‘সাহেব বিবি গোলাম’ ছবির দৃশ্য
টিকিট বিক্রি থেকে আয় ক্রমশ কমছে। ওদিকে টেলিভিশনের স্যাটেলাইট রাইটসের টাকাও কমতির দিকে। অগত্যা বাংলা ছবি এখন অনলাইন স্ট্রিমিং সার্ভিসের দিকে তাকিয়েই আশায় বুক বাঁধছে।
নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন, এরস নাও, হটস্টারের সাবস্ক্রিপশন দিন দিন বাড়ছে। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিও বুঝেছে নতুন দরজায় টোকা না মারলে টিকে থাকা মুশকিল। গত বছর অগস্টে মুক্তি পেয়েছিল প্রতিম দাশগুপ্তের ‘সাহেব বিবি গোলাম’। নেটফ্লিক্সকে তিনি ছবি বিক্রি করেছেন। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের একাধিক ছবি অ্যামাজন প্রাইম কিনে নিয়েছে। সৃজিত জানালেন, ‘জাতিস্মর’ আর ‘চতুষ্কোণ’ বাদে তাঁর সব ছবিই অ্যামাজন প্রাইমে মিলবে।
বাংলা ছবির বিচারে টাকার অঙ্কটা বেশ লোভনীয়! সাধারণত একটা ছবিতে ৪০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত টাকা মিলতে পারে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও বাংলা ছবিই ১ কোটি টাকা পায়নি। ৪০-৫০ লক্ষ টাকার মধ্যেই স্বত্বের পরিমাণ। ‘‘বাংলা ইন্ডাস্ট্রির বিচারে এই টাকাটাও কম নয়। বিশেষত, যেখানে হল থেকে রোজগারের অঙ্কটা ক্রমশ কমে যাচ্ছে,’’ মন্তব্য সৃজিতের।
অনেকে ছবি মুক্তির আগেই কোনও স্ট্রিমিং সার্ভিসের সঙ্গে চুক্তি করে ফেলছে। নেটফ্লিক্স বা হটস্টারও কোথায় ভাল ছবি তৈরি হচ্ছে সে দিকে নজর রাখে। চলচ্চিত্র উৎসবগুলোতেও এদের টিম থাকে। সেখানে কোনও ছবি পছন্দ হলে সংশ্লিষ্ট ছবির প্রযোজক-পরিচালকের সঙ্গে সংস্থা যোগাযোগ করে নেয়। ছবির বাজেট, স্টার কাস্ট এবং বিষয়ের উপর ভিত্তি করে দাম ধার্য হয়। অনেক সময় বেশ কয়েকটি ছবি ‘প্যাকেজ’ করেও চুক্তি হয়। চুক্তির মেয়াদ থাকে দুই থেকে তিন বছর।
পরিচালক সুমন মুখোপাধ্যায়ের ‘অসমাপ্ত’ রিলিজের আগেই নেটফ্লিক্সের সঙ্গে চুক্তি করেছে। তবে পরিচালক এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হলেন না। শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এখনও পর্যন্ত কোনও অনলাইন স্ট্রিমিংয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হননি। তাঁর কথায়, ‘‘অনেকেই প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু একটু ভাবনাচিন্তা না করে এগোব না।’’
অনলাইন স্ট্রিমিং সার্ভিসের একটা মুশকিল আছে। এদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে কোনও টেলিভিশন চ্যানেলে আর ছবি দেওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে স্যাটেলাইট রাইটস হাতছাড়া হবে। তাই কোন দিকে টাকার অঙ্ক বেশি সেই হিসেবটা কষে নিয়েই মাধ্যম নির্বাচন করছেন টলিউডের পরিচালক-প্রযোজকেরা।