ছিল, ‘ও মাই গড!’। হি ইজ আ ফ্যান্টাস্টিক অ্যাক্টর।’
মৈনাক হো হো করে হাসতে হাসতে যোগ করলেন, ‘‘রোমান্স পর্দায় দেখা যাবে। আগামী শনি-রবিবার আমাদের গল্প টেলিকাস্ট হবে...আর কেয়ার না নেওয়ার কী আছে? ওটা এমন কিছু না।’’