দেবকে নিয়ে কী বললেন কুণাল ঘোষ? ছবি: ফেসবুক।
তাঁর মতে, এখন মিঠুন চক্রবর্তীর ছবি তাঁর নামে কাটে। ওঁর থেকে অনেক ভাল অভিনেতা পরান বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম ছবি ‘কর্পূর’-এর ডাবিং শেষ করে আনন্দবাজার ডট কম-কে বললেন অভিনেতা-রাজনীতিবিদ কুণাল ঘোষ। ভাগ করে নিলেন ডাবিংয়ের অভিজ্ঞতাও।
প্রথম অভিনয়, প্রথম ডাবিং। ‘প্রথম’ যে কোনও কিছু আজীবন মনে থেকে যায়। অভিনয় সহজ না ডাবিং? প্রশ্ন তুলতেই জবাব এল, “আমি দুই ক্ষেত্রেই নতুন। তাই ডাবিংয়ের আগে পর্যন্ত একটা প্র্যাকটিসের মধ্যে থাকার চেষ্টা করেছি। তা ছাড়া, ছবির পরিচালক অরিন্দম শীল, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার দিব্যেন্দু, কাঁকন— এঁরা ছিলেন। প্রত্যেকে তাঁদের মতো করে ধরিয়ে দিয়েছেন।” বোঝা গেল, এই কাজটিও যথেষ্ট উপভোগ করেছেন কুণাল।
ডাবিং করতে গিয়ে আরও একটি ঘটনা ঘটেছে। অন্য একটি ঘরে নাকি ডাবিং করছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। তিনি কুণালের উপস্থিতি টের পেয়ে নাকি নিজেকে ডাবিংয়ের ঘরেই আটকে রেখেছিলেন! দুপুরের সময় লাউঞ্জে খেতে আসেননি। এরকম কিছু কি ঘটেছিল?
কুণাল বললেন, “ঠিক শুনেছেন”। বিষয়টি স্বীকার করে নিলেন তিনি। জানালেন, তিন দিন আগে খবর পেয়েছিলেন, একই দিনে মিঠুন চক্রবর্তী ডাবিং করতে আসবেন। কুণাল অবশ্য তাঁর জন্য নিজের ডাবিং পিছোননি। হাসতে হাসতে বলেছেন, “একদিন আগে মিঠুনদাও নাকি জানতে পেরেছিলেন। তিনিও তারিখ বদলাননি। বদলে ডাবিং রুমে দুপুরের খাওয়া সেরেছেন।”
মিঠুনকে নিয়ে বলতে গিয়ে কুণাল তাঁদের অতীত সুসম্পর্ক অস্বীকার করেননি। কিন্তু বর্তমানে সেই ছবি যে বদলে গিয়েছে সে কথাও জানাতে ভোলেননি। তাঁর কথায়, “মিঠুনদা সারা ক্ষণ যে ভাবে আমার দলনেত্রীকে অপমান করে চলেছেন সেটা দলীয় মুখপাত্র হিসাবে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই সৌজন্য সাক্ষাতের প্রশ্ন ওঠে না।” এও জানিয়েছেন, লাউঞ্জ সবার। মিঠুন চক্রবর্তী সেখানে বসে দুপুরের খাওয়া সারতেই পারতেন। সে রকম ঘটলে এবং তখন মুখোমুখি হলে কুণাল কোনও অসভ্যতা করতেন না। আবার অতিরিক্ত আদিখ্যেতাও দেখাতেন না। তাঁর আরও দাবি, “আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বিরোধী দলের নেতার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ভুল ব্যাখ্যা দিতে পারে। এখন এ সবের সময় নয়।”
দেবও শাসকদলের সাংসদ। কিন্তু অভিনয়ের সময় সমস্ত অভিনেতার সঙ্গেই তাঁর সহাবস্থান।
সঙ্গে সঙ্গে চাঁছাছোলা ভাষায় পাল্টা জবাব দিয়েছেন কুণাল। তাঁর যুক্তি, “কী করা যাবে? মিঠুনদা কিংবা সোহিনী সরকার— যাঁরা শাসকদলকে সারা ক্ষণ কুকথা বলছেন দেব তাঁদের মধ্যেই প্রতিভার খোঁজ পাচ্ছেন! বাংলায় যেন এঁরা ছাড়া অভিনেতা, প্রতিভা নেই। মিঠুনদার সুবিধাবাদী রাজনীতিতে আমার আপত্তি। ওঁর আক্রমণের ভাষায় আমার আপত্তি। সোহিনী আরজি কর-কাণ্ডের সময় দুম করে বলে বসলেন, এই রাজ্য নাকি সন্তানের জন্ম দেওয়া উপযুক্ত নয়। এর পরেও ওঁকে সমর্থন করতে হবে? দেব ওঁকেও ছবিতে নিলেন।”
কুণালের দাবি, দেবের সঙ্গে তাঁর কোনও ব্যক্তিগত বিরোধ নেই। রসিকতাও করেছেন, “যদিও দেবের থেকেও আমার বেশি পছন্দ রুক্মিণী মৈত্রকে।” দেবের ‘উদার সাজা’র নীতিতে তাঁর আপত্তি। জানিয়েছেন, বিরোধীপক্ষ হলেও রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, বাদশা মৈত্র কিংবা কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে তাঁর আপত্তি নেই। ওঁরা শালীনতা বজায় রেখে বক্তব্য জানান, মত তাঁর। হাসতে হাসতে কটাক্ষও করেছেন কুণাল, “দেব নাকি মেগাস্টার! তাই যদি হবে তা হলে তাঁকে ছবিতে এত তারকা নিতে হয় কেন? ওঁর তো নিজেরই গোটা ছবি বহন করে নিয়ে যাওয়ার কথা।”